দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ফের নোবেল পুরস্কার পেলেন বাঙালি। আবারও অর্থনীতিতে। সোমবার দুপুরে নোবেল কমিটি ঘোষণা করে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। এস্থার ডাফলো, মিকেল ক্রোমারের সঙ্গে নোবেল পেয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য নোবেলজয়ী এস্থার ডাফলো সম্পর্কে তাঁর স্ত্রী।
নোবেলজয়ী বাঙালির গর্ব অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিনুন ১০ তথ্যে
১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছিলেন অমর্ত্য সেন। তার পরে ফের এই সর্বোচ্চ সম্মান পেয়ে ইতিহাস গড়লেন তাঁরই ছাত্র অভিজিৎ। বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য দূরীকরণ নিয়ে গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবে নোবেল পেলেন অভিজিৎ-সহ তিন বিজ্ঞানী।
১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক হন অধ্যাপক বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৮৩ সালে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। ১৯৮৮ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন তিনি।
অর্থনীতিতে এবং অন্যান্য বিষয়ে নোবেল পুরস্কারের ১০টি তথ্য
● ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে প্রথম নোবেল পুরস্কার পান জ্যান টিনবারগেন ও ব়্যাগনার ফ্রিস। দেশের গতিশীল নকশা তৈরির জন্য এবং উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন অর্থনৈতিক পদ্ধতির বিশ্লেষণ করে এই পুরস্কার পান তাঁরা।
● ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয় ৫১বার। এখনও পর্যন্ত ৮৪ জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন অর্থনীতিতে অবদান রাখায়। ২৫ জন অর্থনীতিবিদকে এককভাবে এবং ১৯ বার যৌথ ভাবে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। ৭ বার তিন জন করে এই পুরস্কার পান।
● সবচেয়ে কম বয়সে অর্থনীতিতে নোবেল পান কেনেথ জে অ্যারো। ১৯৭২ সালে মাত্র ৫১ বছর বয়সে তিনি এই পুরস্কার পান। মার্কিন এই অর্থনীতিবিদ ছিলেন কল্যাণমূলক আধুনিক অর্থনীতির অন্যতম স্থপতি।
● ২০০৭ সালে ৯০ বছর বয়সে অর্থনীতিতে নোবেল পান রাশিয়ার অর্থনীতিবিদ লিওনিড হারউইকজ। তিনিই সবচেয়ে বয়স্ক অর্থনীতিবিদ, যিনি এই পুরস্কার পান।
● অর্থনীতিতে প্রথম ও একমাত্র নোবেলজয়ী মহিলা ছিলেন এলিনর অস্ট্রম। ২০০৯ সালে অর্থনৈতিক প্রশাসন গবেষণার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য যৌথভাবে অলিভার উইলিয়ামসানের সঙ্গে নোবেল পুরস্কার পান মার্কিন অর্থনীতিবিদ এলিনর অস্ট্রম। তাঁর পরে ফের মহিলা হিসেবে এই বার নোবেল পেলেন এস্থার ডাফেল।
● এখন পর্যন্ত অর্থনীতিতে মরণোত্তর নোবেল পাননি কেউ। মরণোত্তর নোবেল দেওয়ার বিষয়টি বাদ দিয়ে দেওয়া হয় ১৯৭৪ সালেই। তবে পুরস্কার ঘোষণার পরে কেউ মারা গেলে তাঁর পুরস্কার বহাল থাকবে বলে জানানো হয়। ১৯৭৪ সালের আগে মাত্র দু’বার মরণোত্তর নোবেল দেওয়া হয়েছিল। ১৯৬১ সালে শান্তিতে দাগ হ্যামারসোল্ড এবং ১৯৩১ সালে সাহিত্যে মরণোত্তর নোবেল পেয়েছিলেন এরিক অ্যালেক্স কালের্ফল্ডট।
● দুই ভাই নোবেল পেয়েছেন এমন ঘটনাও আছে ইতিহাসে। ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে প্রথম নোবেল পান জ্যান টিনবারগেন। এর চার বছর পর ১৯৭৩ সালে তাঁর ভাই নিকোলাস টিনবারগেন চিকিৎসাবিদ্যায় অবদানের জন্য নোবেল পুরস্কার পান।
● নোবেল লরিয়েট অর্থনীতিবিদের স্ত্রী-ও ফের নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, ইতিহাসে এমন ঘটনাও আছে। সুইডিশ অর্থনীতিবিদ গুনার মিরদাল ১৯৭৪ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পান। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ঘটনার পারস্পরিক নির্ভরতার তাৎপর্যপূর্ণ বিশ্লেষণ এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের তাৎপর্যপূর্ণ বিশ্লেষণের জন্য নোবেল পুরস্কার পান মিরদাল। পরে ১৯৮২ সালে তাঁর স্ত্রী আলভা মিরদাল-ও শান্তিতে নোবেল পান। তিনিই প্রথম নারী, যিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।
● প্রথম বাঙালি হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল পান অমর্ত্য সেন। ১৯৯৮ সালে দুর্ভিক্ষ, মানব উন্নয়ন তত্ত্ব, জনকল্যাণ অর্থনীতি ও গণদারিদ্র্যের অন্তর্নিহিত কার্যকারণ বিষয়ে গবেষণা এবং উদারনৈতিক রাজনীতিতে অবদান রাখার জন্য স্টকহোমে দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেসের এই পুরস্কার লাভ করেন ভারতীয় এই অর্থনীতিবিদ।
● অর্থনীতিতে গত বছর (২০১৮) নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দুই মার্কিন অর্থনীতিবিদ উইলিয়াম ডি নরডাস ও পল এম রোমার। জলবায়ু পরিবর্তনকে দীর্ঘ মেয়াদে ম্যাক্রো ইকোনমিকসের সঙ্গে মিলিয়ে বিশেষ বিশ্লেষণের স্বীকৃতি হিসেবে উইলিয়াম ডি নরডাসকে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আর পল এম রোমারকে এই পুরস্কার দেওয়া হয় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনকে দীর্ঘ মেয়াদে ম্যাক্রো ইকোনমিকসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্লেষণের স্বীকৃতি হিসেবে।