দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নতুন মোড় নিলো হাবড়ার জোড়া খুনের ঘটনা। পুলিশি তদন্তে উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। বুধবার ২৩শে সেপ্টেম্বর গভীর রাতে তল্লাশি চালিয়ে ওই দম্পতিকে খুনের অভিযোগে ওই প্রৌঢ়ের জামাই বান্টি সাধুখাঁ এবং তার গাড়িচালক বন্ধু অজয় দাসকে তাদের নিজেদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
চলতি মাসের ১৫ তারিখ রাত আড়াইটে নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার টুনিঘাটা লন্ডনপাড়া এলাকায় রহস্যজনকভাবে খুন হন প্রাক্তন সেনাকর্মী রামকৃষ্ণ মণ্ডল ও তার স্ত্রী লীলারানি মণ্ডল। মধ্যরাতে বাড়ির দরজার সামনে গুলি করে খুন করা হয় ওই দম্পতিকে। ঘটনার প্রায় আট দিন পর সম্পূর্ণ অন্যদিকে মোড় নিলো এই জোড়া খুনের তদন্ত। খুনের অভিযোগে ওই দম্পতির জামাই বান্টি এবং তার বন্ধু অজয় দাসকে গ্রেফতার করল হাবড়া থানার পুলিশ।
জোড়া খুনের তদন্তে নেমে পরিবারের লোকেদের অভিযোগ অনুসারে পুলিশ প্রাথমিকভাবে কাশিপুর কলতলা এলাকার বাসিন্দা এক যুবককে গ্রেফতার করেন। ধৃত যুবকের নাম তন্ময় বর। আদালতে তোলা হলে অভিযুক্তের ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। কিন্তু পুলিশি জেরায় খুনের ঘটনার কথা একবারের জন্যও স্বীকার করেননি তন্ময়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ক্রমশ বুঝতে পারে তন্ময় নিরপরাধ। এরপরেই পুলিশের নজর ঘুরে যায় পরিবারের অন্যদের দিকে।
আপাতভাবে ঐ স্থানীয় যুবককে গ্রেফতার করা হলেও মণ্ডল পরিবারের অন্যান্যদের প্রতিও কড়া নজরদারি ছিলো পুলিশের। শেষমেশ তাতেই এল সাফল্য। ঘটনার আট দিন পর খুনের অভিযোগে মৃত দম্পতির জামাই ও তার এক বন্ধুকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবার রাতে হাবড়ায় নিজেদের বাড়ি থেকেই ধরা পড়ে এই দুই অভিযুক্ত। ধৃত অজয়ের বাড়িতে তার খাটের তলা থেকে একটি বন্দুকও উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশসূত্রে জানা গেছে। তবে এটি খুনে ব্যবহৃত বন্দুক কিনা, তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারেনি হাবড়া থানার পুলিশ।
পুলিশসূত্রে জানা গেছে, পেশায় গাড়িচালক অজয়ের সঙ্গে প্রায় বছর তিনেক ধরে পরিচয় ছিল বান্টির। ইদানীং তারা একসঙ্গে ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করত। তদন্তকারী অফিসারেরা খোঁজখবর চালিয়ে জানতে পেরেছেন বাজারে কয়েক লক্ষ টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল বান্টির। সেই টাকা শোধ করার জন্য শ্বশুর- শাশুড়ির উপর জমি বিক্রির চাপ সৃষ্টি করছিল বান্টি।
জমি বিক্রি করে বা অন্যভাবে জামাইকে টাকা দিতে রাজি না হওয়াতেই প্রৌঢ় শ্বশুর শাশুড়িকে খুন করার ছক কষে সে। এই কাজে বন্ধু অজয়কে সহযোগী হিসেবে নেয় সে। কাজ হাসিল হলে অজয়কে মোটা টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল বান্টি, এমনটাই জানা গেছে প্রাথমিক তদন্তে।
এদিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে তার স্বামীর বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি ওই মৃত দম্পতির মেয়ে। তিনি কিছু জানতেন না বলেই দাবি করেন। বুধবার ২৩ তারিখ রাতে বান্টিকে তার জয়গাছি এলাকার বাড়ি থেকে ও অজয়কে দক্ষিণ হাবড়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে হাবড়া থানার পুলিশ অফিসারেরা।
১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত চেয়ে বৃহস্পতিবার তাদের তোলা হল বারাসত আদালতে।অপরাধীর কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তির দাবি মণ্ডল পরিবারের।