দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এমআরআই করাতে বাঙুর ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্স নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেখানে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক রেখে একাধিক পরীক্ষার পর ফের এসএসকেএম-হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডের সাড়ে ১২ নম্বর কেবিনে ফিরিয়ে আনা হয় মুখ্যমন্ত্রীকে।
তৃণমূলের সাংসদ ডা: শান্তনু সেন জানিয়েছেন, পরীক্ষার পর দেখা গিয়েছে তাঁর পায়ে পায়ের পাতায় চিড় ধরেছে। লিগামেন্ট, টিস্যুতেও চোট লেগেছে তাঁর। জানা গিয়েছে, তাঁর বাঁ পায়ের গোড়ালি ফুলে রয়েছে। চোট লাগা অংশে তীব্র ব্যথা রয়েছে বলেও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, এই ধরনের আঘাতে সাধারণত দেড়-দু’মাস বিশ্রামে থাকার প্রয়োজন পড়ে। তাঁর পায়ে প্লাস্টার করতেও হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এসএসকেএম-হাসপাতালের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাঁ পায়ের গোড়ালি ও পায়ের পাতায় সিভিয়র ইনজুরি রয়েছে। ডানদিকের কাঁধে ও কব্জিতে চোট রয়েছে। ঘটনার পর থেকে তিনি ট্রমার মধ্যে রয়েছেন। ঘটনার পর থেকে বুকে ব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট অনুভব করছেন। চিকিৎসক দলের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। ৪৮ ঘন্টা পর্যবেক্ষণে থাকবেন তিনি।’ ফলে মমতার নির্বাচনী প্রচার নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
নন্দীগ্রামে আহত হন তৃণমূল নেত্রী। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রিন করিডর করে আনা হল কলকাতায়। মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আগে থেকেই তৈরি ছিল এসএসকেএম হাসপাতালের কেবিন। তৃণমূলনেত্রীর জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে উডবার্নের ১২.৫ নম্বর কেবিন। এছাড়াও তৈরি কার্ডিওলজি, জেনারেল মেডিসিন, অর্থোপেডিক, এনড্রোক্রাইনোলজি এবং সার্জারি বিশেষজ্ঞ ৫ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড । চোট কতটা গুরুতর খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।
হাসপাতালের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় মেডিকেল বুলেটিনে জানিয়েছেন, তাঁর বাঁ পায়ে প্লাস্টার করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর পায়ের পাতা, গলা ও কাঁধেও আঘাত পেয়েছেন। আপাতত তাঁকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
বুধবার নন্দীগ্রামে প্রচারে গিয়ে আঘাত পান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে সেখান থেকে গ্রিন করিডর করে কলকাতায় নিয়ে এসে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রথমে তাঁর পায়ের এক্স রে সহ একাধিক পরীক্ষা করা হয়। পরে এমআরআই করানোর জন্য বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এমআরআই করানোর পর তাঁকে ফের নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। আজ বৃহস্পতিবার তাঁর ফের সিটি স্ক্যান করানো হতে পারে।
.@BJP4Bengal Brace yourselves to see the power of people of BENGAL on Sunday, May 2nd.
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) March 10, 2021
Get READY!!! pic.twitter.com/dg6bw1TxiU
মুখ্যমন্ত্রীকে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডের সাড়ে ১২ নম্বর কেবিনে রাখা হয়েছে। তাঁর শারীরিক পরীক্ষার পর হাসপাতালের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বাঁ পায়ের গোড়ালিতে ও পায়ের পাতায় চোট সিভিয়ার তথা গুরুতর। রক্ত জমেছে।
তা ছাড়া ঘটনার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী বুকে ব্যথা অনুভব করছেন। তাঁর শ্বাসকষ্টও হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। সেই কারণেই তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এসএসকেএম-এ মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসায় নিয়োগ করা হয়েছে ৭ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড। সূত্রের খবর, ওই টিমে আছেন, এসএসকেএম-এর অর্থপেডিক বিভাগের প্রধান মুকুল ভট্টাচার্য, মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান সৌমিত্র ঘোষ, নিউরো সার্জারি বিভাগ প্রধান শুভাশিস ঘোষ। আছেন, জেনারেল সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার, কার্ডিওলজিস্ট সরোজ মণ্ডল, নিউরো মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক বিমানকান্তি রায়, এন্ডোক্রনোলজিস্ট সুজয় ঘোষ এবং অ্যানাস্থেসিওলজিস্ট সর্বাণী সহাইকা। এছাড়াও পরামর্শ নেওয়া হয় গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট গোপালকৃষ্ণ ঢালীর।
মুখ্যমন্ত্রীর সেই ছবি এদিন ভোর রাতে টুইট করেছেন তাঁর ভাইপো তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে তিনি লিখেছেন, বিজেপি প্রস্তুত থাকো, ২ মে বাংলার মানুষের জবাব পাবে।এদিকে মমতার নিরাপত্তার ত্রুটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তাঁর নিরাপত্তায় থাকা অফিসারদের থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছেন তিনি।
Called on @MamataOfficial #SSKM to enquire about her health condition and had earlier spoken to her at 6.40 PM while she was at Nandigram. Sought an update from Director, Security and Chief Secretary in matter. Health Secretary and Director of Hospital urged to take all caution. pic.twitter.com/hIA6ysednf
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) March 10, 2021
উল্লেখ্য,তৃণমূল নেত্রীর আহত হওয়ার খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম ও অরূপ বিশ্বাস। নেত্রীর আহত হওয়ার খবর পেয়ে উৎকণ্ঠায় হাসপাতালের বাইরে ভিড় জমান কর্মী-সমর্থক ও অনুগামীরা। মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালে পৌঁছনোর খবর পেয়ে তাঁকে সেখানে দেখতে আসে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এসএসকেএম চত্বরে থাকা তৃণমূলকর্মীরা রাজ্যপালকে দেখেই গো-ব্যাক স্লোগান দিতে থাকেন।
এর ফলে মমতার নির্বাচনী প্রচার নিয়েও কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীর ইসিজি করা হয়। রিপোর্ট সন্তোষজনক এসেছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।