দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গত বছর ১৫ জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনার সঙ্গে চিনা সেনার সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় জওয়ান শহিদ হন। তারপরেই ভারতের তরফে দাবি করা হয় এই সংঘর্ষে বেশ কিছু চিনা সেনারও মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এতদিন ধরে সেই কথা অস্বীকার করে আসছিল চিন। অবশেষে এতদিনে তারা স্বীকার করল সেদিনের সংঘর্ষে ৫ চিনা সেনা নিহত হয়েছিল। তাদের নামও প্রকাশ করেছে পিপলস লিবারেশন আর্মি।
চিনা সেনাবাহিনীর সংবাদপত্র পিএলএ ডেইলি সূত্রে খবর, কারাকোরাম পর্বতে মোতায়েন পাঁচ চিনা জওয়ান ভারতীয় সেনার হাতে নিহত হয়েছে বলেই জানিয়েছে পিপলস লিবারেশন আর্মি। দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া ওই সৈনিকদের শহিদের স্বীকৃতি দিয়েছে শি জিংপিং সরকার।
সংবাদসংস্থা গ্লোবাল টাইমস আবার ওই পাঁচ সৈনিকের নামও প্রকাশ করেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন জিনজিয়াং মিলিটারি কম্যান্ডের রেজিমেন্টাল কম্যান্ডার কুই ফাবাও। এছাড়া বাকিরা হলেন চেন জিয়াংগ্রং, শিয়াও শিয়ায়ুন, ওয়াং জুয়ারন ও চেন হংজুন। ফাবাওকে ‘হিরো রেজিমেন্টাল কম্যান্ডার’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। চেন হংজুনকে ‘হিরো টু ডিফেন্ড দ্য বর্ডারের’ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
গ্লোবাল টাইমস আরও জানিয়েছে, এই প্রথম নিহতদের কথা স্বীকার করলেও চিনের অভিযোগ, এই সংঘর্ষের জন্য ভারতই দায়ী। ভারতীয় সেনারা প্রথম হামলা করেছিল বলে অভিযোগ করেছে তারা।
অবশ্য নিহতের সংখ্যা নিয়ে এখনও বিতর্ক রয়েছে। সংঘর্ষের পরে ভারত জানিয়েছিল অন্তত ৩৫ চিনা সেনা নিহত হয়েছিল সেদিন। অন্যদিকে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম টিএএসএস জানিয়েছিল, ওই সংঘর্ষে ১০ থেকে ৪৫ চিনা সেনা নিহত হয়ে থাকতে পারে।
যদিও শিঙ্গুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ইন্সটিটিউটের ডিরেক্টর কিউয়ান ফেং গ্লোবাল টাইমসকে জানিয়েছেন, এতদিন ধরে বলা হচ্ছিল গালওয়ানের সংঘর্ষে ভারতের থেকে বেশি চিনা সেনার মৃত্যু হয়েছে। সেই জল্পনায় ইতি টানতেই এবার নিহত পাঁচ সেনার নাম প্রকাশ করেছে চিন।
অবশ্য কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, যুদ্ধে নিহত সেনার নাম প্রকাশ না করায় নিজের দেশেই সমালোচনার মুখে পড়ছিল শি জিংপিং সরকার। তাই এবার তারা চাপের মধ্যেই নতিস্বীকার করতে বাধ্য হল। যদিও নিহত সেনার সংখ্যা নিয়ে এখনও জল্পনা অব্যাহত।