অশোক মজুমদার
তবে কি কলকাতার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের সংযোগস্থাপনকারী সেতু হিসেবে “মা” উড়ালপুল ইতিহাসে জায়গা করে নিলো ?
“মা” উড়ালপুলের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের এই বিজ্ঞাপনী ছবিটা একটু আগে দেখলাম। যদিও আমার আগে দেখছি গোটা ভারত জেনে গেছে। রীতিমতো হইচইও চলছে। আমি রবিবাসরীয় মেজাজে সবার শেষে বোধয় জানলাম!!
তবে যে যাই বলুক, আমি বেশ মজা পেয়েছি উত্তরপ্রদেশের হৃদয়সম্রাটের এহেন কীর্তিতে। উনি ভালোই করেছেন, বাংলার উন্নয়নকে ইউপির বলে পাতাজোড়া বিজ্ঞাপন দিয়ে। বাংলার এই উন্নয়নকে যোগীজি এরকম রাজকীয়ভাবে স্বীকার করলেন। ধন্যবাদ জানানোর মত ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা।
দেখলেন তো অযথা অকথা কুকথায় পেট ভরেনা। যাঁকে এতো অসম্মান, অপমানিত করেছেন এতোদিন, আজ তাঁর কীর্তি দিয়েই তো সেই নিজেকে মহিমান্বিত করলেন !! অনেকটা ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসের মত হলো ব্যাপারটা।
যোগীজি, আপনি ভোটের প্রচার বেশিরভাগটাই উত্তরবঙ্গে করলেও সভায় আসা লোকের মাথা কোনোদিন একশোর গন্ডি পেরোতো না। মনে আছে নিশ্চয়? সত্যি বলছি, তখন খুব মজা লাগতো। কিন্তু এবার এক কাজ করুন। রাজ্যজুড়ে হেলিকপ্টারে করে ঘুরে ঘুরে ছবি তুলুন। এটার জন্য সরাসরি তৃণমূলের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। এই সরকারের আমলে বিগত দশ বছরে এরকম অনেক কিছু হয়েছে পাহাড় থেকে জঙ্গলমহলে। অযথা ফটোশপের কি প্রয়োজন!!
এতে ভারতজুড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে কিকি হয়েছে আপনার মাধ্যমে সবাই জানতে পারবে। আমরা খুব খুশি হবো। ভেবে দেখার অনুরোধ রইলো।
তবে যোগীজির কীর্তিকেও ছাপিয়ে গেলো সংশ্লিষ্ট সংবাদসংস্থাটি। তারা ভুলের দায় স্বীকার করে দেশকে বোঝালো….”বিজ্ঞাপনের দায় বিজ্ঞাপনদাতার না হয়ে সংবাদপত্রের হয়”….নিজে ত্রিশ পঁয়ত্রিশ বছর সাংবাদিকতা করার পর এটা কিন্তু জীবনে প্রথম জানলাম। বিজ্ঞাপনী পলিসি আজকাল ভণ্ডামির মুখোশ উন্মোচন করতে নয়, মুখ ঢাকতে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাঃ আচ্ছে দিন বটে!!
কিন্তু এই ঘটনায় আবার বামেরা দেখছি খুব দুঃখ পেয়ে বসে আছে। আচ্ছা ঠিক আছে, ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন বাম সরকারই এটার শিল্যান্যাস করেছিলো। কে অস্বীকার করছে সেটা। কিন্তু একবছরের মধ্যেই তো গদি উল্টিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসেন। ২০১৫ তে কাজ শেষ হয়। কৃতিত্বের জন্য হামলে পড়ছেন আজ!! আজব কেলেঙ্কারি।
যাইহোক, রীতিমতো “মা” নিয়ে টানাটানি চলছে। সব মিলিয়ে আজ বলতে ইচ্ছে করছে, “কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়।”