এনআরসিকে হাতিয়ার করে জাল নথি তৈরির চক্রের মূলপান্ডা ধৃত মছলন্দপুরে

0
578

দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ বড় সাফল্য এল উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙা থানার পুলিশ হাতে। ওড়িশা পুলিশের সঙ্গে একযোগে আচমকা হানা দিয়ে জাল নথি তৈরির যন্ত্রপাতি-সমেত এই চক্রের এক পাণ্ডাকে তারা গ্রেফতার করল। ধৃতের নাম শুভ বিশ্বাস। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মছলন্দপুর এলাকায় একটি বাড়িতে হানা দিয়ে সোমবার রাতে বিভিন্ন যন্ত্র ও একাধিক ছবি সহ তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে।

তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ধৃত শুভ বিশ্বাসের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশিরাই। তাদের থেকে টাকা আদায় করাও সুবিধাজনক বলে তার মনে হয়েছিল। জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পরে সে জাঁকিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিল। তবে এদিন ওড়িশায় হওয়া একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নকল ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড তো বটেই ড্রাইভিং লাইসেন্সও সে তৈরি করত। তবে পুলিশ সবচেয়ে অবাক হয়েছে তার কাছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শংসাপত্রের কাগজের নমুনা পেয়ে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্রভৃতি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান আলাদা রকমের কাগজ ব্যবহার করে শংসাপত্র ও মার্কশিট তৈরির ক্ষেত্রে। ওই ব্যক্তি কী ভাবে সেই সব কাগজ পেল তা ভাবাচ্ছে পুলিশকে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, হয় ওই সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত কোনও ব্যক্তি তাকে কাগজগুলি দিয়েছে নতুবা তারাই বলে দিয়েছে ওই কাগজ কোথা থেকে পাওয়া সম্ভব। সাধারণ ভাবে এই ধরনের কাগজ বাজারে বিক্রি হয় না।

বেশ কিছুদিন ধরেই পুলিশের কাছে অভিযোগ আসছিল, মছলন্দপুর এলাকায় কোনও বাড়িতে জাল ভোটার কার্ড তৈরি করা হয়। ওড়িশা থেকেও একই অভিযোগ আসায় পুলিশের সন্দেহ গিয়ে পড়ে শুভ বিশ্বাসের উপরে। ২০১৭ সালে একই অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। তখন সে মাস দুয়েক জেল খেটেছিল। ছাড়া পাওয়ার পর থেকে সে বেশ কিছুদিন চুপচাপ ছিল। এখন এআরসি নিয়ে হইচই শুরু হতেই সে ফের জালিয়াতির পুরনো ব্যবসা শুরু করে দেয়। শুভর ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েই পুলিশ তার বাড়িতে হানা দিয়েছিল।

ধৃতের কাছে ছাপানো অবস্থায় কোনও জাল নথি পাওয়া যায়নি তবে তার কাছ থেকে বেশ কয়েকটি ছবি, কম্পিউটার, স্ক্যানার, ল্যামিনেশন মেশিন ও নানা ধরনের কাগজ উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ জানতে পেরেছে, বিভিন্ন দালাল তার কাছে লোক নিয়ে আসত জাল নথি তৈরি করানোর জন্য। নথিপিছু দশ হাজার টাকা থেকে বিশ হাজার টাকা নিত শুভ বিশ্বাস। বিনিময়ে সে যে জাল নথি বানিয়ে দিত তা আসলের পাশে রাখলে পার্থক্য করা মুশকিল হত। এই সব নথি যতই নিখুঁত হোক তা অবশ্য ধরা পড়ে যায় যাচাই করার সময়। পুলিশ মনে করছে যে কোনও ব্যক্তির পক্ষে একক ভাবে এই কাজ করা মুশকিল। এর সঙ্গে অবশ্যই অন্য লোকজন জড়িত আছে।

ধৃতকে ট্রানজিট রিমান্ডে নেওয়ার জন্য বারাসত আদালতে আবেদন করে ওড়িশা পুলিশ। তার পাঁচ দিনের ট্রানজিট রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

Previous articleনিজের জেলাতেই নিয়োগ শিক্ষকদের,ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
Next articleগ্রেপ্তার জেএনইউয়ের গবেষক সারজিল ও তাঁর ভাই

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here