দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বঙ্গোপসাগরের উপর যে নিম্নচাপ ঘনিয়েছে তা ধীরে ধীরে পাকাপোক্ত হচ্ছে। তাই দক্ষিণ বঙ্গে এমন ছন্নছাড়া, বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও প্যাচপ্যাচে গরম, আবার কখনও মেঘ গর্জে দু’এক পশলা বৃষ্টি। এমনটাই মনে করছেন আবহাওয়া দফতরের কর্তারা।
আইএমডি-র ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আগামী ২০ তারিখ নাগাদ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের উপরে এই নিম্নচাপটি সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর পরে সেটি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের দিকে সরতে থাকবে। তার প্রভাবে ২০ থেকে ২২ তারিখ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় মাঝারি, বারী ও অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, ২০ তারিখে রাজ্যের পূর্ব দিকের জেলাগুলি অর্থাৎ মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের খানিকটা অংশে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ২১ তারিখে এই সব জেলাতেই বৃষ্টি বাড়বে। অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে কোথাও কোথাও।
এর পরে ২২ তারিখে বৃষ্টি সরে যাবে পশ্চিম দিকে, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, দুই বর্ধমান, বীরভূম– এই জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে।
তবে উত্তরের ছবিটা একটু আলাদা। সেখানে ভারী বর্ষাই নেমেছে কয়েকদিন ধরে। আরও দু’দিন এমন ঝেঁপে বৃষ্টি হবে বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। পাহাড় ও তরাইয়ের জেলাগুলিতে কখনও মাজারি আবার কখনও তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, উত্তরের দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে আরও ৪৮ ঘণ্টা টানা বৃষ্টি হবে। মালদাতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
পাশাপাশি সঞ্জীববাবু জানিয়েছেন, যেহেতু ২০ তারিখ নাগাদ নিম্নচাপ তৈরি হবে বঙ্গোপসাগরে, তাই ২০ থেকে ২২ মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যাঁরা ইতিমধ্যে চলে গেছেন, তাঁরাও যেন ১০ তারিখ বিকেলের মধ্যে ফিরে আসেন, নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগামী কাল বিশ্বকর্মা পুজো ও মহালয়া। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে, দুয়েক জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাত হবে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হবে ৩৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, ভ্যাপসা গরম থাকবে।
কিছুদিন আগেই হাওয়া অফিস বলেছিল, বঙ্গোপসাগরে নতুন করে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। এর পাশাপাশি মৌসুমী অক্ষরেখাও ক্রমশ উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে অবস্থান বদল করছে। যার ফলে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢুকছে ভূখণ্ডে। এখন জানা যাচ্ছে, অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্তের সঙ্গে যোগসাজশ করেছে ওই নিম্নচাপ। এই দুইয়ের মিলিত প্রভাবেই শক্তি আরও বাড়ছে। এর টানেই মৌসুমী অক্ষরেখা দক্ষিণে সরে এসেছে। যার কারণে দক্ষিণ গুজরাত থেকে উত্তর কর্নাটক অবধি একটি অক্ষরেখা তৈরি হয়েছে।
এর প্রভাবে শুধু গাঙ্গেয় বঙ্গ নয়, তেলঙ্গানাতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তা ছাড়া ভারী দুর্যোগের সম্ভাবনা রয়েছে অসম, মেঘালয়-সহ উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্যে। নিম্নচাপের প্রভাবে ওড়িশাতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।