দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কেউ দেখে শেখে, কেউ ঠেকে শেখে। কিন্তু, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন সিপিআইএম যখন শিখল তখন গঙ্গা দিয়ে জল অনেকদূর গড়িয়ে গিয়েছে। ভোট শতাংশ এসে ঠেকেছে মাত্র ৭। তাই বামেদের এই বিলম্বিত বোধদয় কতদূর কাজে আসবে তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। অচলায়তন ভেঙে এবার মানুষের মধ্যে মিশে যাওয়ার প্রবল চেষ্টা করছে বামেরা। তাই একঝাঁক তরুণ মুখকে নির্বাচনের ময়দানে এগিয়ে দেওয়ার পর, পার্টি ইস্তেহারেও চমক আনল আলিমুদ্দিন।
সম্প্রতি ৩১ নম্বর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের দফতর থেকে প্রকাশিত হয়েছে নির্বাচনী ইস্তেহার। আধুনিকতাকে হাতিয়ার করে এবারের ইস্তেহার সম্পূর্ণই ডিজিটাল। আগামী কর্মসূচি কী হবে তার জন্য সাধারণ মানুষের মতামত চাইছেন তারা। খসড়া ইস্তেহার প্রকাশ করে ভোটারদের কাছেই মূল্যায়ণের জন্য ছেড়ে দিয়েছে সিপিআইএম । কোথাও কোনও খামতি থাকলে, কোনও বিষয় পছন্দ না হলে সরাসরি জানাতে পারবে রাজ্যবাসী। cpimwb.org.in-এই ওয়েবসাইটে ক্লিক করে দেখা যাবে ইস্তেহার। সেখানেই নিজেদের মতামত ব্যক্ত করতে পারবেন ভোটাররা। রয়েছে যোগাযোগের টেলিফোন নম্বর ও মেইল আইডি। আগামী ২০ মার্চ পর্যন্ত এই মতামত দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের সব গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মানুষের প্রতি আমাদের আবেদন, আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত আমাদের জানান। আমরা মানুষের মত নিয়েই আগামী সরকারের কর্মসূচি ঘোষণা করব।’ জানা গিয়েছে, এই খসড়া কংগ্রেস এবং আইএসএফ নেতৃত্বের কাছে ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে।
কী রয়েছে সিপিআইএম -এর ইস্তেহারে?
যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি চর্চিত হচ্ছে, তা হল পরিযায়ী শ্রমিকের জন্য পৃথক দফতর। শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি দিনে ৪০০ টাকার বদলে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা। যা মাসে দাঁড়ায় ২১ হাজার টাকা। বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের মাসে আড়াই হাজার টাকা ভাতা ও সস্তায় রেশন দেওয়া হবে। বিশেষ নজর দেওয়া হবে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের উপর। এছড়াও সিপিআইএম জানিয়েছে, সংযুক্ত মোর্চার সরকার তৈরি হলে ১০০ দিনের কাজ বাড়িয়ে ১৫০ দিন করা হবে। শিল্প-কারখানা, কর্মসংস্থানের উপরও বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ সুনিশ্চিত করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। কৃষকদের ফসলের ন্যয্য মজুরীর পাশপাশি সমকাজে সম বেতনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ইস্তেহারে রয়েছে, নারী নির্যাতন, গার্হস্থ্য হিংসা প্রতিরোধে শহরে ওয়ার্ড বা বোরোতে এবং গ্রামবাংলায় ব্লক স্তরে বিশেষ সহায়তা কেন্দ্র গড়ে তোলার কর্মসূচি। রয়েছে তৃতীয়লিঙ্গের মানুষদের জন্য প্রয়োজনীয় যথোপযুক্ত ব্যবস্থা।
তবে সিপিআইএম -এর এই বিলম্বিত বোধদয় তাদের নির্বাচনী লড়াইয়ের ময়দানে ঠিক কোথায় গিয়ে দাঁড় করায় সেটাই এখন দেখার।