দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, এ রাজ্যে তিনি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বাস্তবায়িত হতে দেবেন না। বিধানসভায় প্রস্তাবও পাশ করেছে সরকার। কিন্তু রবিবার মমতার উদ্দেশে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে শহিদ মিনারের সভা থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলে দিলেন-
“যত জোর আছে লাগান মমতা দিদি। নাগরিকত্ব আমরা দিয়েই ছাড়ব।” একইসঙ্গে বাংলার সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে শাহ বলেন, “এ রাজ্যের মুসলিমদের কোনও ভয় নেই। কারও নাগরিকত্ব যাবে না। এটা নাগরিকত্ব কাড়ার নয়, দেওয়ার আইন।”
এরপরই সিএএ নিয়ে মমতার বিরুদ্ধে সুর চড়ান শাহ। বলেন, “মতুয়ারা নাগরিকত্ব পাক আপনি চান না? গুরুচাঁদ ঠাকুর, হরিচাঁদ ঠাকুর, পঞ্চানন বর্মারা যে লড়াই করেছেন, আমরা তাঁদের সম্মান দিতে চাই। আপনি আটকাচ্ছেন কেন?”
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সারা দেশের মতো বাংলাতেও তীব্র আন্দোলন চলছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই আইন নিয়ে বাংলার শাসকদল শুরু থেকেই সাধারণ মানুষের মনে একটা বিভ্রান্তি তৈরির কৌশল নিয়েছে। ফলে অনেক মানুষই নিজেদের কাগজপত্র পেতে এ অফিস, সে অফিস দৌড়চ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য সেকারণেই রাজ্য বিজেপি অমিত শাহকে এনে রাজ্যের সংখ্যালঘু ও গ্রামীণ মানুষের কাছে বার্তা দিতে চাইল, মমতা সরকার যা বলছে বা বিরোধীরা যে কথা প্রচার করছেন, ব্যাপারটা আদৌ তা নয়।
এদিন অমিত শাহ আরও বলেন, “আপনাদের কাউকে এখানে সেখানে দৌড়তে হবে না। কোনও ভারতীয়কে দেশ ছাড়তে হবে না। আর যে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, খ্রিষ্টান, পার্সিরা ধর্মীয় কারণে উৎখাত হয়ে ভারতে এসেছেন, তাঁদের আমরা নাগরিকত্ব দেব।” কার্যত চ্যালেঞ্জের সুরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা নাগরিকত্ব দেবই। পারলে তৃণমূল রুখে দেখাক।”
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সংসদে পাশ হওয়ার জন্য এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অভিনন্দন জানায় রাজ্য বিজেপি।
- বাংলা মা কালীর মাটি। এই মাটি বহু বিপ্লবীর পুন্য জন্মভূমি।
- আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার বানাবে বিজেপি।
- ২০১৯ সালে মানুষের আশীর্বাদে বাংলা থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ ভোট পেয়েছে বিজেপি।
- বিধানসভায় দুই তৃতীয়াংশ আসনে জিতবে বিজেপি।
- কোনও রাজপুত্রের হাতে আগামী বাংলার দায়িত্ব যাবে না।
- এই যাত্রা থামবে না। এই যাত্রা বাংলার উন্নয়নের যাত্রা।
- এই যাত্রা বাংলার চলা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের যাত্রা।
- আগে মমতা বলতেন বাংলায় বিজেপির জমানত জব্দ হবে। এখন বাংলা থেকে ১৮ সাংসদ গিয়েছেন লোকসভায়।
- মমতা দিদি আমাদের উপরে এত অত্যাচার করেও বিজেপিকে রুখতে পারছেন কি!
- আজকের সমাবেশ তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সমাবেশ।
- ৪০ জনেরে বেশি বিজেপি কার্যকর্তার মৃত্যু হয়েছে।
- এবার ‘আর নয় অন্যায়’ কর্মসূচি নিয়ে নতুন যাত্রা শুরু করবে বিজেপি।
- আজ যে অভিযান এখান থেকে শুরু হচ্ছে তা গ্রাম থেকে শহরে ছড়িয়ে পড়বে।
- বাংলার ঘরে ঘরে যেতে হবে বিজেপি কর্মীদের। এই লড়াই খুবই কঠিন লড়াই। তবু লড়তেই হবে।
- ‘দিদিকে বলো’-র জবাবে বাংলার মানুষ বলুন ‘আর নয় অন্যায়’।
- এই রাজ্যে তোষণ রাজনীতি আর চলবে না।
- ৩৭০ ধারা বাতিলের দাবিতে এই বাংলার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জীবন দিয়েছিলেন।
- শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের স্বপ্ন পূরণ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
- অযোধ্যায় ভব্য রামমন্দির বানানোর জন্য আমরা ৫০০ বছর অপেক্ষা করেছি।
- আদালতের নির্দেশ পেয়ে ইতিমধ্য়েই ট্রাস্ট গঠন করে রামমন্দির বানানোর কাজ শুরু হয়েছে।
- সিএএ লাগু হলেও কোনও সংখ্যালঘুর নাগরিকত্ব যাবে না। এটা নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন।
- আমরা উদ্বাস্তুদের নাগরিকতা দিতে চাইছি। তাতে মমতা দিদির বিরোধিতা কেন?
- মমতা দিদি আমাদের রুখতে পারবেন না। সব হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি, খ্রিস্টান শরণার্থীদের আমরা নাগরিকত্ব দেবই।
- মমতা আমলে সব দিক থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে বাংলা।
- মমতা দিদির হাতে রাজ্যের ঋণ ৩ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা।
- ক্ষমতায় এলে পাঁচ বছরের মধ্যে ‘সোনার বাংলা’ বানিয়ে দেখাব।
- মমতার আমলে প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে ১ জন দারিদ্রসীমার নীচে।
- বাংলায় এখন সরকারের উপর থেকে পঞ্চায়েত নিচু স্তর পর্যন্ত দুর্নীতি।
- মমতা সরকার কেন্দ্রকে বাংলার উন্নতি করতে দিচ্ছে না।
বারবার করে নিজের বক্তৃতায় মতুয়াদের প্রসঙ্গ টেনে আনেন শাহ। ২০০৯ সালের লোকসভা থেকে বাংলায় যতগুলি ভোট হয়েছে, দেখা গিয়েছে মতুয়া ভোটের একচ্ছত্র আধিপত্য তৃণমূলের। কিন্তু ১৯-এর লোকসভায় তা ধাক্কা খায়। নদিয়ার রাণাঘাট থেকে উত্তর চব্বিশ পরগনার বনগাঁ—যে কেন্দ্রে মতুয়া ভোটই নির্নায়ক শক্তি সেখানে জিতেছে বিজেপি।
রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূলের হাতছাড়া হওয়া মতুয়া ভোট বিজেপি ধরে রাখতেই এদিন শাহ বারবার সেই প্রসঙ্গ টেনে আনেন।
এছাড়াও তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক ইস্যুতে আক্রমণ শানিয়েছেন অমিত শাহ। যদিও সভা শেষের পর আধঘণ্টা-চল্লিশ মিনিট সময় কেটে গেলেও সরকারি ভাবে তৃণমূল সাংবাদিক বৈঠক করে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। প্রতিক্রিয়া দিলে এই প্রতিবেদনে তা আপডেট করা হবে।