দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দম ফেলার সময় নেই সুব্রত বিশ্বাসের। একই অবস্থা স্ত্রী অর্চনার। হবে নাই বা কেন? বৃহস্পতিবার যে তাঁদের বাড়ি খেতে আসবেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একদিকে ঘরে নতুন রঙের পোচ পড়ছে, অন্যদিকে চলছে মেনু নিয়ে আলোচনা। অমিত শাহের জন্য ভালো নিরামিষ পদ রাঁধতে বদ্ধপরিকর অর্চনা।
একসময় জলপথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে এসেছিলেন সুব্রত বিশ্বাসের বাবা। নামখানায় একটুকরো জমিতে ঘর বানিয়েছিলেন। বাবা-মা আজ আর নেই। বাবার করে যাওয়া বাড়িতেই স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে থাকেন সুব্রত। সুব্রত বাজারে মাছ বিক্রি করেন। তাতে সংসার চলে না। স্ত্রী অর্চনা লোকের বাড়িতে তাই পরিচারিকার কাজ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার এই বিশ্বাস দম্পতির বাড়িতেই খেতে আসছেন অমিত শাহ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসবেন বলে কথা। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নিরাপত্তাকর্মীদের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে নামখানার নারায়ণপুরে সুব্রত বিশ্বাসের বাড়িতে। প্রসঙ্গত, অমিত শাহকে মধ্যাহ্নভোজন করানোর আবেদন জানিয়ে দিন সাতেক আগে বিশ্বাস পরবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন জেলা বিজেপির নেতারা। প্রস্তাব লুফে নেন সুব্রত-অর্চনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিরামিষ খান। সেই মতো ঘরোয়া নিরামিষ খাবারের আয়োজন করছেন তাঁরা। মেনুতে থাকতে পারে ভাত, ডাল, তরকারি, চাটনি, দই ও মিষ্টি।
বুধবার বিশ্বাস বাড়িতে চোখে পড়ল তুমুল ব্যস্ততার ছবি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বাড়ির দেওয়ালে পড়েছে নতুন রঙের পোচ। পরিষ্কার করা হচ্ছে সামনের রাস্তা। গৃহকর্তা সুব্রত বিশ্বাস বললেন, ‘আমরা ভীষণ খুশি, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের বাড়িতে আসছেন। তবে আমরা গরিব। বিশেষ কোনও খাবারের ব্যবস্থা করতে পারছি না। সামর্থ অনুযায়ী কয়েকটি নিরামিষ পদ আমার স্ত্রী রান্না করবেন। যদি সম্ভব হয় নিজেদের কিছু সমস্যার কথা তাঁকে জানাব।’ অর্চনা বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের মতো গরিব বাড়িতে এসে অমিত শাহ খাবেন, ভাবতেও অবাক লাগছে। আমরা যা খাই তাই ওঁকে খাওয়াব।’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলায় পরিবর্তন রথযাত্রার সূচনা করতে আসছেন অমিত শাহ। সেদিন নামখানার ইন্দিরা ময়দানে দলের একটি জনসভাও রয়েছে। জনসভা শেষে নারায়ণপুরে উদ্বাস্তু এই তফসিলি পরিবারের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারবেন তিনি। বিজেপির কলকাতা জোনের আহ্বায়ক দেবজিৎ সরকার বলেন, ‘আমরা সংকীর্ণ রাজনীতি করি না। তাই রাজনৈতিক পরিচয় না জেনেই নামখানার বিশ্বাস পরিবারে দুপুরে খাবেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।