পুজো বাড়ির মেনু 

0
718
পুজো আসতে আর মাত্র পনেরদিন, পুজোর সাজগোজ, কেনাকাটা, ঘোরা বেড়ানো সবকিছুর প্ল্যানিংও প্রায় শেষ; এবার শুধু সময়ের অপেক্ষা; কিন্তু শুধুমাত্র সাজগোজ আর ঘোরা বেড়ানো করলেই হবে না, পুজো মানে পেট পুজো সেটাতো খাদ্যরসিক বাঙালি কখনো ভুলতে পারে না! সারাবছরই তো থাই, চাইনিস, মোগলাই, কন্টিনেন্টাল চলতেই থাকে; দুর্গাপুজোর দিনগুলোয় তাই সেসব কন্টিনেন্টাল বাদ দিয়ে অন্তত নিপাত সনাতনী বাঙালিয়ানার স্বাদে পেটপুজো হয় তাতে মন্দ কি | আর যাদের বাড়িতে দুর্গাপুজো হয় কিংবা যারা প্ল্যান করেছো পুজোর কটাদিন বাড়িতে বসে শুধুই পেটপুজো করবে তাদের জন্য রইলো এবারের দেশের রান্নাঘরের পুজো বাড়ির মেনু | পুজোর যেকোনো একটা দিন এই মেনু বানিয়ে ফেলা যেতেই পারে|
জাফরানি খিচুড়ি

উপকরণ: গোবিন্দ ভোগ চাল ২৫০ গ্রাম, মুগের ডাল ১২৫ গ্রাম, জল ১ লিটার, ঘি ১২৫ গ্রাম, দারচিনি ৬ গ্রাম, ছোট এলাচ ৬টা, লবঙ্গ ১০-১২ টা, তেজপাতা ৩টি, আদা ১২ গ্রাম, জাফরান ৫০০ মিলিগ্রাম, নুন ১ চা চামচ|
প্রণালী: চাল ডাল একসাথে মিশিয়ে ধুয়ে নিতে হবে| ১ চা চামচ জাফরান জলে গুলি রাখতে হবে| এক লিটার জল জল গরম করে এরমধ্যে সবরকম গোটা গরম মশলা অর্ধেক পরিমান, তেজপাতা ১ টা, আদা কুচানো ৬ গ্রাম দিয়ে জল ফুটিয়ে এখনি বানিয়ে নামিয়ে রাখতে হবে| এবার হাঁড়িতে ঘি গরম করে বাকি গোটা গরম মশলা, তেজপাতা ও আদা বাটা দিয়ে ভাজা হলে জাফরান জল ঢেলে তাতে চাল ডাল ও নুন দিয়ে কষতে হবে| সবসুদ্ধ আট দশ মিনিট কষা হলে আঁখনির জল ঢেলে হাঁড়ি চাপা দিতে হবে| মিনিট পনেরো অল্প আঁচে বসিয়ে রাখতে হবে| চাল ও ডাল সিদ্ধ হয়ে জল ঘন হয়ে এলে নামাতে হবে| অল্প ঘি ছড়িয়ে পরিবেশন করতে হবে|

মুগডাল ও কড়াইশুঁটির ফেনসা খিচুড়ি

উপকরণ: সোনা মুগের ডাল ৩৭৫ গ্রাম, আতপ চাল ১২৫ গ্রাম, ঘি ১২৫ গ্রাম, ছোট এলাচ দুটো, লবঙ্গ চারটে, দারচিনি ৩ গ্রাম, তেজপাতা ২টি, শুকনো লঙ্কা ১ টি, হলুদ ২ চামচ, নুন ২ চা চামচ, কচি কড়াইশুঁটি ১২৫ গ্রাম|
প্রণালী: চাল ও ডাল ধুয়ে রাখতে হবে| হাঁড়িতে ঘি গরম করে তেজপাতা ও গোটা গরম মশলা ফোড়ন দিতে হবে; এরপর চাল দিয়ে ভেজে ডাল দিয়ে দিতে হবে| নুন, হলুদ ও লঙ্কা বাটা দিয়ে ভালো করে নেড়ে জল ঢেলে চাপা দিতে হবে| মাঝে মাঝে নেড়ে দিতে হবে| চাল ডাল সিদ্ধ হয়ে ঘন হয়ে এলে কড়াইশুঁটি দিয়ে মিশিয়ে নামাতে হবে|

ছাঁচি কুমড়োর মশলা বড়ি

উপকরণ: কাঁচা মাস কলাই ৮৭৫ গ্রাম, কাঁচা ছাঁচি কুমড়ো ২৫০ গ্রাম, শুকনো লঙ্কা ৩-৪ টি, হলুদ দেড় চামচ, ধনে ১ বড় চামচ, মেথি, কালোজিরে, মৌরি ও জিরে মিশিয়ে ১ বড় চামচ, ছোট এলাচ ৩টি, দারচিনি ৩ গ্রাম, হিং ৪৫০ মিলিগ্রাম, আদা ৬ গ্রাম|
প্রণালী: ডাল আগের দিন রাত্রে ভিজিয়ে রাখতে হবে| পরের দিন খোসা তুলে বেটে নিতে হবে| ছাঁচি কুমড়ো কুরে জল বের করে ঝরিয়ে রাখতে হবে| আদা বেটে নিতে হবে| হিং জলে ভিনিয়ে রাখতে হবে| ধনে ও শুকনো লঙ্কা করে শুকনো ভেজে হলুদ, মেথি, কালী জিরে, জিরে, মৌরি, দারচিনি, ছোট এলাচ, সব একসাথে গুঁড়িয়ে নিতে হবে| এরপর বাটা ডাল, ছাঁচি কুমড়ো, গুঁড়ানো মশলা, হিং গোলা জল একসাথে মিশিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিতে হবে| এরপর একটু বড় আকারের বড়ি বানিয়ে রোদে দিতে হবে| ৮০০ গ্রাম বড়ি হবে| এই ধরণের বড়ি যেকোনো চড়চড়ি, ঘন্ট, ডালনা, মাছের ঝোল অথবা অম্বল যেকোনো কিছুতেই দিলে তা ভালো লাগে|

