দেশের সময় ওয়েবডেস্ক:ফের ত্রাণ নিয়ে অশান্তির অভিযোগ উঠল রাজ্যে। এবার অশান্তি থামাতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন থানার ওসি’ও। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনায় বাদুড়িয়া পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তারাগুনিয়া এলাকায় । যদিও যে ত্রাণ বন্টন নিয়ে অভিযোগ তা যে সরকারি নয়, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে তিনি বলেন, ‘বাদুড়িয়ায় যে ঘটনা আপনারা দেখাচ্ছেন, তা সরকারের রেশন নয়। অনেক রাজনৈতিক দল সাহায্য করছে। এনজিও হেল্প করছে। সরকারের রেশন পাঁচ কেজি সবাই পাবে। একটু দেরি হয়তো হবে। তবে প্যাকেট আমরা করছি না। নিজেদের ব্যাগ নিয়ে আসবেন। রেশন দোকান থেকে মেপে দিয়ে দেবে।’ খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য গোটা পরিস্থিতির জন্য বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাদুড়িয়ার তারাগুনিয়া দাসপাড়া এলাকায় দফায় দফায় জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ হয়। বসিরহাটের এসডিপিও-র নেতৃত্বে পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে। জনতার লাঠি ও ইটের আঘাতে জখম হয়েছেন বাদুড়িয়া থানার ওসি-সহ চার পুলিশকর্মী। মোট ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অবশ্য অভিযোগ, পুলিশ বিনা প্ররোচনায় লাঠি চালায়।
বিজেপির অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অরিত্র ঘোষ ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি করছেন। পুলিশ অবশ্য অভিযোগ করেছে, ত্রাণ নিয়ে চলা বিক্ষোভ তুলতে গেলে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট ছোড়ে। ইটে মাথা ফাটে এক পুলিশকর্মীর। এরপর পুলিশের দিকে তেড়ে যান অনেকে। বাদুড়িয়া থানার ওসি বাপ্পা মিত্রকে ঘিরে ধরে মারধর করে বলে জানাগিয়েছে পুলিশ সূত্রে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাস্তা অবরোধ তুলতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বাদুড়িয়া থানার পুলিশ। অবরোধকারীদের অভিযোগ, পুলিশ এসেই তাঁদের উপর চড়াও হয় এবং এলোপাথাড়ি লাঠি চালাতে শুরু করে। তার পরেই শুরু হয়ে যায় গ্রামবাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষ। পুলিশের সঙ্গে ছিলেন কয়েক জন সিভিক ও ভিলেজ পুলিশ। উত্তেজিত জনগণ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাথর ছুড়তে শুরু করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ করে জানান, লকডাউনের মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বার বার আবেদন সত্ত্বেও তাঁদের এলাকায় কোনো ত্রাণ পৌঁছয়নি।
বাদুড়িয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দাসপাড়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরিত্র ঘোষের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ওখানকার সকলেই ত্রাণ পেয়েছেন। রাজনৈতিক উস্কানি দিয়ে গন্ডগোল পাকানো হয়েছে।”
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের নাম ধরে অভিযোগ করেন, ‘গোটা অশান্তির পিছনে রয়েছে বিজেপি। তাঁরাই বুঝিয়ে দিচ্ছে, কাজ নয়, রাজনীতি করে পরিস্থিতি অশান্তি করে তুলতে চাইছে তাঁরা।’ অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘সবকিছুতেই বিজেপি ভূত দেখেন জ্যোতিপ্রিয় বাবু। আগে রাতে দেখতেন, এখন দিনেও দেখেন।’