পোলট্রি, কাক বা পাখির অস্বাভাবিক মৃত্যু দেখলেই খবর দিন,বার্ড-ফ্লু সতর্কতায় নবান্ন

0
1111

দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ একে কোভিডে রক্ষা নেই, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জাও এসে হাজির।
কেরল থেকে হিমাচল—এরই মধ্যে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জায় হাজার হাজার পোল্ট্রির মুরগি মারা গেছে। যাকে বলে মড়ক লাগা। বেঙ্গালুরুতে কাক মরে পড়ে থাকতেও দেখা গিয়েছে।
সোমবার তাই সব জেলাকে সতর্ক করল নবান্ন। জেলার মেডিকেল অফিসারদের বলা হয়েছে, কোথাও পোলট্রির মুরগি অস্বাভাবিক কারণে মারা গেলে, বা কোনও বন্য পাখির অস্বাভাবিক কারণে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটলে তক্ষুনি যেন তা প্রাণী সম্পদ ও জনস্বাস্থ্য দফতরে জানানো হয়।

মৃত পাখি বা পোলট্রির সংস্পর্শে যাঁরা এসেছে তাঁদের উপর নজরও রাখতে হবে। তার মধ্যে কোনও উপসর্গ দেখা যাচ্ছে কিনা। যদি ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো কোনও উপসর্গ দেখা যায় তা হলে সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট করতে হবে।
নোটিসে বলা হয়েছে, যাঁরা মৃত পাখির সংস্পর্শে আসবেন এবং যাঁদের উপসর্গ দেখা যাবে তাঁদের ‘কেমোপ্রফিল্যাক্সিস’ এবং ‘ওসেল্টামিভির’ ওষুধের দশ দিনের ডোজ দিতে হবে।


বার্ড-ফ্লু ভাইরাস হল বিশেষ ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস যা শুধু পাখি নয়, মানুষ ও অন্যান্য পশুর শরীরেও সংক্রামিত হতে পারে। এই ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জাকে বলে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা। থুতু-লালা ড্রপলেটের মাধ্যমে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে পারে। ভারতে এখনও অবধি দুই ধরনের বার্ড-ফ্লু তথা অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে—এইচ৫এন১ এবং এইচ৭এন৯। বিশেষজ্ঞরা বলেন, মানুষের শরীরে ঢুকলে করোনাভাইরাসের মতোই দ্রুত বিভাজিত হতে পারে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের স্ট্রেন। সংক্রমণও ছড়াতে পারে দ্রুত। উপসর্গও করোনা সংক্রমণের মতোই।

দেশের কয়েকটি রাজ্যে মৃত পাখিদের নমুনায় যে ভাইরাল স্ট্রেন মিলেছে তা হল এইচ৫এন১ (H5N1)ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। পাখিরা এই ভাইরাসের বাহক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ১৯৯৭ সালে প্রথম মানুষের শরীরে এই ভাইরাল স্ট্রেন চিহ্নিত করেছিল। মৃত পাখির দেহাবশেষের সংস্পর্শে এসেই মানুষের শরীরে সেই ভাইরাল স্ট্রেন ছড়িয়েছিল বলেই মনে করা হয়েছিল।
দিন কয়েক আগেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী (অ্যানিমাল হাসব্যান্ড্রি অ্যান্ড ডেয়ারি ডেভেলপমেন্ট, ফিশারি) সঞ্জীব বাল্যান বলেছেন, মৃত পাখি, অপরিষ্কার পোলট্রি থেকে এই ভাইরাস মানুষের শরীরে সংক্রামিত হতে পারে। এই ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসেরও ‘হিউম্যান ট্রান্সমিশন’ সম্ভব।

যদিও, ভারতে এখনও অবধি মানুষের শরীরে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়াতে দেখা যায়নি।
বিজ্ঞানী বলছেন, মানুষের শরীরে ছড়াতে পারে ঠিকই, তবে এক শরীর থেকে অন্য শরীরে এই ভাইরাল স্ট্রেন দ্রুত সংক্রামিত হতে পারে কিনা, সে তথ্য এখনও মেলেনি। তবে মানুষের শরীরে এমন ভাইরাস ছড়িয়ে গেলে তার প্রভাব যে মারাত্মক হতে পারে সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা।

তাঁরা বলছেন, পাখির শরীরে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ঢুকলে ১০ দিনের মধ্যেই থুতু-লালার মারফৎ সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করবে। সংক্রামিত পাখিদের সংস্পর্শে থাকলে ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। অনেক সময়েই সাধারণ ভাইরাল জ্বর মনে করে এই ভাইরাসকে চিহ্নিত করা যায় না। তবে উপসর্গ বেশি হলে রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআর টেস্টে (এ/এইচ৫) ভাইরাল স্ট্রেন চিহ্নিত করা যায়। এইচ৫এন১ ভাইরাসের সংক্রমণের মৃত্যুহার খুব বেশি। মানুষের শরীরে ছড়ালে মৃত্যুর ঝুঁকি ৬০ শতাংশ। যদি সেপসিস, নিউমোনিয়া বা অ্যাকিউট রেসপিরেটারি ডিসট্রেসের মতো উপসর্গ ধরা পড়ে তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Previous articleস্বাস্থ্যসাথীতে হেনস্থা হলেই থানায় যান,কার্ড ফেরালে বাতিল হতে পারে লাইসেন্সও! হাসপাতালগুলিকে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
Next articleকরোনা টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই তো? ভিডিও কনফারেন্সে মোদীকে প্রশ্ন মমতার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here