দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ উওর২৪পরগনার বনগাঁ শহরে কন্টেনমেন্ট জ়োন এলাকায় থাকা ওষুধ, ব্যাঙ্ক, পরিষেবা গত মঙ্গলবার ব্যাহত হয়েছিল। বহু মানুষ ওই দিন এই দু’টি জরুরি পরিষেবা না পেয়ে হতাশ হন।সংবাদ মাধ্যমে সেই খবর জানতে পেরেই বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ এবং খাদ্য ও সরবরাহ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রতন ঘোষ এ দিন জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে দাবি করেছেন, মানুষ কন্টেনমেন্ট জ়োন তৈরির সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। কিন্তু তার প্রয়োগ পদ্ধতি নিয়ে ক্ষুব্ধ। জরুরি পরিষেবা চালু করতে হবে। অন্যদিকে সোমবার কংগ্রেস, বিজেপি ও বামদলগুলি মহকুমাশাসকের কাছে আলাদা করে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। বামেদের দাবি, রাজনৈতিক কর্মীদের মানুষের কাছে যেতে দিতে হবে। দলীয় কার্যালয় খুলতে দিতে হবে। কেন কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হল, তার কারণও জানতে চাওয়া হয়।
এরপরই বুধবার থেকে অবশ্য শর্ত সাপেক্ষে ওই সব পরিষেবা চালু হয়েছে। বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় জানান, ‘‘ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, ওষুধের দোকান, নার্সিংহোম বুধবার থেকে চালু হয়েছে। তবে ওই সব কর্তৃপক্ষকে থার্মাল গান দিয়ে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। রেজিস্ট্রারও রাখতে হবে।’’ সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে বনগাঁ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এবং সংলগ্ন বাজারহাটে প্রশাসনের তরফে কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছে। রবিবার থেকে ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যশোর রোড, চাকদারোড ও বাগদা রোড কন্টেনমেন্ট জোনের আওতায়। এর ফলে ট বাজার নিউমার্কেট, রেলবাজার, নেতাজি মার্কেট, চাঁপাবেড়িয়া বাজার বন্ধ।
বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ বলেন এ দিন জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে মানুষের প্রয়োজনে দাবি করা হয়েছে, মানুষ কন্টেনমেন্ট জ়োন তৈরির সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। কিন্তু তার প্রয়োগ পদ্ধতি নিয়ে সমস্যা তৈরী হয়েছিল। জরুরি পরিষেবা চালু করতে হবে। মানুষের কথা শুনতে হবে এবং প্রয়োজনে তাঁদের মতামত নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে তবেই সমস্ত কিছু কার্যকর করা হবে৷পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনও অক্লান্ত পরিশ্রম করে বনগাঁর সমস্ত স্তরের সাধারণ মানুষকে সুস্থ্ রাখার অদম্য চেষ্টা করে চলেছেন সেটাও বোঝাতে হবে৷সব কিছু চাপিয়ে দিয়ে চলেগেলে চলবেনা৷ মানুষ এখন খুবই যন্ত্রণার মধ্যে কোনরকম ভাবে বেঁচে আছেন,মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথেই আমরা মানুষের পাশে থাকব এই কাজের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসন আমরা সকলেই একযোগে কাজ করব,কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির মত বা প্রভাবে কেউ প্রভাবিত হয়ে বনগাঁর মানুষের জন্য কোন কাজ করা যাবেনা, এবং আগামী দিনেও একই নিতী থাকবে৷
জেলাখাদ্য ও সরবরাহ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রতন ঘোষ বলেন বনগাঁর মানুষ কষ্ট পাচ্ছেন দেখতে পাচ্ছিলাম ,নিয়মের বেড়াজালে আটকে পড়েছে, কেউ পেনশনের টাকা কেউবা জীবন দায়ী ওষুধের জন্য দীর্ঘ লাইনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেও খালি হাতে ফিরছিলেন তাঁরা,এই দৃশ্য মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চাননা,মানুষ কষ্ট পাবে এটা তিনি কখনও মেনে নেবেনন, তাই বনগাঁর মানুষের স্বার্থে জেলা শাসককে চিঠি করেছি, ভারতবর্ষ থেকে কি বনগাঁ আলাদা,যে তার জন্য অন্য নিয়ম চালু হয়েছে এখানে।পুলিশ প্রশাসনের উপরে ভরসা রাখুন তাঁরা আপনাদের পাশে আছেন ।
গত সোমবার কংগ্রেস, বিজেপি ও বামদলগুলি মহকুমাশাসকের কাছে আলাদা করে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। বামেদের দাবি, রাজনৈতিক কর্মীদের মানুষের কাছে যেতে দিতে হবে। দলীয় কার্যালয় খুলতে দিতে হবে। কেন কন্টেনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হল, তার কারণও জানতে চাওয়া হয়।
বনগাঁ শহর তৃণমূল সভাপতি তথা পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত মতো সড়ক ও বাজার এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষিত হয়েছে। পুরসভা মানুষের জরুরি পরিষেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে।’’
মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘ব্যাঙ্কের সামনে প্রচুর মানুষ জড়ো হয়ে গিয়েছিলেন। তাই সোমবার পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে ব্যাঙ্ক ও ওষুধের দোকান থেকে পরিষেবা স্বাভাবিক করা হয়েছে।’’
বনগাঁর এক প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ী বিনয় সিংহ বলেন মহকুমা শাসক থেকে শুরু করে পুলিশ আধিকারিক সহ সমস্ত পুলিশ কর্মী এবং হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এক যোগে করোনা মোকাবিলায় দিনরাত কাজ করে চলেছেন তাঁদেরকে বনগাঁবাসীর তরফে কুর্নিশ জানাই। আমরাও প্রশাসনের পাশে আছি তাঁরা আমাদের জন্য ভাবছেন এটা মাথায় রেখে সকলে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েদিন৷