দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ২০১১ সালে আলকায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে মারার পরে তাঁর দেহ সমুদ্রের জলে ফেলে দিয়েছিল মার্কিন সেনা। সেই একই ছবি দেখা গেল আইসিস চিফ আবু বকর আল-বাগদাদির ক্ষেত্রেও। রবিবার সিরিয়ার গোপন ডেরায় তাঁকে খতম করার পর তাঁর দেহও ফেলা হয়েছে সমুদ্রের জলে।
হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছে, জঙ্গিনেতা আল-বাগদাদির দেহ সমুদ্রের জলে ফেলা হয়েছে। তবে কোথায়, কোন সমুদ্রে তা ফেলা হয়েছে তা জানায়নি হোয়াইট হাউস। লাদেনের ক্ষেত্রেও এই একই ছবি দেখা গিয়েছিল। জানা গিয়েছিল, একটা লোহার বাক্সের মধ্যে ভরে সমুদ্রের তলায় ফেলে দেওয়া হয়েছে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার হামলার মাস্টার মাইন্ডকে। আল-বাগদাদির ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে কিনা তা অবশ্য জানানো হয়নি।
পুরোটাই যেন এক টানটান চিত্রনাট্য। আমেরিকার সময় অনুযায়ী শনিবার রাতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করেছিলেন, “এইমাত্র বিশাল বড় একটা ঘটনা ঘটল।” ট্রাম্পের এই টুইটের পরেই শুরু হয় জল্পনা। কী এমন ঘটল যা খুলে বললেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অনেক রকম সম্ভাবনার কথা উড়ে আসে। তার মধ্যেই সিরিয়ায় হামলার কথাও শোনা যায়। অবশেষে সেটাই নিশ্চিত করেন ট্রাম্প নিজে।
রবিবার সকালে সাংবাদিকদের সামনে ট্রাম্প বলেন, “গত রাতে বিশ্বের শীর্ষ সন্ত্রাসী নেতাকে জব্দ করেছে আমেরিকা। মার্কিন হামলার পরে একটি আত্মঘাতী জ্যাকেট পরে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাগদাদি নিজেকে উড়িয়ে দেন।” ওই বিস্ফোরণে বাগদাদির তিন শিশুসন্তান মারা গেছে বলেও জানান ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, সিরিয়ায় আইসিস জঙ্গিদমনে ছাড়পত্র দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট। তার পরেই সেনা সেখানে গোপন অভিযান করে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিলেন আইসিস নেতা আল-বাগদাদি। ট্রাম্প জানান, সিআইএ-র সহায়তায় বাগদাদি ঠিক কোথায় আছে, তা নিশ্চিত করার পরে নির্দিষ্ট টার্গেটে অভিযানের রূপরেখা ঠিক করা হয়। এর পরে, শনিবার রাতে একটি বিপজ্জনক এবং সাহসি অভিযান করে মার্কিন বাহিনী। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে রীতিমতো রাজকীয় ধাঁচে অবিশ্বাস্য এই অভিযান শেষ করেন অফিসাররা।
এর পরে ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে মার্কিন সেনা। সেই নমুনার পরীক্ষার রিপোর্টে বাগদাদির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন। রবিবারের ভাষণে ট্রাম্প আরও বলেন, “বাগদাদি এক জন দুর্বল ও হতাশ ব্যক্তি ছিল। তাকে বিদায় করা হয়েছে।”
২০১১ সালে বাগদাদিকে ধরার জন্য ২৫ মিলিয়ন বা ২.৫ কোটি মার্কিন ডলার পুরস্কারের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল মার্কিন প্রশাসনের তরফে। ২০১৭ সালের মে মাসে রুশ বিমান হানায়, সিরিয়ার রাক্কা শহরে ইসলামিক স্টেট প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদির মৃত্যু হয় বলে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়েছিল। এর পরে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রশাসন দাবি করে, ২০১৭ সালের ওই হামলায় আইএস নেতা বাগদাদি খুন হননি, আহত হয়েছেন। এর পরেই ফের শুরু হয় অভিযানের পরিকল্পনা।