দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পরের সপ্তাহেই সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষা (জয়েন্ট-এন্ট্রাস মেইন) এবং ডাক্তারি প্রবেশিকা (নিট-ইউজি) পরীক্ষা হতে চলেছে। তার আগে সোমবার ফের একবার কেন্দ্রের কাছে পরীক্ষা স্থগিত করার আর্জি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন জোড়া টুইট করে কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে, ছাত্রদের সুরক্ষার প্রশ্নে পরীক্ষা স্থগিত করার আবেদন জানিয়েছেন মমতা।
In our last video conference with the Hon’ble PM Shri @narendramodi Ji, I had been vocal against the UGC guidelines mandating completion of terminal examinations in Universities/Colleges by the end of September 2020, which had a huge potential to put student lives at risk. (1/2)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 24, 2020
সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল আগেই। তারপর গত ২১ অগস্ট কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক আরও কিছু আবেদনের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়। মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল স্পষ্ট করে বলেন, সাড়ে ছ’লক্ষের বেশি পরীক্ষার্থী তাঁদের অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করে ফেলেছেন। এখন আর পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সর্বশেষ ভিডিও কনফারেন্সেও আমি ইউজিসির সূচি অনুযায়ী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিলাম। কারণ এই সময়ে পরীক্ষা নেওয়া মানে ছাত্রছাত্রীদের বড়সড় ঝুঁকির সামনে ফেলে দেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, আগেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ভলেছিলেন, ইউজিসির গাইডলাইন অনুযায়ী রাজ্যে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। পার্থবাবুর বক্তব্য ছিল, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ছাত্রছাত্রীদের প্রতি দায়বদ্ধ। এই মহামারীর পরিস্থিতিতে রাজ্য কখনওই এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না যাতে ব্যাপক অংশের ছাত্রছাত্রীকে বিপদের মুখে পড়তে হয়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রীকে মেনশন করে একটি টুইটে লিখেছেন, “আমি আরও একবার আর্জি জানাচ্ছি, ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে, ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে জয়েন্ট এবং নিট পরীক্ষা স্থগিত করা হোক।”
জয়েন্ট এন্ট্রান্স বা নিট পরীক্ষা সাধারণত এপ্রিল-মে মাসেই হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সুরক্ষাবিধির কথা মাথায় রেখে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। প্রথমে বলা হয়েছিল, সব পরীক্ষাই হবে জুলাইতে। জয়েন্ট পরীক্ষার দিন ফেলা হয়েছিল ১৮ থেকে ২৩ জুলাই এবং নিট পরীক্ষার দিন ঠিক হয়েছিল ২৬ জুলাই। কিন্তু, জুলাই মাসেও দেশজুড়ে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় পরীক্ষা ফের পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পরে ঠিক হয় সেপ্টেম্বরে ১-৬ ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ১৩ সেপ্টেম্বর ডাক্তারি পড়ার প্রবেশিকা পরীক্ষা হবে। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ১১ জন ছাত্র ও তাঁদের অভিভাবকরা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, “করোনা সংক্রমণের কারণে জীবন থমকে থাকবে না। স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের কারণে এমনিতেই ছাত্রছাত্রীদের কেরিয়ারের অনেক ক্ষতি হয়েছে। পরীক্ষা পিছিয়ে দিলে তাদের আরও একটা বছর নষ্ট হবে। সেদিকটা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, সুরক্ষাবিধি মেনে পরীক্ষা গ্রহণের কারণেই কয়েক হাজার পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানো হয়েছে। সারা দেশে ৯৫ হাজারের বেশি সেন্টারে এই পরীক্ষা হবে বলে জানা গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেই ওয়েবসাইটে অ্যাডমিট কার্ড আপলোড করার কাজ শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকার। ফাইলচিত্র: