দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃপ্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগেই বলেছিলেন এই সিদ্ধান্তের কথা। এবার, আর এক মাসের মধ্যেই তা কার্যকরী হতে চলেছে বলে সরকারি সূত্রে নিশ্চিত করা হল। জানানো হল, ২ অক্টোবর থেকে ছ’রকমের প্লাস্টিকজাত দ্রব্য নিষিদ্ধ হবে গোটা দেশে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিকের ব্যাগ, কাপ, প্লেট, স্ট্র, ছোট বোতল, নানা রকম স্যাশে।
গোটা দেশকে প্লাস্টিকমুক্ত করার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ করা হবে বলে জানা গিয়েছে সূত্রের তরফে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, ২০২২ সালের মধ্যে প্লাস্টিকমুক্ত দেশ গড়তে চান তিনি। তারই সূচনা হিসেবে এই পদক্ষেপ। আগামী ২ অক্টোবর, মহাত্মা গান্ধার জন্মদিনের দিন থেকেই কাজ শুরু করতে চান তিনি। তাই প্রথমে ছ’রকমের প্লাস্টিক সামগ্রী নিষিদ্ধ করতে চান বলে জানা গিয়েছে। ওই নির্দিষ্ট প্লাস্টিকজাত দ্রব্যগুলির উৎপাদন, ব্যবহার ও আমদানি– সবটাই নিষিদ্ধ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
ইদানীং বিশ্ব উষ্ণায়ন এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে, যে সারা পৃথিবী জুড়েই প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা হয়েছে। মানুষের ব্যবহার করা প্লাস্টিকজাত দ্রব্য সমুদ্রে পৌঁছে যাওয়ার ফলে সেখানকার জীবজগৎ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গলে যাচ্ছে মেরুপ্রদেশের বরফ, মারা যাচ্ছে বহু প্রাণী। বাড়ছে উষ্ণতা, ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে অরণ্য। মানুষের খাদ্যশৃঙ্খলও তার ফলে প্রভাবিত হচ্ছে।
নানা দেশে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। ভারতেও বেসরকারি উদ্যোগে বহু পদক্ষেপ করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি ভাবে এত দিন তেমন কোনও ঘোষণা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৫ অগাস্ট, স্বাধীনতা দিবসে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময়েই এই প্রথম, এই বিষয়ে বড় পদক্ষেপ করার আহ্বান জানান দেশের নাগরিক ও সরকারি সংস্থাগুলিকে।
তথ্য বলছে, ২০২১ সালের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফে প্লাস্টিকের স্ট্র, ছুরি, চামচ, কটন বাড বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে, প্লাস্টিক দূষণ অনেকটাই কমে যাবে এক ধাক্কায়। সেই সঙ্গে ভারতে এই ছ’টি প্লাস্টিকজাত সামগ্রী নিষিদ্ধ করা হলে, শুধু ভারতেই বার্ষিক ১৪ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্যের ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমানো যাবে।
তবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী করার প্রথম ছ’মাস বিকল্প ব্যবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সময় দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু তার পর থেকে জরিমানার ব্যবস্থা করা হতে পারে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এরই মধ্যে কয়েকটি রাজ্যে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সম্প্রতি অনলাইন ব্যবসার সংস্থাগুলিকেও জানানো হয়েছে, প্লাস্টিকের প্যাকেটে তাদের সামগ্রী প্যাক না করতে। তা হলেই চল্লিশ শতাংশের কাছাকাছি বার্ষিক প্লাস্টিক ব্যবহার কমানো যাবে বলে সরকারি সূত্র জানাচ্ছে।
১৫ অগাস্টের পরে, গত রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সকলের কাছে ফের আবেদন করেন, ২ অক্টোবর থেকে দেশকে প্লাস্টিকমুক্ত করার আন্দোলন শুরু করতে। পৌরসভা, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে এগিয়ে আসতেন বলেন তিনি। তাঁর ইচ্ছে, এ বছরের দীপাবলির আগেই প্লাস্টিক বর্জ্য সরিয়ে ফেলার উদ্যোগকে সফল করা হোক সর্ব স্তরে।