দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দীর্ঘ অপেক্ষার পর গতকাল শনিবার সর্বভারতীয় সংগঠনের নতুন কমিটি ঘোষণা করেছেন বিজেপি সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা।
কিন্তু বাস্তব হল, শুধু সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে অপেক্ষা ছিল না। অপেক্ষা রয়েছে মন্ত্রিসভার রদবদলেরও। সূত্রের মতে, সংসদের শীত অধিবেশনের আগে সেই রদবদলের কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবং প্রস্তাবিত সেই রদবদলে বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেতে পারে অন্তত দুটি নতুন মুখ। এমন দুই মুখের রাজনৈতিক মর্যাদা বাড়বে যাঁদের উত্তরণ একুশের ভোটকে প্রভাবিত করতে পারে।
এখানে বলে রাখা ভাল, মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ধরনের গোপনীয়তা বজায় রাখেন, নরেন্দ্র মোদীও সেই তুলনায় কম নয়। কিন্তু ঠিক যেমন বাংলায় মন্ত্রিসভার রদবদলের আগে কিছু ইঙ্গিত পাওয়াই যায় বা তেমনই কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে দিল্লির অলিন্দ থেকে। তা ছাড়া কিছু বিষয় অনিবার্য ভাবেই ঘটতে চলেছে। যেমন, মধ্যপ্রদেশের সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কেন্দ্রে মন্ত্রী হতে চলেছেন।
সে যাক। বাংলায় মোটামুটি ভাবে তিন জনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা রয়েছে দিল্লিতে।
কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক, বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর এবং পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। এর নেপথ্যে রাজনৈতিক অঙ্কও রয়েছে। নিশীথ উত্তরবঙ্গে রাজবংশী নেতা। শান্তনু মতুয়া সমাজের প্রতিনিধি। এবং পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলের সাংসদ। তা ছাড়া আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা এবং ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রমের নামও দিল্লির আলোচনায় রয়েছে বলে খবর।
বলাবাহুল্য একুশের ভোটে তথা বিধানসভা নির্বাচনে এই তিন সমাজের ভোটের উপর বিজেপির বিপুল নির্ভরতা রয়েছে। লোকসভা ভোটে এদের বিপুল সমর্থন গেরুয়া দল পেয়েছিল। তার পুনরাবৃত্তি একুশেও নিশ্চিত করতে চাইছেন বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এক জন রাজবংশী নেতা বা মতুয়া প্রতিনিধি যদি কেন্দ্রে মন্ত্রী হন তা হলে তা তাঁর অনুগামী সমর্থকদের কাছে কম গর্বের হবে না বলে মনে করেন বিজেপি শীর্ষ নেতারা।
আরও একটি বিষয় এখানে তাৎপর্যপূর্ণ। উনিশের ভোটে বাংলা থেকে বিজেপি ১৮ টি আসন জেতার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারাই ঘরোয়া আলোচনায় জানাচ্ছিলেন অন্তত চারজনকে মন্ত্রী করা হতে পারে। কিন্তু দু’জন বাদ দিয়ে বাকিরা সবাই যে হেতু প্রথমবার সাংসদ সম্ভবত সেই কারণেই কেবল বাবুল সুপ্রিয় ও দেবশ্রী চৌধুরীকে মন্ত্রী করা হয়েছিল। বাকিদের সংসদ, দিল্লির অলিন্দ সম্পর্কে পরিচিত হওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে।
ভাল করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, সাংসদদের অনেকেই রাজ্য সংগঠনে স্থান পেয়েছেন। সৌমিত্র খাঁকে ফ্রন্টাল অর্গানাইজেশনের সভাপতি করা হয়েছে। লকেট চট্টোপাধ্যায়, খগেন মুর্মু, অর্জুন সিংরাও কিছু না কিছু দায়িত্ব পেয়েছেন। রাজু বিস্টকে সর্বভারতীয় মুখপাত্র করা হয়েছে। তার পর এ বার সম্ভবত, নিশীথ, শান্তনু বা জ্যোতির্ময়দের ভাগ্যে শিঁকে ছেড়ার পালা।