সাদা নিরামিষ চড়চড়ি

উপকরণ: পছন্দ মতো সবরকম সবজি ও ডাঁটা মিলিয়ে এক বড় বাটি, মশলা বড়ি ৮-১০টি, কাঁচা লঙ্কা ২-৩ টি, পাঁচ ফোড়ন ১ চা চামচ, সর্ষে ১ চামচ, তেল ২ বড় চামচ|
প্রণালী: সবরকম সবজি ডুমো করে কেটে নিতে হবে| তেল গরম করে কাঁচা লঙ্কা ও পাঁচফোড়ন দিতে হবে; এরপর সবজি দিয়ে সর্ষে ও লঙ্কা বাটা দিয়ে ভালো করে কষতে হবে| ভালো মতো ভাজা হলে সিদ্ধ হওয়ার মতন জল দিয়ে চাপা দিতে হবে| জল শুকিয়ে গেলে নামাতে হবে|

আলুর দমপক্ত

উপকরণ: মাঝারি আলু ১০ -১২ টি, শুকনো লঙ্কা তিনটি, ঘি ১২৫ গ্রাম, দই ১২৫ গ্রাম, ধনে ১ চা চামচ, জাফরান ৩৫০ মিলিগ্রাম, আদা ১ ইঞ্চি, বাদাম ৬ টি, কিসমিস ২০ টি, ক্ষীর ৩০ গ্রাম, নুন ১ চা চামচ, ছোট এলাচ ২টি, লবঙ্গ চারটি, দারচিনি ৩ গ্রাম, জল ৩ বড় চামচ|
প্রণালী: আলু খোসা ছাড়িয়ে ধুয়ে রাখতে হবে| ধনে, লঙ্কা, আদা, বাদাম, কিসমিস বেটে নিতে হবে| কড়াইতে ঘি দিয়ে ক্ষীর ভেজে তুলে নিতে হবে| ওই ঘিয়ে আলু লালচে করে ভেজে তুলে নিতে হবে| পরে থাকা ঘিয়ে গোটা গরম মশলা, সব রকম বাটা মশলা, জাফরান, দই ও ক্ষীর এক এক করে দিয়ে কষা হলে ভাজা আলু দিতে হবে| এরপর জল দিয়ে নরম আঁচে চাপা দিয়ে নরম আঁচে মিনিট পনেরো বসিয়ে রাখতে হবে| জল শুকিয়ে ঘন হয়ে এলে নামিয়ে নিতে হবে| ছানার দমপক্তও এই একই পদ্ধতিতে বানানো যেতে পারে|

কাঁচা পেঁপের অম্বল

উপকরণ: কচি কাঁচা পেঁপে ২ টো, শুকনো লঙ্কা ১ টি, কাঁচা তেঁতুল ৪ টি, আম আদা আড়াই ইঞ্চি, মেথি হাফ চামচ, তেল সাড়ে চার চামচ, নুন ১ চা চামচ, চিনি ৭৫ গ্রাম, জল সাড়ে চার কাপ|
প্রণালী: পেঁপে খোসা ছাড়িয়ে সরু ফালি করে কেটে হাফ লিটার গরম জলে কাঁচা তেঁতুল দিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে| তেঁতুল নরম হয়ে এলে তুলে রাখতে হবে| পেঁপে সিদ্ধ হয়ে গেলে জল ঝরিয়ে রাখতে হবে| আম আদা বেটে নিতে হবে| কড়াইতে তেল গরম করে মেথি ফোড়ন দিয়ে সিদ্ধ তেঁতুল দেড় কাপ জলে গুলে মারিটা তেলে ঢেলে দিতে হবে| দু তিন মিনিট পর নুন, চিনি ও পেঁপে দিতে হবে| ফুটতে শুরু করলে আম আদা বাটা দিতে হবে| এক দু মিনিট ফুটিয়ে নামিয়ে নিতে হবে|

কামিনী চালের পরমান্ন

উপকরণ: সুগন্ধি কামিনী আতপ চাল ১৮০ গ্রাম, চিনি ২৫০ গ্রাম, দুধ ১ লিটার, জল ২ লিটার|
প্রণালী: চাল ধুয়ে রাখতে হবে| হাঁড়িতে জল গরম করে চাল দিতে হবে| ভাত সিদ্ধ হয়ে গেলে অল্প ঘেঁটে নিতে হবে, ভাত আর ফেন মিশে এলে দুধ ঢালতে হবে| ফুটতে শুরু করলে চিনি দিয়ে আরেকবার ফুটিয়ে নামিয়ে নিতে হবে|

Previous articleসিবিআই ডাকলেও কতবার যাননি রাজীব, আলিপুর আদালত তালিকা চাইল
Next articleআলিপুর আদালতে সিবিআই জানাল রাজীব কুমার পালিয়েছেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here