দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: ফের একবার ডার্বিতে যুবভারতীর রঙ হল লাল–হলুদ। যদিও একতরফা নয়, ৩–২ গোলে ম্যাচটি জিতল আলেসান্দ্রো মেনেন্দেজের ছেলেরা। দ্বিতীয়ার্ধে লালকার্ড দেখে বাগান রক্ষণের অন্যতম স্তম্ভ কিংসলে বেরিয়ে গেলেও লড়াই করল শংকরলাল চক্রবর্তীর ছেলেরা। অবশেষে নতুন কোচের হাত ধরেই ভাগ্য বদলাল ইস্টবেঙ্গলের।

এদিন খেলা শুরুর প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যেই গোল হয়ে যায়। ১৩ মিনিটের মাথায় গোল করে মোহনবাগানকে এগিয়ে দেন আজহারউদ্দিন মল্লিক। ডানদিক থেকে তোলা ওমরের ক্রস থেকে লাল–হলুদ ডিফেন্ডারদের ভুলে গোল করে যান এই তরুণ ফুটবলারটি। কিন্তু এর পাঁচ মিনিট পরেই লাল–হলুদের গোল শোধ করেন লালডানমাইয়া রালতে। তবে তাঁর গোলটি নিয়ে কিছুটা বিতর্ক রয়েছে। এই সময় পাহাড়ি ফুটবলারটি অফসাইডে ছিলেন, বলে বিশেষজ্ঞদের মত। যদিও ইস্টবেঙ্গলকে গোলটি দিয়ে দেন রেফারি। এরপর আক্রমণ–প্রতিআক্রমণে খেলা গড়াতে থাকে। তবে বিরতির বাঁশি বাজার আগেই জবির বিশ্বমানের গোলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। বাগান রক্ষণের ভুলে দুরন্ত ব্যাকভলিতে গোল করে যান জবি। বিরতির সময় ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে খেলার স্কোর ছিল ২–১।একদিকে সোনি নর্ডে নেই। আরেকদিকে নেই এনরিকে এসকুয়েদা। অর্থাৎ দু’‌দলই আক্রমণভাগের শক্তি খুইয়ে এদিন মাঠে নেমেছিল। কিন্তু তাতে খেলায় আক্রমণের ঝাঁঝ এতটুকুও কমেনি। গোটা ম্যাচে পাঁচগোলই তার প্রমাণ। এর মধ্যেই ৬০ মিনিটে ম্যাচে দ্বিতীয়বার হলুদ কার্ড দেখেন কিংসলে। গোল খেয়ে অলআউট অ্যাটাকে উঠে আসে দশজনের মোহনবাগান। একের পর এক আক্রমণ আছড়ে পড়তে থাকে লাল–হলুদ রক্ষণে। ডিকা–হেনরিদের সামলাতে তখন হিমশিম খাচ্ছেন বোরহা–জনিরা। শেষপর্যন্ত ৭৬ মিনিটে গোল শোধ করেন ডিকা। অরিজিৎ বাগুইয়ের সেন্টার বোরহা ঠিকমতো ক্লিয়ার না করায় সেই বল ধরে দুরন্ত শটে গোল করে যান ডিকা। এরপর সমতা ফেরাতে আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়ায় মোহনবাগান। তবে ৮৬ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন জবি। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও জালে বল জড়াতে পারেননি কেরলের এই ফুটবলার। শেষপর্যন্ত ৩–২ গোলেই শেষ হয় ডার্বির মহারণ।

