অর্পিতা দে, কলকাতা:
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে কলকাতার বিজেপি সমর্থকরা নিয়েছিল এক অভিনব উদ্যোগ। সকালে হাওড়া স্টেশনে প্রতিটি যাত্রীকে বাংলার রাজভোগ খাওয়ানো দিয়ে শুরু হয় দিন। বড়বাজারের পোস্তা অঞ্চল অন্যান্যদিনের মতোই ব্যস্ত থাকলেও সকলেরই চোখ ছিল নতুন বিশালাকার টিভি স্ক্রিনে।
বিজেপির বিভিন্ন দলীয় কার্যালয়ের সামনে লাগানো হয়েছিল এইসব দৈত্যাকার টিভি স্ক্রিন৷টিভি স্ক্রিনে সরাসরি দেখানো হচ্ছে রাষ্ট্রপতি ভবনের শপথ গ্রহণ প্রস্তুতি ও অতিথিদের৷ সঙ্গে মাইকে বেজে চলেছে নরেন্দ্রমোদির বক্তৃতা৷ স্থানীয় একটি বাড়ির দোতলায় চলছে তখন লাড্ডু তৈরীর কাজ৷বাড়ির ভিতর তখন ঘিয়ের গন্ধে ভরে গেছে৷প্রায় জনা পঞ্চাশেক লোক একসাথে হাত লাগিয়েছেন লাড্ডু বানানোয়৷কেউবা বাক্স তৈরিতে আবার কেউ সেই লাড্ডু ভরে ফেলছেন বাক্সে।সকলেই আনন্দে উৎফুল্ল।
এবারে বাংলা থেকে বিজেপি ভালো ভাবে জিতেছে আবার দ্বিতীবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির শপথ গ্রহণ দেখবেন সকলে একসাথে৷সেই উপলক্ষেই এই আয়োজন৷ তাই তারা কয়েকহাজার লাড্ডু বানিয়েছেন মানুষের মধ্যে তা বিলিয়ে আনন্দ ভাগ করে নেয়ার জন্য।
পথচলতি সকল মানুষকেই গলা জড়িয়ে জয় শ্রী রাম বলে মুখে লাড্ডু পুড়ে দিচ্ছেন কুলি, মজুর, মেথর নির্বিশেষে; আজ সকলের আনন্দের দিন।ব্যাড যাচ্ছেন না পথ চলতি মানুষও, বাক্স ভরা লাড্ডু প্যাকেট করে দিয়ে দিচ্ছেন তাদের হাতেও। দুপুর গড়াতেই ভিড় জমতে শুরু করলো বিভিন্ন টিভি স্ক্রিনে এর সামনে।বিজেপির দলীয় সদস্য, কর্মচারী ও সমর্থকদের দেখা গেলো দলীয় পতাকা, নরেন্দ্রমোদির ছবি হাতে জয় দরিরাম ধ্বনিতে মিছিল করতে।
তাদের কারোও পরণে মোদী শাড়ি কারোওবা মোদী জ্যাকেট৷ সন্ধে নামতে পোস্তা বড়বাজারের বিশালাকার টিভি স্ক্রিন গুলোর সামনে ভিড় উপচে পড়তে লাগলো, রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে সরাসরি সম্প্রচার চলছে, আর কিছুক্ষনের মধ্যেই শুরু হতে চলেছে প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান।
ঘড়িতে সন্ধেয় সাতটা বাজতেই দৈত্যাকার ওই টিভি স্ক্রিনের পর্দায় ভেসে উঠলো নরেন্দ্র মোদির মুখ, হাততালিতে মুখরিত হলো চারিদিক, তার শপথ গ্রহণের সাথে সাথেই জ্বলে উঠলো মাথার ওর সার বেঁধে লাগানো আতশবাজির ফোয়ারা ও নানানরকম রঙিন আতশবাজির প্রদর্শনী।পোস্তার আকাশেও তখন রঙিন আলোর রোশনাই৷
ওবিসি মোর্চার অন্যতম সদস্য শ্রী গঙ্গাসার প্রজাপতি জানালেন, তিনি ছোট থেকেই সংঘের সঙ্গে যুক্ত এবং বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রীর আদর্শে অনুপ্রাণিত।তার প্রথম জীবনের কমিউনিস্ট ও কংগ্রেস বন্ধুরা তাকে পাগল বলতেন তার বিশ্বাসকে হাসি ঠাট্টা করতেন, কিন্তু তিনি আজ মনে করেন তিনি সত্যি পাগল তা সত্যের জন্য, আর তার বিশ্বাসের সফলতা এই আজকের দিন।
গঙ্গাসার মনে করেন তার বাবা ছিলেন পরাধীন আজ তিনি স্বাধীন ভারত দেখছেন।বিজেপির স্থানীয় এক কাউন্সিলর বিজয় ওঝা সকলের মধ্যে লাড্ডু ভাগ করতে করতেই জানালেন, আগামী প্রজন্মের কাছে এই দিনটিকে নরেন্দ্র মোদির সত্য আদর্শের জন্য বিশেষ ভাবে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই এই বিশেষ আয়োজন করতে পেরে তারা সকলেই উচ্ছসিত৷