দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কাশ্মীরে পাক গোলায় শহিদ হয়েছিলেন নদিয়ার তেহট্টের বাসিন্দা সুবোধ ঘোষ। গতকাল রাত ১১টার পর তাঁর দেহ এসে পৌঁছয় গ্রামের বাড়িতে। রঘুনাথপুরে গত রাতে যখন সেনার ট্রাক ঢুকছে, ঘরের ছেলেকে তখন চোখের জলে শেষ বিদায় জানাতে উপচে পড়েছে বাসিন্দাদের ভিড়। দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন তিনি। গর্ব হচ্ছে সকলের। তবে এত অল্প বয়সে সুবোধের শহিদ হওয়ার ব্যাপারটাও মানতে পারছেন না কেউ।
সকাল থেকেই প্রস্তুতি ছিল রঘুনাথপুরে। শহিদ সুবোধ ঘোষকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তৈরি ছিল তাঁর এলাকা। যে স্কুলে তিনি পড়াশোনা করেছেন সেই নিমতলা বিদ্যানিকেতনের ফুটবল খেলার মাঠে অস্থায়ী মঞ্চ বাঁধা হয়েছিল। সেখানেই ফুল, মালা, প্রদীপ দিয়ে এলাকার বাসিন্দারা শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সুবোধকে। ওই মাঠেই শহিদ জওয়ানকে গান স্যালুট দেওয়া হয়েছে। কফিন বন্দি সুবোধকে দেখে চোখের জল বাঁধ মানেনি কারওরই। ‘ভারত মাতা কি জয়’, ‘সুবোধ ঘোষ অমর রহে’ স্লোগানের মাঝেই কফিনের উপর কান্নায় ভেঙে পড়েন সুবোধের স্ত্রী। চোখের জলে ছেলেকে শেষ বিদায় জানান পরিবারের বাকিরাও। শহিদ সুবোধ ঘোষের বাবার কথায়, “ছেলে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে। গর্ব হচ্ছে ঠিকই। তবে সন্তান চলে যাওয়াটাও বড় যন্ত্রণার। কত কষ্ট করে ওকে বড় করেছি। চাকরি পেয়ে সব দায়িত্ব একার কাঁধে নিয়েছিল। ছেলেটাকে আর দেখতে পাব না।”
উল্লেখ্য, গতকাল অর্থাৎ রবিবার বিকেলে চণ্ডীগড় থেকে বিশেষ বিমানে বিকেল চারটে নাগাদ পানাগড়ে এসে পৌঁছয় জওয়ান সুবোধ ঘোষের কফিনন্দি দেহ। সেখান থেকে সড়কপথে তাঁর দেহ নিয়ে নদিয়ার রঘুনাথপুরের দিকে রওনা দেয় সেনাবাহিনী। পানাগড়ে শহিদ জওয়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানান ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বায়ুসেনার অফিসাররা। অনুষ্ঠানে ছিলেন দুর্গাপুর ডিভিশনের পুলিস কর্তারাও। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার সুখেশ জৈন, ডিসি অভিষেক গুপ্তা, কাঁকসার এসিপি-সহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন শহিদ জওয়ানকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। উপস্থিত ছিলেন সাংসদ অর্জুন সিং।
রঘুনাথপুরে শহিদ জওয়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির ছিলেন রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার এবং কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র।