দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিজেপিতে যোগ দিয়েই বারবার শুভেন্দু অধিকারী বলেচলেছেন, বাংলাকে বাঁচাতে হলে মোদীর হাতে তুলে দিতেই হবে। অন্যথা হল না সোমবারের গড়বেতার সভাতেও। এদিন ফের শুভেন্দু বললেন, ‘বাংলায় আর দিল্লিতে এক সরকার চাই। বাংলাকে মোদীর হাতে না তুলে দিলে কোনও উন্নয়ন হবে না। বিরোধীরা মিথ্যে প্রচার করেও বিজেপির কোনও ক্ষতি করতে পারবে না।’
এদিন সর্বভারতীয় স্তরেও বিজেপির অপ্রতিদ্বন্ধী বোঝাতে শুভেন্দু টেনে এনেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, ‘হাথরস নিয়ে কত চক্রান্ত। অথচ সন্ন্যাসী যোগীজি ঠিক মানুষের সমর্থন পেলেন। উপনির্বাচনেও জিতেছে বিজেপি। রাজস্থান কংগ্রেসের সরকার, অথচ ওখানে স্থানীয় নির্বাচনে আমরা জিতেছি। কৃষকদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। কিন্তু কোনও লাভ হবে না। বিজেপিকে মানুষ মনে জায়গা দিয়ে রেখেছে।’
তৃণমূল এখন তাঁকে নিশানা করতেই হিমশিম খাচ্ছে, এই দাবিও বারবার করছেন শুভেন্দুও। এদিনও বলেন, ‘এক দিনে ২টো সভা করছি। তাতেও যা ভিড় হয়, আর তৃণমূলের সভায় কত ভিড় হয়! ২০১১ পর্যন্ত কারও শহিদ বেদিতে মালা দেওয়ার সময় হয়নি। আজ যাঁরা কোটি-কোটি টাকার মালিক, তাঁদের সেই সময় আমিই অক্সিজেন দিয়েছিলাম।’
এদিন ছোট আঙারিয়া দিবস উপলক্ষ্যে গড়বেতায় সভা করতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। মঞ্চের সামনে বানানো হয়েছিল শহিদ বেদি। শ্রদ্ধা জানান শুভেন্দু-সহ বিজেপির নেতা-কর্মীরা। উল্লেখ্য, ২০০১ সালের পর থেকে এতদিন শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে শুধুমাত্র তৃণমূলই এই অনুষ্ঠান আয়োজন করত। এদিন শুভেন্দু অধিকারীর সভা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরেই সভা করেন রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইয়া।
এদিন সভামঞ্চ থেকে শুভেন্দু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘লোকসভায় ভোটে হাফ, আর বিধানসভায় তৃণমূল সাফ। সবুজ সাথীর সাইকেলেও কাটমানি নেয় তৃণমূল। আর আমার নামে বলছে, আমার সঙ্গে বিজেপির ডিল হয়েছে। হ্যাঁ, ডিল হয়েছে। বাংলাকে উন্নয়নের ডিল হয়েছে। মোদীজি’কে তুইতোকারি, নাড্ডাকে বলা হচ্ছে গাড্ডা-ফাড্ডা। এই সংস্কৃতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে। তোলাবাজ ভাইপো সবকিছুতেই কমিশন নেয়। সেটা বন্ধ করে দিতে হবে।’
উল্লেখ্য, রবিবার দুপুরে গোপীবল্লভপুর ২ ব্লকের মহাপালে বিজেপির যোগদান মেলায় উপস্থিত হয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেও শুভেন্দু বলেন,’ঝাড়গ্রামে গরিব মানুষগুলোর ছোট ছোট ঘর দেখতে পাবেন। আর অঞ্চলের পাকা বাড়ি কার হয়েছে? পঞ্চায়েতবাবুদের। আইসিডিএসের হেল্পারের চাকরিটাও নিজের আত্মীয়ের বাইরে কাউকে দেননি। সব নিজের ঘরের মধ্যে রেখে দিয়েছেন। চার-পাঁচ হাজার টাকার চুক্তি ভিত্তিক কাজেও ৫-৭ লাখ টাকা তাঁকে দিতে হয়েছে।’ ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সুব্রত সাহা বলেন,’বিজেপির প্রচারে আসার জন্য উনি এরকম ভুলভাল বকছেন। বাংলার মানুষ জানে তৃণমূল কতটা কাজ করেছে। সেই উন্নয়নকে ভয় পাচ্ছেন।’ এদিন ঝাড়গ্রাম শহরের তৃণমূলের ওয়ার্ড কনভেনর রথীন মণ্ডল, বহিষ্কৃত টিএমসিপি নেতা রঞ্জন মাহাতোরা বিজেপিতে যোগ দেন।