এই ম্যাচ ছিল দায়িত্ব নেওয়ার পর আলেসান্দ্রোর প্রথম ডার্বি। দু’‌বছরেরও বেশি সময়, সাতটি ডার্বি। প্রত্যেকবারই হয় ড্র, নয়তো মোহনবাগান জিতেছে। অবশেষে নতুন কোচের হাত ধরেই ভাগ্য বদলাল ইস্টবেঙ্গলের।ভারতে কোচিং করাতে এসে জীবনের প্রথম কলকাতা ডার্বিতেই বাজিমাৎ। অথচ ‌আই লিগে ৩ ম্যাচে টানা হারের পর ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রোর ক্ষমতা নিয়ে লাল হলুদ সদস্য সমর্থকদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। তাঁর স্ট্র‌্যাটেজি ও টিম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে আড়ালে সমালোচনাও হচ্ছিল। এমনও কথা উঠেছিল, স্প্যানিশ ঘরানায় অভ্যস্ত আলেসান্দ্রো বাঙালির আবেগ কি আদৌ বোঝেন?‌ ডার্বির গুরুত্ব তাঁর কাছে কি জানা?‌

দু’‌বছরেরও বেশি সময়, সাতটি ডার্বি। প্রত্যেকবারই হয় ড্র, নয়তো মোহনবাগান জিতেছে। অবশেষে নতুন কোচের হাত ধরেই ভাগ্য বদলাল ইস্টবেঙ্গলের।ভারতে কোচিং করাতে এসে জীবনের প্রথম কলকাতা ডার্বিতেই বাজিমাৎ। অথচ ‌আই লিগে ৩ ম্যাচে টানা হারের পর ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রোর ক্ষমতা নিয়ে লাল হলুদ সদস্য সমর্থকদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। তাঁর স্ট্র‌্যাটেজি ও টিম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে আড়ালে সমালোচনাও হচ্ছিল। এমনও কথা উঠেছিল, স্প্যানিশ ঘরানায় অভ্যস্ত আলেসান্দ্রো বাঙালির আবেগ কি আদৌ বোঝেন?‌ ডার্বির গুরুত্ব তাঁর কাছে কি জানা?‌

সমালোচকদের মুখে ঝামা ঘসে দিয়ে আই লিগে নিজের প্রথম ডার্বি জিতে আলেসান্দ্রো আই লিগের খেতাবী দৌড়ে ইস্টবেঙ্গলকে ফেরালেন শুধু নয়, সদস্য-‌সমর্থকদের হৃদয়ে আলাদাভাবে জায়গা করে নিলেন। রিয়েল মাদ্রিদ আকাদেমি দলের কোচ সমীহ পাওয়ার জায়গায় পৌঁছে গেলেন।

ম্যাচে গোল হলেও বাড়তি উচ্ছ্বাস দেখান না আলেসান্দ্রো। তবে এদিন ম্যাচের সময় একটু যেন বেশি ছটফটানি দেখালেন। নিজের দল গোল করলে হাত ঝাঁকিয়ে উল্লাস করলেন। সম্ভবত তাঁর এই আচরণ দল চাপমু্ক্ত হওয়ার কারণে। নিজেও যে চাপে ছিলেন এটা বলাই বাহুল্য। তবে সেটা ম্যাচ জিতে স্বীকার করলেন না। বরং সাংবাদিক সম্মেলনে এসে মৃদু তৃপ্তির হাসি মুখে এনে আলেসান্দ্রো বলেন, ‘ডার্বি জয় নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। জিতে ভাল লাগছে। লিগ টেবিলে ওপরের দিকে থাকার জন্য এটা কাজে দেবে। গোটা দলকে বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাবে। তবে এখানেই থেমে থাকতে চাই না। দল যাতে আরও ভাল খেলে, তার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সামনের ম্যাচেও জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে।’‌

গোল না পেলেও অভিষেক ডার্বিতে কিন্তু নজর কাড়লেন নবাগত স্প্যানিশ খাইমে কোলাডো। পাশাপাশি লাল–হলুদের হয়ে দুরন্ত খেললেন জবি। এনরিকের অভাব কোনওভাবেই টের পেতে দেননি তিনি। তবে ম্যাচ হারায় চাপে পড়তে পারেন শংকরলালকে। ইতিমধ্যে কোচের স্ট্র‌্যাটেজি নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা। বড় ম্যাচে শুধু লং বলের স্ট্র্যাটেজি কতটা কার্যকর তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here