দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মহার্ঘ ভাতা নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বড় অংশের অসন্তোষ অজানা নয়। কাল বুধবার এ ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্টে শুনানিও রয়েছে।
তবে কি সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটা খুশির খবর রইল। নবান্নের ছুটির ক্যালেন্ডারে আরও ৩ টি জুড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত মাসে বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক সভা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি ঘোষণা করেছিলেন আদিবাসী নেতা বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে সরকারি ছুটি থাকবে। ১৮৭৫ সালের ১৫ নভেম্বর রাঁচিতে জন্ম হয়েছিল বিরসা মুন্ডার। অর্থাৎ তাঁর জন্মতিথি ১৫ নভেম্বর ছুটি থাকবে রাজ্য সরকারি সমস্ত অফিস-কাছারি এবং স্কুল কলেজ।
গত ৯ ডিসেম্বর বনগাঁয় রাজনৈতিক সভা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। সেই সভা থেকে ফের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে তিনি জানিয়েছেন, মতুয়া ধর্মগুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হচ্ছে। তবে সেদিন একটা সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। তা হল হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্ম হয়েছিল মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশীতে। কিন্তু ইংরেজি ক্যালেন্ডার বা বাংলা পঞ্জিকায় ওই তিথি বছরের কোনও নির্দিষ্ট দিনে হয় না। সুতরাং মতুয়া সমাজের প্রতিনিধিরা যদি তাঁকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, তা হলে সুবিধা হয়।
সম্ভবত মতুয়া সমাজের তরফে সেটা সরকারকে জানানো হয়েছে। তার পর আজ শুক্রবার অর্থমন্ত্রকের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, ২৬ চৈত্র মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশীতে হরিচাঁদ ঠাকুরর জন্ম। বাংলা পঞ্জিকা মতে আগামী বছর সেই দিনটা হবে ৯ এপ্রিল। প্রতি বছর ওই বাংলা পঞ্জিকা ধরে ৯ বা ১০ এপ্রিল হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথি উপলক্ষে ছুটি থাকবে।
মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের কর্মিসভা ছিল। ওই মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন রাজবংশী নেতা তথা কোচবিহারের সংস্কারক ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার জন্মদিনেও এবার থেকে সরকারি ছুটি থাকবে। ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পঞ্চানন বর্মার জন্মতিথি হল ১৩ ফেব্রুয়ারি। তাই এ বার থেকে ওই দিন সমস্ত সরকারি অফিস কাছারি স্কুল কলেজ ছুটি থাকবে।
একুশ সালে পঞ্চানন বর্মার জন্মতিথিতে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি অবশ্য মার যেতে পারে। কারণ, ১৩ ফেব্রুয়ারি হল শনিবার। এমনিতেই সেদিন সরকারি ছুটি থাকে। তবে এও ঠিক এ সব ক্ষেত্রে পরবর্তী সোমবার বিকল্প ছুটি ঘোষণা করা হয় নবান্ন থেকে।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, প্রতিটি ছুটির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমীকরণ রয়েছে। ছোট ছোট গোষ্ঠীকে খুশি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এই ধরনের ট্রেন্ড প্রশাসনিক ক্ষেত্রের জন্য ভাল কি? কারণ, এমন করতে থাকলে দেখা যাবে তালিকা ক্রমশ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। ছোট ছোট গোষ্ঠী থেকে নতুন দাবি উঠছে। তাদের সবাইকে খুশি করতে গেলে ছুটির তালিকা যে কত লম্বা হয়ে যাবে ইয়ত্তা নেই।