নীলাদ্রি ভৌমিক: বারাসতঃ উওর ২৪ পরগনার বিধাননগরের একটি কফি শপে ডাকাতির কিনারা করল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। উল্লেখ্য, ওই কফি শপে দু’দিন আগে তিন দুষ্কৃতী ক্রেতা সেজে ঢুকে ক্যাশ থেকে টাকা লুট করে চম্পট দেয়। সিসি টিভির সূত্র ধরে পুলিশ গাইঘাটার ঢাকুরিয়া থেকে গ্রেফতার করে ডাকাতির মূল পান্ডা শঙ্কর দাসকে। শঙ্কর ওই কফি শপে অতীতে কাজ করত। শঙ্করকে জেরা করে চাঁদপাড়া থেকে অপর দুই অভিযুক্ত মিন্টু সরকার ও সুরজিত রায়কেও ধরতে সক্ষম হয় পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে লুট হওয়া বেশ কিছু টাকাও উদ্ধার করা হয়। অন্যদিকে, গাইঘাটা থানার আঙরাইল সীমান্ত থেকে ১০ লক্ষ জাল নোট সহ দু’জন বাংলাদেশি পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বেআইনি অনুপ্রবেশের সময় গোপন সুত্রে খবর পেয়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হাতেনাতে ওই গরু পাচারকারীদের আটক করে বি এস এফ। ধৃতের নাম সুকুর আলি। বাড়ি বাংলাদেশের নবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানা এলাকার তারাপুর গ্রামে। ভারত থেকে বাংলাদেশে পাচার হওয়া গরুর সীমান্ত পারাপারের দায়িত্ব ছিল সুকুর আলির উপরে। গরু পারাপারের কাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের টাকা নিতে এসেই ধরা পড়ে যায় সে। তার কাছ থেকে ভারতীয় ২০০০ টাকার ৪৯১টি জাল নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে নামী সংস্থার মোবাইল ফোন, ভারতীয় মুদ্রায় পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা ও বাংলাদেশের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গরু পাচারকারী সুকুর শনিবার সন্ধ্যায় গাইঘাটা থানার আংরাইল সীমান্ত এলাকা থেকে ধরা পড়েছে। সন্ধ্যার সময় সীমান্ত পারাপার করতে গিয়েই কর্তব্যরত বিএসএফের নজরে পড়ে যায় ওই বাংলাদেশি। একেবারে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। পরে গাইঘাটা থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয় বিএসএফ।
ধৃত সুকুর মূলত গরু পাচারকারী। ভারত থেকে গরু বাংলাদেশে পাচারের দায়িত্ব এতদিন তার কাছেই ছিল। বেশ কয়েকজন শ্রমিককে নিজের তত্ত্বাবধানে রেখে এই কাজ করত সে। বাংলাদেশের পুটখালির রিয়াজুল, কামাল, নাসির নামের তিন গরু পাচারকারীর সঙ্গে যাবতীয় শলা পরামর্শ করে এই কাজ চলতসে দীর্ঘদিন ধরে। এদিকে দীর্ঘদিন পাচারের কাজে শ্রমিক নিয়েও তাদের পাওনা মেটাচ্ছিল না কামাল, নাসিররা। সেই লক্ষাধিক টাকা হাতে না পেলে কারবার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সুকুর। এদিকে গরু পাচার রুখতে দুই দেশের সীমান্তে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হতেই অন্তরালে চলে যায় সে। শুধু ব্যবসার হালচাল জানতে মাঝেমধ্যে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে আসত সুকুর। মুর্শিদাবাদে বোনের বাড়িতে থেকে স্থানীয় পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করত।
এদিকে নাসির, কামালদের কাছে সে শ্রমিকদের পাওনা মেটানোর কথা বলে। তখন ওই দু’জন তাঁকে ৪৯১টি দু’হাজার টাকার জালনোট দিয়ে মালদহের দুই পাচকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে। এই দুই পাচারকারী হল কামরান ও আখতার। তাদের বাড়ি মালদহের কালিয়াচকে। বলা হয়, সুকুরের সঙ্গে নেওয়া জাল নোট মালদহের ওই দু’জনের হাতে তুলে দিতে পারলেই তার কর্মীদের বেতন মিটিয়ে দেওয়া হবে। এই বলে শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ সুকুরকে বিজিবি-র নজর এড়িয়ে আংরাইল সীমান্ত পারাপারের ব্যাবস্থা করে দেয় পুটখালির রিয়াজুল, কামাল, নাসির। বিজিবির চোখকে ফাঁকি দিলেও বিএসএফের নজরে পড়ে যায় সুকুর আলি। ফাঁস হয়ে যায় জালনোট সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য,এসব ঘটনা পুলিশ কে জেরায় জানিয়েছে সুকুর। এক সাথে পাচারকারী এবং ডাকাত ধরে গাইঘাটা থানার পুলিশ প্রশাসন কালীপুজোর প্রাককালে সাধারন মানুষের বিশেষ নজর কেড়েছে৷