দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ শনিবার সকালে হাসনাবাদ টাকি রোডের উপর পড়েছিলেন এক বৃদ্ধা। জবুথবু হয়ে ছিলেন ঠাণ্ডায়। নড়াচড়া করারও তেমন ক্ষমতা ছিল না । কিন্তু অসহায় বৃদ্ধাকে দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসেননি কেউই। পথচলতি প্রায় সকলেই দেখেও না দেখার ভান করে পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েছেন।
স্থানীয়দের অনেকেই জানিয়েছেন, ভয় কাজ করছিল সকলের মনে। যদি বৃদ্ধা করোনা আক্রান্ত হন। যদি তাঁর থেকে বাকিদেরও করোনা ছড়িয়ে যায়। অনেকে আবার এও বলেছেন পরিস্থিতিটাই ঠিক নেই। এসব করোনার ভয় না থাকলে তো সকলেই এগিয়ে যেতেন বৃদ্ধার সাহায্যের জন্য।
তবে এসব ভয় ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি দুই সিভিক ভলান্টিয়ারকে। পারিপার্শ্বিক চাপকে গ্রাহ্য না করে বরং অশীতিপর বৃদ্ধাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে গিয়েছেন বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ থানা এলাকার টাকি থুবা মোড়ে কর্তব্যরত দুই সিভিক ভলান্টিয়ার পল্টু দাস এবং সনাতন সরকার।
জানা গিয়েছে, কয়েকদিন ধরেই ওই এলাকায় রয়েছেন বৃদ্ধা। বয়সের ভারে কুঁচকে গিয়েছে চামড়া। দিন এনে দিন খাওয়ার ক্ষমতাও নেই। তাই কোনও দোকানের সামনের এক চিলতে অংশ কিংবা কারও বাড়ির বাইরের একটু ফাঁকা জায়গাতেই সকলের নজর এড়িয়ে ঠাঁই নিচ্ছিলেন তিনি। বলা ভাল পড়ে থাকছিলেন এক কোণে। কোনও সহৃদয় কিছু খেতে দিলে পেটে দানাপানি জুটছিল। নয়তো সে সবেরও বালাই ছিল না এ কদিন। অনাহার, অযত্ন, বয়সের ভারে একেবারে মাটিতে মিশে গিয়েছিলেন বৃদ্ধা। তবে শেষ রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছেন ওই দুই যুবক।
টাকি শহরের বাকিরা মুখ ফিরিয়ে নিলেও সনাতন ও পল্টু তা পারেনি। বরং গাড়িতে করে বৃদ্ধাকে তুলে নিয়ে গিয়ে টাকি গ্রামীণ হাসপাতলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে বৃদ্ধার চিকিৎসা এবং খাওয়া-পরার ভারও নিয়েছেন এই দুই তরুণ সিভিক ভলান্টিয়ার। একই এলাকায় সমাজের কিছু মানুষের আচরণ যখন নিন্দনীয় হয়ে উঠেছে তখন সেই একই জায়গায় আরও দুই যুবকের কর্তব্য বোধ মন জয় করেছে এলাকার বহু মানুষের।