দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ অক্সফোর্ডের ফর্মুলায় তৈরি ‘কোভিশিল্ড’ টিকার ট্রায়ালে আর দেরি করতে চায় না ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। সংস্থার সিইও আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছিলেন, অগস্টের মধ্যেই টিকার দুই পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়ে যাবে। শনিবার, সেরামের তরফে জানানো হয়েছে প্রয়োজন হলে তার আগেই টিকার ট্রায়াল শুরু করে দেওয়া হবে। মানুষের শরীরে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের দুই পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য আজ ড্রাগ কন্ট্রোলের অনুমতি চেয়েছে সেরাম।
ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিন ও জাইদাস ক্যাডিলার তৈরি জ়াইকভ-ডি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হয়ে গেছে দেশে। সেরাম জানিয়েছে, ড্রাগ কন্ট্রোলের অনুমতি পেলে খুব তাড়াতাড়ি টিকা দেওয়া শুরু হয়ে যাবে। কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের ল্যাবরেটরি ট্রায়াল ও সেফটি ট্রায়াল শেষ হয়ে গেছে। পরের দুই পর্যায়ের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
আদর জানিয়েছেন, ১৬০০ জন স্বেচ্ছাসেবকের নাম নথিভুক্ত করা হচ্ছে। ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের টিকা দেওয়া হবে। দুই পর্যায়ে নির্দিষ্ট ডোজে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। ইন্টারমাস্কুলার ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে। এর পরে পর্যবেক্ষণে রেখে টিকার প্রভাব দেখা হবে। সেরাম জানিয়েছে, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনে খুবই হালকা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তাই কোভিশিল্ডের প্রয়োগে কোনও অ্যাডভার্স এফেক্ট দেখা যাবে না। এই টিকা মানুষের শরীরে সম্পূর্ণ নিরাপদ ও সুরক্ষিত বলেই দাবি সংস্থার।
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হওয়ার পরেই ভারতে এই টিকা তৈরির লাইসেন্স পায় সেরাম ইনস্টিটিউট। ব্রিটেনের জেন্নার ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ডিএনএ ভেক্টর ভ্যাকসিন ChAdOx1 nCoV-19 ক্যানডিডেট ডিজাইন করেছে অক্সফোর্ডের ভাইরোলজিস্ট সারা গিলবার্টের টিম। ই গবেষণায় রয়েছেন অধ্যাপক অ্যান্ড্রু পোলার্ড, টেরেসা লাম্বে, ডক্টর স্যান্ডি ডগলাস ও অধ্যাপক অ্যাড্রিয়ান হিল।
কোভিড ভ্যাকসিন গবেষণায় অক্সফোর্ডের হাত ধরেছে ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্ম অ্যাস্ট্রজেনেকা। অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রজেনেকার সঙ্গে চুক্তি করে ডিএনএ ভেক্টর ভ্যাকসিনের ফর্মুলাতেই কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন তৈরি করেছে সেরাম।
সেরাম সিইও আদর বলেছেন, যে কোনও ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে প্রথম পর্যায়ের রিপোর্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই রিপোর্ট দেখেই বোঝা যায় ভ্যাকসিন আগামী দিনে কতটা কার্যকরী হবে। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনে সেই আশা জেগেছে। এই ভ্যাকসিন মানুষের শরীরে কাজ করেছে দু’ভাবে। প্রথমত বি-কোষকে সক্রিয় করে অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে, দ্বিতীয়ত, শরীরের টি-কোষকে সক্রিয় করে রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তুলেছে। ভ্যাকসিনে কাজ হলে ইঞ্জেকশন দেওয়ার ১৪ দিনের মাথায় টি-কোষ সক্রিয় হয়ে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তুলতে শুরু করে।
বি-কোষ সক্রিয় হয়ে অ্যান্টিবডি তৈরি করে ২৮ দিনের মাথায়। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনও তাই করেছে। আদরের বক্তব্য, তাই আর বেশি দেরি না করে ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়াল শুরু করার জন্য ড্রাগ কন্ট্রোলের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।