দেশের সময়ওয়েব ডেস্কঃ পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর থেকে কাশ্মীরের পরিস্থিতি উত্তপ্ত। চলছে বিক্ষোভ, জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। তার মধ্যেই জম্মু-কাশ্মীরের ১৮ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার নিরাপত্তা সরিয়ে নিয়েছে কেন্দ্র। গ্রেফতার করা হয়েছে ডজনখানেক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকেও। এই পরিস্থিতিতে উপত্যকায় যাতে কোনও উত্তেজনা না ছড়ায়, তার জন্য তড়িঘড়ি ১০০ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনীকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কাশ্মীরে।
শুক্রবার জামাত-ই-ইসলামি নেতা ইয়াসিন মালিককে গ্রেফতার করার পর কাশ্মীরে কিছু কিছু জায়গায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। তাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে ‘আর্জেন্ট নোটিসে’ দিল্লি থেকে ১০০ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনীকে বিমানে করে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কাশ্মীরে। ইতিমধ্যেই উপত্যকা জুড়ে মোতায়েন রয়েছে নিরাপত্তাকর্মীরা। তাঁদের সঙ্গেই এই আধাসামরিক বাহিনীর কর্মীরা যোগ দেবেন।
গত বৃহস্পতিবার সিআরপিএফ কনভয়ে আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদ। তারপর থেকেই উপত্যকা জুড়ে শুরু হয় তল্লাশি। পুলওয়ামাতেই সেনা, সিআরপিএফ ও কাশ্মীর পুলিশের সঙ্গে গুলি বিনিময়ে নিহত হন পুলওয়ামা হামলার মাস্টারমাইন্ড তথা জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের ডান হাত কামরান ওরফে আবদুল রশিদ গাজি। কিন্তু এখনও উপত্যকায় অনেক জঙ্গি লুকিয়ে থাকার আশঙ্কা আছে। তাই এই তল্লাশি অভিযান চলছেই।
সেনা সূত্রে খবর, প্রতিটি কোম্পানিতে মোটামুটি ৮০ থেকে ১৫০ সেনা থাকে। সেইসূত্রে বোঝা যাচ্ছে মোট ১০ হাজার আধাসামরিক বাহিনীর সেনাকে পাঠানো হয়েছে কাশ্মীরে। এই আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে ৪৫ কোম্পানি সিআরপিএফ, ৩৫ কোম্পানি বিএসএফ, ১০ কোম্পানি সশস্ত্র সেনা বল ও ১০ কোম্পানি ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশের সেনাদের সেখানে পাঠানো হয়েছে।
এর মধ্যেই কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেয়, জম্মু-কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের সরকারের তরফে যে নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হত, তা তুলে নেওয়া হবে। সেইমতোই ইয়াসিন মালিক, সৈয়দ আলি শাহ গিলানি, শাবির শাহ, সালিম গিলানি-সহ ১৮ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়া হয়। এই নেতাদের হাত ধরে কাশ্মীরের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে, এই আশঙ্কায় শুক্রবার জামাত নেতা ইয়াসিন মালিককে তাঁর শ্রীনগরের আস্তানা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর জামাত প্রধান হামিদ ফৈয়াজ সহ আরও ডজনখানেক নেতাকে আটক করেছে নিরাপত্তারক্ষীরা।
গত ২৪ ঘণ্টায় এই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের গ্রেফতারির সমালোচনা করেছেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি। টুইট করে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কোন অজুহাতে গ্রেফতার করা হয়েছে এই নেতাদের।