“বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান” রবিবার বিকালে সম্প্রতি ও সমন্বয়ের অনন্য নজির দেখা গেল উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর পাইকপাড়া এলাকায়৷
২০২২-এর ঈদের চাঁদ উঠেছিল করোনার মেঘমুক্ত আকাশে৷ এবার দু’বাংলায় রোজা আর ঈদ উৎসব পালিত হয়েছে অনেকটাই বুকভরা শ্বাস নিয়ে। যদিও স্বজন হারানোর বেদনা উৎসবের দিনগুলোতেই করুণতর হয়ে বাজে।
করনার গ্রাসে যাঁরা বিগত সময়ে পৃথিবী ছেড়েছেন তাঁদেরকে স্মরণ করে দেশজুড়ে এই উৎসব পালিত হয়েছে মহাসমারোহে।
এই ঈদের একটা বড় বৈশিষ্ট্য হলো উৎসে ফিরে যাওয়া। শহরে বাস করা মানুষ ফিরে যান তাঁদের জন্মভিটায়, সন্তানেরা ফেরে মায়ের কোলে; ভাইবোন-আত্মীয়স্বজন, পুরোনো সহপাঠী পাড়াপড়শির পুনর্মিলন ঘটায় ঈদ। এবারের কারোনামুক্ত ঈদ উৎসবের রেশ এখনও যে রয়ে গেছে তা ফের প্রমাণ করল ভারত-বাংলাদেশের পেট্রাপোল সীমান্তের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত এক ঝাঁক প্রতিনিধিরা ৷
রবিবারের বিকালে তাঁদের উদ্যোগে বনগাঁয় অনুষ্ঠিত হলো পবিত্র ঈদ উৎসবের মিলন মেলা ও শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান৷
দীর্ঘ দিন ধরে দুই বাংলার মধ্যে আমদানি ও রপ্তানি ব্যবসার কাজে যুক্ত শতাধিক ব্যবসায়ী সৌহার্দ্যের নজির গড়ে চলেছেন৷ দূর্গাপুজোর সময় যেমন বাঁশের খুঁটি পুজো করে শারদউৎসবে মিলিতহন এই মানুষগুলো ঠিক ঈদ উৎসবেও সামিলহন একই ভাবে৷
এখন প্রশ্ন হল, ঈদের এতদিন পর কেন এই মিলন উৎসব?
হাসেম ট্রেডিং কর্পোরেশন এর কর্ণধার মীর আব্দুল হাসেম জানান, ঈদ নির্দিষ্ট দিনে হয়েছে,কিন্তু ওই যেযার বাড়িতে আত্মীয় পরিজনদেরকে নিয়ে আনন্দে মেতে থাকেন৷ তাই ওই দিন আমাদের ব্যবসায়ী বন্ধুরা একসঙ্গে উপস্থিত থাকতে পারিনি ৷ তাই সীমান্তবাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত শতাধিক ব্যবসায়ী বন্ধুদেরকে নিয়ে এদিন আমাদের পবিত্র ঈদ উৎসবের মিলন মেলা ও শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান করা হল৷ বিশেষ করে আমাদের হিন্দু ও খ্রীষ্টান বন্ধুদেরকে একত্রিত করতেই এদিনের আয়োজন৷
ব্যাবসা বাণিজ্যের লাভ ক্ষতির হিসাব ভুলে সকলেই মেতেছিল এদিনের মিলন উৎসবে। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শুল্ক দপ্ততের আধিকারীক সহ বিভিন্ন আমদানি রফতানি বিভাগীয় সম্মানীয় বেক্তিগণ।
পেট্রাপোল ক্লিযারীং এজেন্ট এন্ড স্টাফ ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, এদিন তাঁরা একটি আনন্দ উৎসবের আয়োজন করেছিলেন। পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে সম্প্রীতির বার্তা দেওয়াই ছিল মূল উদ্দেশ্য৷ এছাড়া পেট্রাপোল এক্সপোর্টার এন্ড ইমপোর্টার ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশন সহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত সদস্যরা পাশা পাশি বসে মিষ্টি মুখ করে সীমান্তবাণিজ্যের বিষয়েও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নেওয়ার সুযোগ ছিল৷ যা আগামী দিনে সীমান্ত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব পাবে বলে আশা করা যায়৷