নিট-জয়েন্ট স্থগিত না করলে সুপ্রিম কোর্টে যাব: মুখ্যমন্ত্রী

0
288

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এতদিন পর্যন্ত আবেদন করেছিলেন। বুধবার সনিয়া গান্ধী ও অবিজেপি একাধিক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকের শুরুতেই সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন ভার্চুয়াল বৈঠকের শুরুতেই মমতা বলেন, “আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করব, তারা যাতে সুপ্রিম কোর্টে পরীক্ষা স্থগিতের জন্য আবেদন করেন। তা না হলে আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব। দরকার হলে গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”

মুখ্যমন্ত্রী এদিন স্পষ্ট বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু আদালতে রায় পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানানোর সুযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে সলিসিটর জেনারেল, অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে তা করতেই পারে। কেন্দ্র যদি তা না করে, তাহলে আমরা আমাদের দিক থেকে আদালতে যাব। দেশে ২৪ লক্ষ ছেলেমেয়ে পরীক্ষা দেবে। এটা ছেলেমানুষির বিষয় নয়।”

ভিডিও কনফারেন্সে মমতা বলেন, “আমি সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি। এগিয়ে আসুন।” তিনি আরও বলেন, “ছাত্রছাত্রীরাও এই মহামারী পরিস্থিতিতে মানসিক ভাবে প্রস্তুত নয়। বাস্তব অবস্থাটা বোঝা জরুরি। কখনওই এত ছেলেমেয়েকে জেনেবুঝে বিপদের মুখে ফেলে দেওয়া যায় না।”

করোনা পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীরা কী ভাবে পরীক্ষার হলে পৌঁছবেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা। তাঁর কথায়, “আমরা কি কেউ ভাবছে যে তাঁরা কী ভাবে পরীক্ষার হলে যাবেন বা ফিরবেন।”

প্রসঙ্গত, অন্যবার ট্রেন চালু থাকার ফলে একটা বড় অংশের পরীক্ষার্থী রেলের মাধ্যমেই যাতায়াত করেন। কিন্তু এবার সেই সুযোগ নেই।

জয়েন্ট এন্ট্রান্স বা নিট পরীক্ষা সাধারণত এপ্রিল-মে মাসেই হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সুরক্ষাবিধির কথা মাথায় রেখে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। প্রথমে বলা হয়েছিল, সব পরীক্ষাই হবে জুলাইতে। জয়েন্ট পরীক্ষার দিন ফেলা হয়েছিল ১৮ থেকে ২৩ জুলাই এবং নিট পরীক্ষার দিন ঠিক হয়েছিল ২৬ জুলাই। কিন্তু, জুলাই মাসেও দেশজুড়ে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় পরীক্ষা ফের পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পরে ঠিক হয় সেপ্টেম্বরে ১-৬ ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ১৩ সেপ্টেম্বর ডাক্তারি পড়ার প্রবেশিকা পরীক্ষা হবে। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ১১ জন ছাত্র ও তাঁদের অভিভাবকরা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়,  “করোনা সংক্রমণের কারণে জীবন থমকে থাকবে না। স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের কারণে এমনিতেই ছাত্রছাত্রীদের কেরিয়ারের অনেক ক্ষতি হয়েছে। পরীক্ষা পিছিয়ে দিলে তাদের আরও একটা বছর নষ্ট হবে। সেদিকটা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

গতকাল কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের চাপেই কেন্দ্রীয় সরকার পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও এদিন মমতা বলেন, পরীক্ষার্থীরা মানসিক ভাবে প্রস্তুত নন।

তবে ফের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারি ও গণআন্দোলন গড়ে তোলার কথা শুনে অনেকেই বলছেন, এতে আরও মানসিক ভাবে চাপে পড়তে পারেন পড়ুয়ারা। তবে এখন ফের এই মামলা আদালতে গড়ায় কি না, কী ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলেন মমতারা এখন সেটাই দেখার।

Previous articleরাজ্যে সেপ্টেম্বরেও পুরো লকডাউন হবে ,৩ দিন ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
Next article‘আর দেরি করলে সর্বনাশ হবে’ জয়েন্ট-নিট নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ১৫০-এর বেশি শিক্ষাবিদের চিঠি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here