১৯৮৪-র শিখ দাঙ্গায় অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারকে,যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশ দিল্লি হাইকোর্টের

0
740

দেশেরসময় ওয়েবডেস্ক: বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তথা ১৯৮৪-র শিখ দাঙ্গায় অন্যতম অভিযুক্ত সজ্জন কুমারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল দিল্লি হাইকোর্ট। তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করা এবং জনগণের বিভিন্ন অংশের মধ্যে শ্ত্রুতার মনোভাব জাগিয়ে তোলা। এই তিনটি অপরাধে ২০১৩ সালে দিল্লির এক আদালত তাঁকে শিখ দাঙ্গার অভিযোগ থেকে রেহাই দেয়। সোমবার হাইকোর্টে উলটে গেল সেই রায়। তাঁকে বলা হয়েছে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে হবে। হাইকোর্টে সজ্জন কুমারের খালাসের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে সিবিআই। তাদের বক্তব্য ছিল, তিনি পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ইন্ধন দিয়েছিলেন। একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়কে শেষ করে ফেলাই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল। হাইকোর্ট গত বছর ২৯ মার্চ খোক্কর ও যাদব সহ ১১ জন অভিযুক্তকে নোটিশ পাঠায়। শিখ দাঙ্গার যে পাঁচটি মামলার নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছিল, তা ফের চালু হয়। অভিযুক্তদের বলা হয়, তাঁদের নামে ‘মানবতার বিরুদ্ধে ভয়ানক অপরাধ’ করার অভিযোগ আছে। সেই মামলাগুলি ফের চালু করা উচিত।

হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরলিধর এবং বিচারপতি আই এস মেহতার এক ডিভিশন বেঞ্চ সজ্জন কুমারকে ভারতীয় দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছে।২০১৩ সালে সজ্জন কুমার রেহাই পেলেও নিম্ন আদালত পাঁচ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। তাঁরা হলেন প্রাক্তন কাউন্সিলার বলবান খোক্কার, প্রাক্তন বিধায়ক মহেন্দ্র যাদব, কিষাণ খোক্কর, গিরিধারী লাল এবং ক্যাপটেন ভগমল।সজ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল এমনই,১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর সকালে সতবন্ত এবং বিয়ন্ত সিং নামে দুই শিখ দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তার পরে দিল্লি ও দেশের অন্যান্য স্থানে শুরু হয় শিখবিরোধী দাঙ্গা। অভিযোগ, ৩১ অক্টোবর রাতে কংগ্রেসের তৎকালীন সাংসদ সজ্জন কুমার এবং ট্রেড ইউনিয়ন নেতা ললিত মাকেন কংগ্রেস সমর্থকদের জড়ো করেন। তাদের মধ্যে বিতরণ করেন অস্ত্র এবং মদের বোতল। সেই সঙ্গে দেন ১০০ টাকার নোট। তাদের বলেন, শিখদের মারো। ইন্দিরা গান্ধী আমাদের মা। সেই মাকে ওরা হত্যা করেছে।

পরদিন সজ্জন কুমার ভাষণ দেন, যারা সাপের বাচ্চাদের মারতে পারবে, আমি তাদের পুরস্কার দেব। যারা রোশন সিং ও বাগ সিং-এর মতো লোককে মারতে পারবে, আমি তাদের পাঁচ হাজার টাকা করে দেব। যারা অন্যান্য শিখকে মারবে, তাদের দেব ১ হাজার টাকা করে। ৩ নভেম্বর আমার পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট জয়চাঁদ জমাদারের কাছে গেলেই পুরস্কারের টাকা পাওয়া যাবে।

সজ্জন কুমারের শাস্তির কথা শুনে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল টুইট করেছেন, হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানাই। যে নিরীহ মানুষজন খুন হয়েছিলেন, তাঁদের আত্মীয়স্বজনের দিনগুলি এতদিন খুব কষ্টে কেটেছে। দাঙ্গায় যেই যুক্ত হোক না কেন, তাদের ছাড়া পাওয়া উচিত নয়।শিরোমণি অকালি দলের মনজিন্দর সিং সিরসা বলেন, আদালত ন্যায়বিচার করেছে। সজ্জন কুমার আর জগদীশ টাইটলার যতদিন না মৃত্যুদণ্ড পাবে, ততদিন লড়াই চালিয়ে যাব।

Previous articleঘূর্ণিঝড় ‘ফেতাই’–এর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি, বাড়বে শীত
Next articleশিলিগুড়িতে হোটেলের খাবারে মৃত পচা মাছ দেওয়ার অভিযোগ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here