দেশের সময়ওয়েবডেস্ক: ক্ষুদ্র–ছোট–মাঝারি শিল্পে মিলতে পারে ঋণ ছাড়। জিএসটি কর এবং ব্যক্তিগত আয়করের ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হতে পারে। বাজারে নগদের জোগান বাড়াতে ছোট–মাঝারি শিল্পগুলিকে আর্থিক সহায়তার দিকেই বেশি নজর দেবে মোদি সরকার। মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
মঙ্গলবার আত্মনির্ভর প্রকল্পের আওতায় ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার এই আর্থিক প্যাকেজ নিয়ে বিস্তারিত জানাবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেদিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ।
সুইস মাল্টিন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ইউবিএস বলছে, ছোট–মাঝারি শিল্পগুলিকে চাঙ্গা করে তুলতে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির সহায়তা দেওয়া হতে পারে। সেই খাতে একটা বড় পরিমাণ বরাদ্দ হতে পারে। পাশাপাশি উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত শিল্প সংস্থাগুলিকে দীর্ঘমেয়াদি কর ছাড়ের সুবিধা দেওয়া হতে পারে। শিল্প সংস্থাগুলোকে নগদের গ্যারান্টি দেওয়া হলে সরকারে দায়ভার অবশ্যই বাড়বে। কিন্তু সেক্ষেত্রে রাজকোষে খুব একটা ঘাটতি হবে না বলেই মনে করছে ইউবিএস। এর আগে চলতি বছরের বাজেটে ডিভিডেন্ট বন্টন করের ক্ষেত্রে প্রায় ৫০ হাজার কোটির ছাড় দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি কর্পোরেট করের ক্ষেত্রেও যে ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তার পরিমাণ প্রায় ১.৪৫ লক্ষ কোটি।
ইডেলওয়েস সিকিউরিটিসের দাবি, মূলত চারটি স্তরে আর্থিক প্যাকেজকে ভাগ করা হতে পারে। ক্ষুদ্র–ছোট–মাঝারি শিল্পসংস্থাগুলিকে ঋণ ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি জিএসটি কর এবং ব্যক্তিগত আয়করের ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হতে পারে। ক্ষুদ্র–ছোট–মাঝারি শিল্পসংস্থাগুলির পায়ের জমি শক্ত করতে নগদ গ্যারান্টির কথাও ভাবতে পারে সরকার। যা কিনা রাজস্ব ঘাটতির ক্ষেত্রে বড় চিন্তার কারণ হতে দাঁড়াতে পারে।
বন্ড বা শেয়ার বিক্রি করে, অথবা কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নিয়ে বাজারে টাকা ঢালার জন্য তৈরি হতে পারে স্পেশাল পারপস ভেহিকেল বা এসপিভি। এছাড়াও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে সরাসরি ঋণের সুবিধা মিলতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে রাজকোষে বিশেষ ঘাটতি তৈরি হবে না। বার্কলেইজের অর্থনীতিবিদ রাহুল বাজোরিয়া বলছেন, ‘কেন্দ্রে যখন এতবার আত্মনির্ভর হওয়ার কথা বলছে, সেক্ষেত্রে দেশীয় উৎপাদনের দিকে বেশি নজর দেওয়া হবে নিশ্চয়ই।
তবে বিগত বছরগুলিতে বেশ কয়েকবার অন্তঃশুল্ক বাড়িয়েছে মোদি সরকার। এবার হয়ত শুল্ক কাঠামো নতুন করে তৈরি হতে পারে। তাতে সুবিধে পাবে উৎপাদনমূলক শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলি।’ ডেলয়েট ইন্ডিয়ার অরিন্দম গুহ বলছেন, ‘যে সংস্থাগুলো দেশীয় পণ্য তৈরি করে, তাদের বিশেষ ছাড় মিলতে পারে। যদি তাই হয়, সেক্ষেত্রে ওই সংস্থাগুলিতে কর্মী নিয়োগও বাড়তে পারে।’
২০ লক্ষ কোটির আর্থিক প্যাকেজ কোন খাতে কত, আজ বিকেল ৪টেয় বিস্তারিত জানাবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন
করোনা যুদ্ধে দেশের মানুষের জন্য ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গতকাল, মঙ্গলবার রাতেই জাতির উদ্দেশে ভাষণে এই ঘোষণা করেন তিনি। সেই প্যাকেজের কতটা অংশ কোন খাতে ব্যয় হবে, কোন কোন ক্ষেত্রের কত সংখ্যাক মানুষ কেমন করে লাভবান হবেন, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। আজ, বুধবারই বিকেল ৪টের সময়ে সাংবাদিক বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল এই প্যাকেজ ঘোষণা করার সময়ে বলেছিলেন, আত্মনির্ভর ভারতকে অনেকটা এগিয়ে দেবে এই আর্থিক প্যাকেজ। দেশের জিডিপির ১০ শতাংশের আর্থিক অঙ্কের সমান এই প্যাকেজের অঙ্ক। যদিও এই ২০ লক্ষ কোটির প্যাকেজ পুরোটাই নতুন নয়, এর মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এর আগে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) সহায়তায় এবং করোনা ভাইরাস জনিত আর্থিক পরিস্থিতির মোকাবিলায় ঘোষিত ১.৭৪ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজটিও।
মোদী দাবি করেছেন, দেশের কৃষিজীবী সম্প্রদায়, মধ্যবিত্ত শ্রেণি, শ্রমিককুল– এই সমস্ত মানুষের জন্য এই প্যাকেজ। সকলকে নিয়ে চলতে হবে। এই সঙ্কটে যে গরিব মানুষরা কষ্ট করেছেন, তাঁদের কষ্ট লাঘব করতেই এই প্যাকেজ বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এবার সে প্যাকেজ কেমন করে কোথায় কতটা ভাগ হবে, সেটিই জানাবেন অর্থমন্ত্রী। তিনি টুইটও করেন এ বিষয়ে। লেখেন, এই প্যাকেজ সারা দেশের সংস্কারে আলো জ্বালাবে, মানসিক স্বস্তি দেবে মানুষকে।
Human centred globalisation is being discussed. Vasudaiva Kutumbakam is the spirit. In our culture, we treat the earth as the mother. So when we speak of #selfreliance we talk of well being for all, says @PMOIndia @narendramodi
— Nirmala Sitharaman (@nsitharaman) May 12, 2020