দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বনগাঁ পুরসভা নিয়ে ফয়সালা হল না সোমবারও। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় বনগাঁর বিজেপি কাউন্সিলরদের হলফনামা জমা দিতেনির্দেশ দিয়েছেন । আস্থা ভোটের দিন পুরসভার ভিতরে এবং বাইরে কী হয়েছিল তা হলফনামা আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার আবার হবে এই মামলার শুনানি। একই সঙ্গে তাঁর এজলাস বয়কট নিয়ে এ দিন সরকারি প্যানেলের আইনজীবীদের উদ্দেশেও কড়া মন্তব্য করেন বিচারপতি।
শুনানিতে তিনি বলেন, “আমি চেয়ারকে সম্মান করেছি। হাইকোর্ট যে দায়িত্ব দিয়েছিল, পালন করার চেষ্টা আপনাদের অনৈতিক কাজকর্ম বরদাস্ত করব না। কোন মামলা শুনব, তা প্রধান বিচারপতি ঠিক করে দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতির পদকে সম্মান করুন। আমি যদি ঠিক ভুল না বিচার করে সরকারের হ্যাঁ-তে হ্যাঁ মেলাই, সেটা আমার চেয়ারের প্রতি অবিচার হবে।”
এদিন বনগাঁ মামলায় রায় ঘোষণার কথা ছিল। শুনানি চলাকালীন বনগাঁ মামলায় নতুন করে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। ১১ জন কাউন্সিলরকে বিচারপতির স্পষ্ট নির্দেশ, সেদিন ঠিক কী হয়েছিল, তা হলফনামায় জানান। কে, কীভাবে বাধা দিয়েছিল ঘটনার দিন, তাও উল্লেখ করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। বিজেপি-র আইনজীবীকে বিচারপতি বলেন, “প্রমাণ করুন, সেদিন ১১ জনকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।”
অন্যদিকে, তৃণমূল কাউন্সিলরের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, “অনাস্থার পক্ষে কাউন্সিলররা অনুপস্থিত ছিলেন। তাই সময় পিছিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। যাঁরা অনাস্থা প্রস্তাব আনেননি, তাঁরা কী ভাবে সব সিদ্ধান্ত নিলেন?”
শাসকদলের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, “এটা কি আইন? আমাকে তো নতুন করে অঙ্ক শিখতে হবে, যেখানে ‘১০’ ‘১১’-র থেকে বেশি হয়।” বনগাঁ পুরসভায় তৃণমূলের কাউন্সিলর ১০, বিজেপির ১১। তবুও তৃণমূলই পুরবোর্ড নিজেদের দখলে বলে দাবি করে। আস্থা ভোট নিয়ে ধুন্ধুমারের পর দু’পক্ষই দাবি করে বোর্ড তাঁদের। ভোটের দায়িত্বে থাকা সরকারি আধিকারিক বলেন, আমি কিছু জানি না।
আগের শুনানিতেও বনগাঁর চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যকে বিচারপতি বলেছিলেন, “চেয়ার আঁকড়ে বসে আছেন! আপনি এত নির্লজ্জ কেন?” এ দিন একই রকম কড়া মন্তব্য করলেন বিচারপতি। এখন দেখার মঙ্গলবার এই মামলার নিষ্পত্তি হয় কি না।