দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দিন দশেক আগেই কাঁথির সভা থেকে বার্তা দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেছিলেন, “আমি মেদিনীপুরকে ভাগ করি না। বঙ্গোপসাগরের বালুমাটির তীরের শুভেন্দু অধিকারী আর গোপীবল্লভপুরের লাল মাটির দিলীপ ঘোষ হাত মিলিয়েছি। ৩৫ টি আসনই জেতাব।”
রবিবাসরীয় দুপুরে ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর ব্লকে বিজেপির যোগদান মেলায় গিয়েছিলেন শুভেন্দু, দিলীপ। সেই সভা থেকে পঞ্চায়েত স্তরে তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শাসকদলের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন তরুণ বিজেপি নেতা।
এদিন শুভেন্দু বলেন, “জঙ্গলমহলের মানুষ ছোট ছোট ঘরে থাকেন। সেই ঘরগুলোর মাঝখানে একটা-আধটা দোতলা, তিনতলা বাড়ি। সব হচ্ছে তৃণমূলের পঞ্চুদের। যে ভাঙা সাইকেল চাপত সে এখন তিনটে স্করপিওর মালিক। যার থাকার ঘর ছিল না সে এখন খড়গপুর, বেলদায় জায়গা কিনছে।”
এখানেই থামেননি শুভেন্দু। তিনি বলেন, “এই তৃণমূলের পঞ্চুরা আইসিডিএসের চাকরিও নিজের পরিবারের বাইরে কাউকে দেয়নি। এতো নির্দয়, সহানুভূতিহীন। চার-পাঁচ হাজার টাকা মাইনের কন্ট্রাকচুয়াল কাজ দিয়ে পাঁচ-সাত লাখ টাকা নিয়েছে।”
শুভেন্দুর এ কথা মনে পড়িয়ে দিয়েছে পুরনো ঘটনা। ২০০৯ সালের কথা। সিপিএমের বিনপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক অনুজ পাণ্ডের দুধ-সাদা প্রাসাদোপম বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল সাধারণ মানুষ। প্রশ্ন উঠেছিল, যেখানে মানুষের এত অভাব সেখানে শাসকদলের নেতার এত বড় বাড়ি হয় কী করে?
এদিন শুভেন্দুর বক্তৃতা শুনে অনেকেই বলছেন, জমানা বদলেছে ঠিকই কিন্তু জঙ্গলমহলে শাসকের লুঠ আরও বল্গাহীন হয়েছে।
লোকসভা ভোটের পর তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ ময়নাতদন্তেও জঙ্গলমহলে পঞ্চায়েতে দুর্নীতি উঠে এসেছিল বলে খবর। রবিবার শুভেন্দু বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটে দুটো জেলা পরিষদ বিজেপি জিতেছিল। রাতের অন্ধকারে পুলিশ দিয়ে পদ্মফুলের ব্যালটকে জোড়া ফুল বলে চালানো হয়েছিল। পঞ্চায়েতের বদলা একুশের বিধানসভায় নিতে হবে। এমন ভোট করতে হবে যাতে বুথে বুথে বিজেপি ৯০, তৃণমূল ৯ হয়ে যায়।”
একটা সময় শুভেন্দু ছিলেন জঙ্গলমহলের দায়িত্বে। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেন। লোকসভার ধাক্কার পর শুভেন্দুকেই জঙ্গলমহলের দায়িত্ব ছাড়তে চেয়েছিলেন মমতা। এদিন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতা বলেন, “পিসি-ভাইপোর কোম্পানি আমায় তিন বছর জঙ্গলমহলে আসতে দেয়নি। আমি করমে আসি, টুসুতে আসি, ঝুমুর গানে নাচি। আবার মকর সংক্রান্তিতে আসব।”
তাঁর কথায়, “মোদ্দা কথা হল, একুশের ভোটে ওই কোম্পানিকে হারাতেই হবে। আমফানের টাকা চোর, পায়খানার টাকা চোর, চাল চোর, আবাস যোজনার টাকা চোর তৃণমূলকে হাওয়া করে দিতে হবে ভোটে।”