পিয়ালী মুখার্জী , কলকাতা: যাবতীয় সংশয়, যাবতীয় আশঙ্কার অবসান। শুরু হয়ে গেল মায়ের আগমনী। বুধবার কুমারটুলি থেকে মন্ডপের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন মা দূর্গা। প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততা তুঙ্গে। শুরু হয়েছে দেবীর চক্ষুদান। মৃন্ময়ী মূর্তি রওনাও দিতে শুরু করেছে মণ্ডপে।
এদিন কুমারটুলি পাড়ার স্টুডিও থেকে দুর্গা প্রতিমা পৌঁছে গেল উত্তর থেকে দক্ষিণের কলকাতার বিভিন্ন সার্বজনীনের পূজা মন্ডপে। কুমারটুলি থেকে গিরিশ পার্ক লাগোয়া লম্বা রাস্তার পুরোটাই ছিল উৎসবমুখর। ঢাকের বাদ্যি, উদ্যোক্তাদের নাচে-গানে আর মুহুর্মুহু ওঠা ‘বলো দুর্গা মাইকি’-র জয় ধ্বনির সাক্ষি থাকল মহানগরী।
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব নিয়ে এবার কোভিড আবহে কম সংশয় ছিল না। খুঁটি পুজো থেকে পুজোর বহর সবেতেই কাটছাঁট করেছেন শহরের পুজো উদ্যোক্তারা। কোভিড আবহেও বন্ধ হয়নি মায়ের মন্ডপ তৈরীর কাজ। শিল্পীদের তত্ত্বাবধানে এবারের পুজোর ভাবনায় ধরা পড়েছে নতুন নতুন থিম।
প্রায় দু’তিন মাস আগে থেকেই শুরু হয়েছিল বিভিন্ন মন্ডপ সজ্জার প্রস্তুতি। ৬ অক্টোবর মা এলেন মণ্ডপে। এক পুজো কমিটির সাধারণ সম্পাদক অখিল বসুর কথায় ,”সরকার যে নির্দেশিকা জারি করবে, তা তো মেনে চলবই। কিন্তু মহালয়ার দিনে পুজো মণ্ডপে মাকে নিয়ে আসতে পেরে দারুণ তৃপ্তি অনুভব করছি।
প্রথা মেনে প্রতিমার চক্ষুদান বেহালা নতুন সংঘের পুজোর
আজ অনেক বাড়ির পুজো এবং মণ্ডপে প্রথা মেনে মহালয়ার দিন চক্ষুদান হলো প্রতিমার। বেহালার রায় বাহাদুর রোডের নতুন সংঘের পুজোর প্রতিমার আজ চক্ষুদান হলো সেই সনাতন প্রথা মেনে বিখ্যাত শিল্পী সনাতন দিন্দার হাতে। তিনি যদিও প্রতিমা গড়েননি কিন্তু এদিন চক্ষুদান করেন তিনি।
তাঁর কথায় চক্ষু দান যেন প্রতিমার প্রাণ প্রতিষ্ঠার সমান। কৃষণনাগর থেকে তাঁর শিষ্য বিকাশ, পাখি এরা প্রতিমা গড়েছেন। সনাতন দিন্দা জানান তিনি এই কাজ টি করতে পেরে আজ খুব খুশি।
নিউ নর্মালে কলকাতার পুজো দেখতে মুখিয়ে আছে শহরবাসী। বেহালার স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু মুখার্জী বলছিলেন,”সকাল অবধি মনেই হয়নি পূজো এসেছে। কিন্তু মায়ের আগমনী যেন বদলে দিল পুরো পাড়ার পরিবেশটা। পুজো পুজো গন্ধ পাচ্ছি যেন।”
বেহালা দিয়ে শুরু। শুরু বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের। ঢাকের বোল, কাশফুলের নড়াচড়া জানান দিচ্ছে মা আসছে। ‘বলো দুর্গা মাইকি… জয়!’