দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গঙ্গাসাগর মেলা শুরু হতে আর দিন কয়েকের অপেক্ষা। কিন্তু এবারে বাধ সেধেছে কোভিড আবহ। কোনও রকম মেলা জমানোরই অনুকূল পরিস্থিতি নেই এই বছর। কিন্তু তাই বলে কি পুণ্যস্নান বন্ধ থাকবে? তা যাতে না থাকে, সে জন্যই এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। এবার বাড়িতে বসে গঙ্গাস্নান করতে পারবেন পুণ্যার্থীরা।
বৃহস্পতিবার নবান্নের বৈঠকে জানা গেছে, এবার চালু করা হচ্ছে, ‘ই-গঙ্গাসাগর মেলা ২০২১’। এই মেলাতে এবার সশরীরে না পৌঁছেও করা যাবে ই-স্নান। এ জন্য একটি অ্যাপ চালু করতে চলেছে সরকার। এই অ্যাপের মাধ্যমে বুক করলে, বাড়িতেই পৌঁছে যাবে গঙ্গাসাগরের পবিত্র জল। ওই অ্যাপের মাধ্যমে দেখাও যাবে মেলা।
নবান্ন সূত্রের খবর, কোভিড পরিস্থিতিতে যাঁরা গঙ্গাসাগর যেতে পারবেন না, তাঁদের বিস্তর সুবিধা হবে এই পদ্ধতিতে। একই জলে স্নান করে পুণ্য অর্জন করতে পারবেন তাঁরা, ঘরে বসেই। সেইসঙ্গে ভিড়ও অনেক কম হবে মেলায়।
এই কোভিড পরিস্থিতিতে কীভাবে এবারের গঙ্গাসাগর মেলা হবে, তা নিয়েই আজ নবান্নে আয়োজিত হয়েছিল একটি ভার্চুয়াল বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য শীর্ষ আধিকারিকরা। গঙ্গাসাগর মেলার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত দফতরের আধিকারিকরাও ছিলেন বৈঠকে। উপস্থিতি ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক কর্তারা। এছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া-সহ বেশ কিছু জেলার আধিকারিকরা ছিলেন এদিনের বৈঠকে।
ই-মেলার পাশাপাশি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে গঙ্গাসাগর মেলা চত্বরে যে অস্থায়ী ছাউনি দেওয়া ঘর ও থাকার জায়গা তৈরি হয় কর্মী ও সাংবাদিকদের জন্য, সেগুলি বানানোর সময়ে সোশ্যাল ডিসটেন্স মেনটেন করতে হবে। সেগুলি স্যানিটাইজ করতে হবে প্রতিনিয়ত। সকলকে মাস্ক পরতে হবে।
পাশাপাশি, মেলায় যোগাযোগে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, পরিবহণ দফতরকে তা দেখতে হবে। গঙ্গাসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত সমস্ত রাস্তাও দ্রুত সারাই করে ফেলতে হবে।
জানা গেছে, এবারের পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে, মেলায় আরও বাড়তি তিনটি ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স ও দুটি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হচ্ছে। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাঁকে নিয়ে পৌঁছে দেওয়া হবে হাসপাতালে। এছাড়া কোনও পুণ্যার্থী গঙ্গাসাগর মেলায় কোনও দুর্ঘটনার জেরে মারা গেলে ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবে তাঁর পরিবার। প্রসঙ্গত, এবার মেলার বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে ৬১ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা। গত বছর ছিল ৩৯ কোটি ৩০ লক্ষ। কোভিড পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলার বাজেট বাড়ল।
বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৫ জানুয়ারি থেকেই ভলান্টিয়ার, এনডিআরএফ, পুলিশ, কোস্ট গার্ড– সব রকমের নিরাপত্তারক্ষীদের মোতায়েন করা শুরু হবে। ড্রোন-ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে গোটা মেলা। নিরাপত্তার সঙ্গে কোনও আপস নয়। সেই সঙ্গে, কোনও পুণ্যার্থীর যদি মেলায় এসে কোভিডের সিম্পটম্প ধরা পড়ে, তাঁর জন্য আইসোলেশন ও টেস্টের ব্যবস্থা রয়েছে।
তবে আজকের পরে আবারও বৈঠক হবে গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে। করোনা পরিস্থিতি বুঝে আরও নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।