তিন বছরের জন্য সাধারণ মানুষও কাজ করতে পারবেন সেনাবাহিনীতে বেনজির পদক্ষেপ

0
1570

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বেনজির সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে ভারতীয় সেনা। এবার সাধারণ মানুষও তিন বছরের জন্য সেনাবাহিনীতে কাজ করার সুযোগ পাবেন। অফিসার-সহ বিভিন্ন পদমর্যাদায় কাজ করার সুযোগ পাবেন তাঁরা। শুধুমাত্র সাধারণ মানুষ নন, আধাসেনা ও কেন্দ্রীয় বাহিনী থেকেও কর্মীদের ভারতীয় সেনায় যুক্ত করার চিন্তাভাবনা চলছে। সাত বছর সেনাবাহিনীতে কাজ করার পরে ফের নিজের নিজের জায়গায় ফিরে যাবেন তাঁরা।

জানা গিয়েছে, এই বেনজির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আগে আলোচনা করছেন ভারতীয় সেনা, নৌবাহিনী ও বায়ুসেনা প্রধানরা। একবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেলেই তা ঘোষণা করা হবে। এই সিদ্ধান্তের প্রধান উদ্দেশ্য হল মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবোধ ও দেশপ্রেম আরও জাগিয়ে তোলা। সেইসঙ্গে ১৩ লক্ষ সেনা জওয়ানদের জীবন সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে আরও বেশি ওয়াকিবহাল করে তোলা।

ভারতীয় সেনার মুখপাত্র কর্নেল অমন আনন্দ বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, “সাধারণ মানুষকে সেনাতে যোগদান করানোর এই পদক্ষেপ সত্যিই বেনজির। প্রাথমিকভাবে ১০০ অফিসার ও ১০০০ কর্মীকে নিয়োগ করার কথা ভাবা হচ্ছে। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ট্যুর অফ ডিউটি’ বা ‘থ্রি ইয়ার্স শর্ট সার্ভিস’। ভারতের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে অনেকেই এমন আছেন, যাঁরা জওয়ান হিসেবে নিজের কেরিয়ার না গড়তে চাইলেও আর্মির জীবন উপযোগ করে দেখতে চান। তাঁদের জন্য এটা দূরন্ত সুযোগ।”

সেনা সূত্রে খবর, এই পদক্ষেপ নেওয়া হলে ভারতীয় সেনা আর্থিকভাবেও লাভবান হবে। কারণ বর্তমানে ১০ থেকে ১৪ বছরের জন্য জওয়ানদের ভর্তি করা হয় সেনায়। কিন্তু তিন বছরের জন্য কাউকে ভর্তি করা মানে তার কাজের সময় অনেকটা কম। ফলে গ্রাচুইটি, পেনশন ও অন্যান্য প্যাকেজ তিনি পাবেন না। তার জন্য অনেক কম খরচ হবে সেনাবাহিনীর।

খরচ কতটা কম হতে পারে, তা নিয়ে একটা তুলনামূলক আলোচনা করেও দেখা হয়েছে, সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে একজন জওয়ান প্রশিক্ষণ নিয়ে ভর্তি হওয়ার পর ১৪ বছর পরে তাঁর অবসরের মাঝে প্রায় ৫.১২ কোটি টাকা খরচ হয় তাঁর পিছনে। যদি কোনও অফিসার র‍্যাঙ্কের জওয়ান হন, তাহলে খরচ হয় ৬.৮৩ কোটি টাকা। কিন্তু সেখানে একজন তিন বছরের জন্য যুক্ত হলে তাঁর উপর ৮০ থেকে ৮৫ লক্ষ টাকা খরচ হবে।

এই প্রকল্পের আওতায় যদি প্রথমে ১০০০ জওয়ান নেওয়া হয়, তাহলে সেখানেই সেনার ১১ হাজার কোটি টাকার খরচ বাঁচে। এই টাকা সেনাকে আরও উন্নত করার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।

সেনাতে যোগ দেওয়া যুব সম্প্রদায়ের জন্যও এটা বড় সুযোগ। কারণ এক বছরের প্রশিক্ষণ ও তিন বছরের কাজের পরে একটা ভাল চাকরি পাওয়ার সুযোগ অনেক বেড়ে যাবে তাঁদের কাছে। এই সময়ের মধ্যে শারীরিক ও মানসিক ক্ষমতা, আত্মবিশ্বাস, নিয়মানুবর্তিতা, চাপ সামলানোর মতো অনেক গুণ তাঁদের মধ্যে গড়ে উঠবে। ফলে বড় কোম্পানি তাঁদের কাজে নিতে চাইবে। এই পদক্ষেপ দু’দিক থেকেই লাভবান হতে পারে বলে মনে করছেন সেনা আধিকারিকরা।

Previous articleকরোনা সারাতে চার আয়ুর্বেদিক ওষুধের ট্রায়াল শুরু হবে সাত দিনের মধ্যে,ঘোষণা আয়ুষ মন্ত্রকের
Next articleএবার ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্ক, আছড়ে পড়তে পারে সোমবার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here