দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ লাদাখে চিনের চোখে চোখ রেখে চলার কূটনীতি নিয়েই চলছে নয়াদিল্লি। সোমবার সেখানে ডেমচোক এলাকায় চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির এক সৈনিক প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে ঢুকে পড়ে। সেনা সূত্রে খবর, তাঁকে তখনই আটক করা হয়েছে।
সাউথ ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ওই চিনা সেনার নাম ওয়াং ইয়া লং। আটক করা হলেও তাঁকে অক্সিজেন, ওষুধ, গরমবস্ত্র দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অঞ্চলে চিনা সেনা ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে যে রকম আচরণ করছে, সেই তুলনায় ভারতীয় বাহিনীর এই আচরণে বৈপরীত্য রয়েছে বইকি।
সেনা সূত্রে বলা হচ্ছে, ধৃত ওই পিএলএ সৈনিককে জেরা করা হচ্ছে। চিনের ষষ্ঠ মোটোরাইজড ডিভিশনের সৈনিক তিনি। জেরায় ওই সৈনিক জানিয়েছেন, তাঁর চামরি গাই খোয়া গিয়েছে। সেটি খুঁজতে বেরিয়েছিলেন। তবে সেনা অফিসারদের সন্দেহ, চরবৃত্তি করতে ভারতের ভূখণ্ডের মধ্যে ঢুকেছিলেন ওই চিনা সৈনিক। তাঁর কাছ থেকে মিলিটারি ডকুমেন্ট উদ্ধার করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে লাল ফৌজ থেকে ভারতীয় বাহিনীর কাছে আবেদন এসে পৌঁছেছে। তাতে বেজিংয়ের তরফে বলা হয়েছে, পিএলএ-র এক সৈনিক নিঁখোজ। সে ব্যাপারে ভারতীয় বাহিনীর কিছু জানা থাকলে যেন তা জানানো হয়।
সেনা সূত্রে বলা হচ্ছে, ওই সৈনিক যদি পথ হারিয়ে ঢুকে পড়ে থাকে তা হলে তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। চরবৃত্তির কোনও প্রমাণ পেলে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে ভারতীয় বাহিনী।
লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অঞ্চল সমুদ্র পৃষ্ঠের তুলনায় প্রায় ১৯ হাজার ফুট উঁচু। অতি উচ্চতার জন্য সেখানে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ কম। ফলে একটু দ্রুত চললেই শ্বাসকষ্ট হতে থাকে।
বস্তুত এমন সময়ে ওই চিনা সেনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে যখন সীমান্ত সমস্যা নিয়ে ভারত –চিন বিবাদ তীব্র। বিদেশ মন্ত্রী জয়শঙ্কর চিনের ভূমিকা নিয়ে বারবার হতাশা প্রকাশ করছেন। এক সময়ে চিনে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ছিলেন তিনি। চিনা প্রশাসনের সঙ্গে নয়াদিল্লির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে তিনি অনুঘটকের ভূমিকা নিয়েছিলেন। কিন্তু জয়শঙ্করও চিনের আগ্রাসী আচরণ নিয়ে বিরক্ত।
লাদাখে দুই দেশের সেনাবাহিনী প্রায় ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে। শীতে সংঘাত বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে জন্য দুই দেশই প্রস্তুতি ও রসদের যোগান বাড়াচ্ছে। ওই চিনা সৈনিক ভারতীয় বাহিনীর প্রস্তুতি জানতে চরবৃত্তির জন্য ঢুকেছিল কিনা তাই এখন তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।