টিবি মেশিনেই হবে কোভিড-১৯ স্ক্রিনিং-টেস্ট, এক ঘণ্টায় ধরে দেবে সংক্রমণ, অনুমোদন দিল আইসিএমআর

0
1130

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃকরোনা সংক্রমণ ঠেকাতে র‍্যাপিড ও র‍্যান্ডম টেস্টের নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সেই গাইডলাইন মেনেই আরও দ্রুত আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষায় তৎপর হয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। সংক্রামিতের নমুনা জলদি পরীক্ষার জন্য এখনও তেমন টেস্ট-কিট নেই দেশের হাতে। আরটি-পিসিআর (পলিমারেজ চেন রিঅ্যাকশন) টেস্ট সময়সাপেক্ষ, তাছাড়া রয়েছে অ্যান্ডিবডি স্ক্রিনিং টেস্ট। এই পরীক্ষা তাড়াতাড়ি করা গেলেও অ্যান্টিবডি টেস্ট-কিটের সংখ্যা সীমিত। তাই র‍্যাপিড টেস্টের জন্য টিবি টেস্ট-মেশিন বা ট্রুন্যাট বিটা-কভ (Truenat Beta CoV) টেস্টে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে আইসিএমআর।

টিউবারকিউলোসিস বা যক্ষ্মা রোগের স্ক্রিনিং টেস্টের জন্য ট্রুন্যাট-বিটা-কভ টেস্ট-মেশিনকে বহু আগেই স্বীকৃতি দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এই মেশিনে খুব দ্রুত ও বেশি সংখ্যক রোগীর নমুনা পরীক্ষা করা যায়। এবার এই টেস্ট-মেশিনকে কোভিড-১৯ সংক্রমণের পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করার অনুমোদন দিয়েছে আইসিএমআর। পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে (এনআইভি) এই টেস্ট নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে।
কোভিড-১৯ স্ক্রিনিং টেস্টের জন্য পলিমারেজ চেন রিঅ্যাকশন বা আরটি-পিসিআর টেস্টকে অনুমোদন করেছে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনও (FDA) । ট্রুন্যাট বিটা-কভ টেস্টে এই আরটি-পিসিআরের পদ্ধতিই অনুসরণ করা হয়। তবে স্ক্রিনিং টেস্ট হয় মেশিনে।

ট্রুন্যাট বিটা-কভ টেস্ট মেশিনের প্রযুক্তি মলবায়ো ডায়াগনস্টিক্স নামে একটি সংস্থার। টাটা ট্রাস্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তারা গোটা দেশের নানা প্রান্তে কোভিড-১৯ টেস্ট-কিট ছড়িয়ে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে। টিউবারকিউলোসিস ও ম্যালেরিয়া টেস্টের সহজ পদ্ধতি আগেও তারা সামনে এনেছিল। সংস্থার চিফ টেকনিক্যাল অফিসার চন্দ্রশেখর নায়ার বলেছেন, “বিটা-করোনার স্ট্রেন সার্স-কভ-২ আক্রান্তের নমুনায় রয়েছে কিনা সেটা এক ঘণ্টার মধ্যেই ধরা যাবে এই স্ক্রিনিং টেস্ট-মেশিনে। খরচ পড়বে ১,৩৫০ টাকার কাছাকাছি।” দেশে এই মুহূর্তে ট্র্যুন্যাট টেস্ট-মেশিন রয়েছে ৪০০টি। যার মধ্যে ২৫৭টি রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশে। এমন আরও টেস্ট-মেশিন তৈরি করা হবে বলে জানানো হয়েছে সংস্থার তরফে।

কীভাবে এই টেস্ট করা হবে তার গাইডলাইন দিয়েছে আইসিএমআর

ট্রুন্যাট বিটা-কভ টেস্ট সব ল্যাবরেটরিতে সম্ভব নয়। এর জন্য বায়োসেফটি লেভেল-২ এবং বায়োসেফটি লেভেল-৩ ল্যাবরেটরি দরকার।

এই টেস্টের জন্য আগে আক্রান্তের গলা বা নাকের নমুনা (Throat/Nasal Swabs) সংগ্রহ করা হয় ভাইরাল ট্রান্সপোর্ট মিডিয়ামে (VTM) । এই মাধ্যম এমন একটা বাফার যা নাকি আরএনএ ভাইরাসের (যেমন সার্স-কভ-২)ভাইরাল প্রোটিনকে অকেজো করে দিতে পারে। পুণে এনআইভি-তে পরীক্ষা করে এমনটাই দেখা গেছে।


ট্র্যুন্যাট হল ছোট ব্যাটারি চালিত মেশিন যার মধ্যে এমন চিপ লাগানো আছে যেটা মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে সংক্রমণ ধরে দিতে পারে। পলিমারেজ চেন রিঅ্যাকশন টেস্টের টেকনোলজি ব্যবহার করা হয় এখানে। একদিনে বহু মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব।
চিফ টেকনিক্যাল অফিসার চন্দ্রশেখর নায়ার বলেছেন, এই ট্রুন্যাট মেশিনে একসঙ্গে তিন-চার রকম রোগের টেস্ট সম্ভব। ৩২ টা স্যাম্পেল মেশিনে দিয়ে যদি রোগীর টেস্ট প্রোফাইলের ডেটা দিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে একই সঙ্গে কোভিড-১৯, এইচআইভি ও টিবি টেস্টের রিপোর্ট দিয়ে দেবে এই মেশিন।

নায়ার বলেছেন, র‍্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টও দ্রুত হয়, তবে সবরকম সংক্রমণ ধরতে পারে না এই স্ক্রিনিং টেস্ট। বিশেষত উপসর্গহীন বাহকদের ক্ষেত্রে এই টেস্টের রিপোর্ট সঠিক নাও হতে পারে। অ্যান্টিবডি টেস্টের পরে কোভিড-১৯ পজিটিভ কিনা নিশ্চিত হতে আরটি-পিসিআর টেস্ট করতেই হয়। সেখানে ট্রুন্যাট মেশিনে একই সঙ্গে দুই কাজই হবে। সংক্রমণ আছে কিনা ধরাও যাবে, পাশাপাশি আরটি-পিসিআরও হবে একই মেশিনে।

Previous articleহিঙ্গলগঞ্জে তৃণমূলের উপপ্রধানকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গণধোলাই,পাল্টা অভিযোগ উপপ্রধানের বিরুদ্ধে
Next articleYour Shot 📷 অন্ধকারের ঊৎস হতে ঊৎসারিত আলো

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here