দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ তিন’দিন আগেই কয়েক ট্রাক ইলিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু ভারত পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় তীব্র সংকটে পড়ে গিয়েছে প্রতিবেশী দেশটি। ইলিশ পাঠালেও পেঁয়াজ না পাওয়ায় অভিমান হয়েছে ঢাকার। নয়াদিল্লির দিকে এ নিয়ে ‘অলিখিত সমঝোতা ভঙ্গের’ অনুযোগের আঙুলও তুলেছে বাংলাদেশ।
রান্না পুজো ছিল বুধবার। রীতি অনুযায়ী রান্না পুজোয় এক টুকরো হলেও ইলিশ লাগে! বাজারে যখন ইলিশের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে সেই সময়ে সোমবার গভীর রাতে কয়েক ট্রাক ইলিশ পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ঢোকে পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু ভারতে ইলিশ দিলেও পেঁয়াজ পাচ্ছে না ঢাকা।
সোমবার ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেডের তরফে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোনও ধরনের পেঁয়াজ রফতানি করা যাবে না। প্রসঙ্গত ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড হল কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের একটি শাখা। তারা মূলত আমদানি, রফতানি বিষয় দেখভাল করে।
চাহিদার তুলনায় বাজারে যোগান কম পেঁয়াজের। উত্তর ভারত, পূর্ব ভারত, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতেও গত দেড় সপ্তাহ ধরে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই সব ধরনের পেঁয়াজ রফতানি করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নয়াদিল্লি। বলা হয়েছে, সাধরণ মানুষের নাগালের বাইরে যাতে পেঁয়াজের দাম না যায় সে জন্যই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের আকাল দেখা দিয়েছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ হওয়ায় তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে বলে দাবি ঢাকার। বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি বলেছেন, ভারত অলিখিত সমঝোতা ভঙ্গ করেছে। তাঁর কথায়, “এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একবার জানানো উচিত ছিল।” দিল্লিস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনারও বিদেশমন্ত্রকের কাছে অনুরোধ করেছেন, যাতে পেঁয়াজ রফতানি সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য: প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে জরুরি পণ্য আমদানি-রফতানির বিষয়ে সবটা লিখিতপড়িত হয় না। পারস্পরিক বোঝাপড়া থেকেই এই প্রক্রিয়া চলে। ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার সরকারি ভাবে সিদ্ধান্ত নেয় তারা আর ইলিশ রফতানি করবে না। বাংলাদেশে যে ইলিশ পাওয়া যায় এবং তাদের যা অভ্যন্তরীণ চাহিদা তাতে উদ্বৃত্ত থাকে না। ঢাকার বক্তব্য, এর পরেও ‘অলিখিত সমঝোতা’র শর্ত অনুযায়ী ভারতকে প্রতিবছর গড়ে দেড় হাজার টন ইলিশ পাঠায় তারা।
পেঁয়াজের সংকটে নাভিশ্বাস বাংলাদেশের মানুষের। দাম প্রায় আকাশ ছুঁয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ আর্জি জানিয়েছে, ভারত যাতে পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। এই মুহূর্তে ১০ হাজার টন পেঁয়াজ তাদের প্রয়োজন বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে ঢাকা।
ইলিশ পাওয়ার কৃতজ্ঞতা থেকে পেঁয়াজের বিষয়ে ঢাকার প্রতি দিল্লি কী মনোভাব নেয় সেটাই এখন দেখার।