দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: রাজ্যে লোকাল ট্রেন কবে চালু হবে? শহরতলির লক্ষ লক্ষ মানুষ এখন সেদিকেই তাকিয়ে। স্পেশ্যাল ট্রেনে ওঠা নিয়ে রোজই গণ্ডগোল হচ্ছে। শনিবারও হাওড়া স্টেশনে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় । এই পরিস্থিতিতে পূর্ব রেলের সঙ্গে বৈঠক চেয়ে চিঠি লিখল রাজ্য সরকার।
তাতে বলা হয়েছে, বিধি মেনে কী ভাবে লোকাল চালু করা যায় তা নিয়ে আলোচনা চায় নবান্ন। উদাহরণ হিসেবে মেট্রো প্রসঙ্গের কথা বলা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।
শনিবার হাওড়া স্টেশনে যা ঘটেছে তা নিয়ে ক্ষুব্ধ নবান্ন। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব এইচকে দ্বিবেদী চিঠি লিখেছেন পূর্ব রেলকে। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, রেল তাঁদের কর্মীদের জন্য স্পেশাল ট্রেন চালাচ্ছে আর সাধারণ মানুষ উঠতে গেলেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দমনপীড়ন চালাচ্ছে।
শনিবার সন্ধ্যায় যাত্রী বিক্ষোভে উত্তাল হয় হাওড়া। স্পেশ্যাল ট্রেনে উঠতে না দেওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা। স্টেশনে ঢোকার মুখেই আটকে দেওয়া হয় যাত্রীদের। বন্ধ করে দেওয়া হয় গেট। জোর করে স্টেশনে ঢুকতে গেলে জিআরপি ও আরপিএফ এর সঙ্গে বচসা বাঁধে যাত্রীদের। পুলিশ তাঁদের উপর কয়েকদফায় লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দীর্ঘদিন বন্ধ লোকাল ট্রেন। ফলে লোকাল ট্রেনের ওপর ভরসা করে যে সমস্ত মানুষ কাজে আসেন তারা পড়েছেন সমস্যায়। দীর্ঘদিন বসে থাকার পর রুটি রুজির টানে বেরিয়ে পড়েছেন বাইরে। জোর করেই উঠে পড়ছেন স্পেশ্যাল ট্রেনে। যেখানে রেলের কর্মচারী ছাড়া কারওই ওঠার অনুমতি নেই। জোর করে স্পেশ্যাল ট্রেনে ওঠা নিয়ে যাত্রী বিক্ষোভ হচ্ছে বহু জায়গাতেই।
শনিবার স্বরাষ্ট্রসচিব এইচ কে দ্বিবেদী পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার সুনীত শর্মাকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছেন। রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, শনিবার হাওড়া স্টেশনে যে দৃশ্য দেখা গেছে তা নিয়ে রাজ্য সরকার উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুণ্ণ।
রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে চিঠি দিয়ে বলেছেন, সকাল এবং সন্ধে নাগাদ কয়েক জোড়া ট্রেন চালানোর বিষয়ে আলোচনা করতে। যাতে সুষ্ঠু ভাবে যাত্রীদের সমস্যা দূর করা যায়। মেট্রো রেলের ক্ষেত্রে একই ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। রাজ্য সরকার তাদের পথদিশা অ্যাপ দিয়ে সহযোগিতা করেছে। প্রযুক্তি এবং আলোচনার মাধ্যমে মেট্রো পরিষেবা চালু করা হয়েছে। এই মডেল অন্য রাজ্যও অনুসরণ করছে।
এক্ষেত্রেও রেলকে বলা হয়েছে, দ্রুত আলোচনায় বসতে। পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার বলেছেন, দু–এক দিনের মধ্যে তাঁরা অফিসার পাঠাচ্ছেন।
চিঠিতে স্বরাষ্ট্র সচিব বলেছেন, আমরা সুষ্ঠুভাবে মেট্রো রেল চালাতে সহায়তা করছি। বিশেষ ট্রেনও চলছে। জাতীয় স্তরে উড়ান চলছে। আন্তর্জাতিক স্তরেও বিশেষ কিছু উড়ান চালু হয়েছে। নিয়ম মেনে বাসও চলছে। রেলের কর্মীদের জন্য ট্রেন চলছে। কিন্তু অন্যান্য সরকারি কর্মীদের এই পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর যে দমন–পীড়ন চালানো হচ্ছে তাতে রাজ্য সরকার উদ্বিগ্ন, ক্ষুণ্ণও। তাই সাধারণ মানুষের জন্য সকাল, সন্ধ্যে কয়েক জোড়া ট্রেন চালানো যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা করতে চায় রাজ্য সরকার।