দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা অতিমহামারীতে বিপর্যস্ত বিশ্বের অর্থনীতি। এরই মধ্যে বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে ভারত। বিদেশমন্ত্রকের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে ১৫ টিরও বেশি সংস্থা ভারতে প্রায় ২ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। টাকার অঙ্কে এই বিনিয়োগের পরিমাণ ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৫৪৫ কোটির সমান। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আছে গুগল, ওয়ালমার্ট, ফেসবুক এবং হিতাচি।
কিছুদিন আগেই আইএমএফ জানিয়েছে, তাদের ধারণা, করোনা অতিমহামারীর জেরে আন্তর্জাতিক অর্থনীতি সংকুচিত হবে ৪.৯ শতাংশ হারে। ভারতীয় অর্থনীতিরও সংকোচন হবে ৪.৫ শতাংশ।
সুন্দর পিচাইয়ের নেতৃত্বাধীন গুগল গত সোমবার ঘোষণা করে, আগামী পাঁচ থেকে সাত বছরের মধ্যে তারা ভারতে ১ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে। প্রত্যেক ভারতীয় যাতে মাতৃভাষায় সহজে ইন্টারনেট পরিষেবা পেতে পারেন, সেদিকে লক্ষ রাখবে গুগল।
গত মঙ্গলবার ওয়ালমার্ট তার ওয়েবসাইট মারফৎ জানায়, ফ্লিপকার্টে তারা আরও ১০২ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে। ইলেকট্রনিক্স পণ্য নির্মাতা সংস্থা ফক্সকন ঘোষণা করেছে, দক্ষিণ ভারতে তাদের কারখানার সম্প্রসারণ ঘটাবে। তাতে বিনিয়োগ করবে ১০০ কোটি ডলার। গত এপ্রিলে সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি ফেসবুক ঘোষণা করে, রিলায়েন্স জিও প্ল্যাটফর্মে তারা বিনিয়োগ করবে ৫৭০ কোটি ডলার। আমেরিকার কর্পোরেট ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড কোয়ালকম ভেঞ্চারস ঘোষণা করেছে, জিও প্ল্যাটফর্মসে বিনিয়োগ করবে ৭৩০ কোটি টাকা।
ফ্রান্সের কনজিউমার ইলেকট্রনিক কোম্পানি টমসন ঘোষণা করেছে, আগামী পাঁচ বছরে ভারতে বিনিয়োগ করবে ১ হাজার কোটি টাকা। আপাতত ওই সংস্থা ভারতে স্মার্ট টিভির বাজার ধরার চেষ্টা করছে। এরপর তারা ওয়াশিং মেশিনও বিক্রি করবে। উইওয়ার্ক নামে এক সংস্থা ঘোষণা করেছে, ভারতে বিনিয়োগ করবে ১০ কোটি ডলার। জাপানের বহুজাতিক সংস্থা হিতাচি ঘোষণা করেছে, ভারতে ৪০০ ইলেকট্রিক লোকোমোটিভের জন্য তারা ট্রান্সফর্মার তৈরি করবে। সেজন্য বিনিয়োগ করবে ১ কোটি ৫৯ লক্ষ ডলার।
দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থা কিয়া মোটর্স গত মে মাসে জানিয়েছে, তারা অন্ধ্রপ্রদেশে অনন্তপুর কারখানায় আরও ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে কিয়া মোটর্স ছিল ভারতে সবচেয়ে বড় গাড়ি নির্মাতা সংস্থাগুলির অন্যতম। টয়োটা ও হোন্ডার মতো সংস্থাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে তারা।
গত জুন মাসে সৌদি আরবের পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ঘোষণা করেছে, জিও প্ল্যাটফর্মে তারা বিনিয়োগ করবে ১১ হাজার কোটি টাকা। গত এপ্রিলে দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাতা সংস্থা হুন্ডাই মোবিস ঘোষণা করে, ভারতে রিসার্চ ও ডেভলপমেন্টে আরও বেশি বিনিয়োগ করবে তারা।
এর পাশাপাশি অ্যামাজনের সহযোগী সংস্থা এসজিএস, আন্তর্জাতিক ডাটা সফটওয়ার সংস্থা অ্যাক্সটেরিয়া, অ্যাপ বেসড সলিউশনস পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা এফ ফাইভ, জাপানের ইলেকট্রনিক্স সংস্থা সুজুকি এবং স্যামসুং ঘোষণা করেছে, তারা ভারতে নতুন অফিস খুলবে।