দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রথমবারের মিশন ব্যর্থ হয়েছিল। উৎক্ষেপণের পরেও পৃথিবীর কক্ষে পৌঁছতে পারেনি চিনের অপটিক্যাল রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইট। সেই মিশনের ঘাটতিগুলো এবারে পুষিয়ে দিয়েছেন চিনের মহাকাশবিজ্ঞানীরা। জাহাজের ডেক থেকে শক্তপোক্ত প্রপেল্যান্ট ক্যারিয়ার রকেটে চাপিয়ে ৯টি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়ে দিয়েছেন মহাকাশে। এই উপগ্রহগুলি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের শক্তি কাটিয়ে কক্ষপথে গিয়ে বসেও গেছে। এরপর তাদের কাজ পৃথিবীর উপর নজরদারি চালানো।
লং মার্চ ১১ পরিবারেরই অন্তর্ভুক্ত এই নতুন ৯টি স্যাটেলাইট। এরা হল লং মার্চ ১১-এইচওয়াই২। চিনের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পশ্চিম প্রশান্তমহাসাগরীয় ‘ইয়েলো সি’ থেকে এই কৃত্রিম উপগ্রহগুলির উৎক্ষেপণ করেছে চিন। স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ২২ মিনিট নাগাদ।
এই উপগ্রহগুলির নাম ‘জিলিন-১ গাওফেন ০৩’ । এদের ভর ৪০ কিলোগ্রামের কিছু কম। জিলিন গোত্রের উপগ্রহ বানিয়েছে চিনের চ্যাংগুয়াং স্যাটেলাইট টেকনোলজি। এই উপগ্রহ দলের কাজ নজরদারি চালানো। এরা মূলত ‘অর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট’। পৃথিবীর কোন প্রান্তে কী হচ্ছে, আবহাওয়ার গতি প্রকৃতি কেমন, সীমান্ত সুরক্ষিত কিনা, অন্য দেশের সীমান্তে কী কী বদল হচ্ছে তার খুঁটিনাটি খবর দিতে পারে এই কৃত্রিম উপগ্রহ। পৃথিবীর কক্ষে বসেই নিখুঁত ছবি তুলে আনতে পারে নজরদারি স্যাটেলাইট। চিন যে ৯টি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়েছে, তার তিনটি ভিডিও স্যাটেলাইট। অর্থাৎ মহাকাশ থেকে উঁকিঝুঁকি দিয়ে পৃথিবীর কোথায় কী হচ্ছে তার ভিডিও তুলে পাঠাতে পারবে গ্রাউন্ড স্টেশনে। বাকি ছ’টি পুশ-ব্রুম স্যাটেলাইট। এদের কাছ ছবি তুলে পাঠানো। পাশাপাশি এই ৬টি কৃত্রিম উপগ্রহ সূর্যের আশপাশেও নজর রাখবে। সূর্যের কক্ষের ছবি তুলে পাঠাবে পৃথিবীতে। ভবিষ্যতে সৌর-অভিযান চালালে এই উপগ্রহের পাঠানো ছবি বিশেষ কাজে লাগবে চিনা মহাকাশবিজ্ঞানীদের।
প্রথমবারের মহাকাশ মিশন কেন ব্যর্থ হল তার সঠিক খবর এখনও মেলেনি। শোনা গেছে তদন্ত কমিটি বসিয়েছে চিন। জিউকুয়ান কেন্দ্র থেকে ‘জিলিন-১ গাওফেন ০৩সি’ স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠিয়েছিল চিন। কুয়াইঝাও-১-এ লঞ্চ প্যাড উপগ্রহের উৎক্ষেপণ ঠিক হলেও পৃথিবীর কক্ষে তাকে স্থাপন করা যায়নি। বিজ্ঞানীদের দাবি ছিল, কিছু প্রযুক্তিগত ত্রুটির জন্যই পৃথিবীর অরবিট বা কক্ষে স্থাপন করা যায়নি স্যাটেলাইটকে।
তবে সেই ভুল হয়নি, এমনই দাবি চিনের মহাকাশবিজ্ঞানীদের। জানা গেছে, উপগ্রহদের নিয়ে রকেট সোজা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের মায়া কাটিয়ে পৃথিবীর কক্ষে গিয়ে থেমেছে। তারপর ৯টি উপগ্রহকেই সাফল্যের সঙ্গে কক্ষপথে স্থাপন করা গেছে।