দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ এপ্রিল মাসের ২১ তারিখে এ রাজ্যে কোভিডের দৈনিক সংক্রমণ পেরিয়েছিল ১০ হাজার। তার পরে থেকে আর তা কখনও নামেনি। বাড়তে বাড়তে পার করেছে ২০ হাজারের কোঠাও। গত কয়েক দিন কোভিডগ্রাফ একটানা নিম্নমুখী থাকার পরে, আজ মঙ্গলবার সংক্রমণ কমল ১০ হাজারের নীচে। একটানা ৪২ দিন পর।
স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৪২৪ জন। মারা গিয়েছেন ১৩৭ জন। পাশাপাশি এদিন সেরে উঠেছেন ১৭ হাজার ৭২২ জন। ফলে সুস্থতার হার পেরিয়েছে ৯৩ শতাংশের বেশি।
এদিন সংক্রমতিদের মধ্যে ২ হাজার ২৮ জন উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা। এর পরেই আছে কলকাতা। শহরে একদিনে নতুন করে আক্রান্ত ১ হাজার ৩২ জন। এর পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সংক্রমিত ৭৫৫ জন। হাওড়ায় একদিনে সংক্রমিত ৬৬১ জন। উত্তরবঙ্গেও করোনা গ্রাফ বেশ নিম্নমুখী।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ৩৫ জনই উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা। অর্থাৎ দৈনিক মৃত্যুর নিরিখেও প্রথম স্থানে ওই জেলা। এর পরেই কলকাতায় মারা গেছেন ৩২ জন। একদিনে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় করোনার বলি ১৩ জন। এদিন হাওড়ায় মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। ফলে এই মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে।
আরও একটি চিন্তার বিষয় হল, এদিনও প্রায় সব জেলা থেকেই মিলেছে নতুন সংক্রমিতের হদিস। ফলে রাজ্যের মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩ লক্ষ ৮৫ হাজার ৮০১। এখনও পর্যন্ত করোনায় রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৫ হাজার ৬৭৮।
এদিকে, করোনার প্রথম ঢেউয়ে ভাইরাসের সবচেয়ে বেশি বলি হয়েছিলেন বয়স্করা। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গিয়েছে বয়স্কদের মৃত্যুহার। তবে তাৎপর্যপূর্ণ হারে বেড়েছে কম বয়সিদের মৃত্যু। বলা ভালো, মাঝবয়সিদের মৃত্যুর নজির। চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতা, ৩১-৪৫ বছর বয়সিদের ভিড় লক্ষ্যণীয় হারে বাড়ছে আইসিইউ-গুলিতেও। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এর নেপথ্যে রয়েছে করোনার নয়া স্ট্রেনের চরিত্র, কমবয়সিদের বেপরোয়া জীবনযাত্রা, বয়স্কদের সাবধানী হয়ে যাওয়া এবং টিকাকরণের মতো বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টর। চিন্তা বেড়েছে, শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার নজির বেড়ে চলা নিয়েও।
করোনা মোকাবিলায় বাংলায় বিধিনিষেধে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। খুচরো দোকানে কিছুটা ছাড় দেওয়া হল। বেলা ১২টা থেকে ৩টে পর্যন্ত খুচরো দোকান খোলা থাকবে। তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কর্মী কাজ করতে পারবেন। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে একথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । কোনও নির্মাণ সংস্থা যদি নিজেদের কর্মীদের ভ্যাকসিন দিয়ে কাজ শুরু করতে চায়, তাদের ছাড় দেওয়া হবে। তবে দূরত্ববিধি মেনে চলতে হবে। আগামী ১৬ তারিখ পর্যন্ত জারি থাকবে বিধিনিষেধ। বাংলায় আপাতত বন্ধ থাকছে ট্রেন, বাস. মেট্রো পরিষেবা।