কোভিড ১৯-একুশেরও হাতিয়ার মাস্ক

0
1618

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিশ্বজুড়ে এখনও বেড়ে চলেছে কোভিড সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে একাধিক পরিবর্তনের কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। তার মধ্যে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এছাড়াও রয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্কের ব্যবহার। এই মাস্কের ব্যবহারের ব্যাপারে নতুন কিছু পথনির্দেশও দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু।

শুক্রবার রাতে হু-র প্রধান টেড্রস আধানম প্রেস কনফারেন্স করে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেন। তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ রুখতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা বা পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যসম্মত অভ্যেস গড়ে তোলার বিকল্প মাস্ক নয়। কিন্তু তার পরেও ঝুঁকি কমাতে মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নতুন গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই ধরনের পরামর্শ আগামী দিনেও দেবে হু। হু-র প্রধান জানিয়েছেন, যে সব এলাকায় সংক্রমণ খুব বেশি হারে ছড়িয়েছে, সেখানে ক্লিনিকাল এরিয়ায় সবাইকে মেডিক্যাল মাস্ক পরতে হবে। শুধু মাত্র স্বাস্থ্যকর্মীরা মেডিক্যাল মাস্ক পরলে চলবে না, সেখানে যাঁরা থাকবেন সবাইকে মেডিক্যাল মাস্ক পরতে হবে।

করোনা সংক্রমণের কারণেই মূলত এখন একরকম বাধ্য হয়েই মাস্ক চিনেছি আমরা। সুস্বাস্থ্যের প্রয়োজনে মাস্ক ব্যাবহার এখন সকলের দৈনন্দিন রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু -র বার্তা তাই মানব জীবনে বিশেষ স্থান পেয়েছে৷ পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহারে নতুন মাত্রা যোগ হয় ব্যক্তিত্বেও। করোনা সঙ্কট আবহে মাস্ক-বার্তা ছড়িয়েছে রাজনীতির আঙিনাতেও। সংক্রমণের আশঙ্কা রোখার বার্তার পাশাপাশি বাংলার রাজনীতিতে মাস্ক কার্যত হাতিয়ারেই পরিণত হয়েছে।

একটু চোখ খোলা রাখলেই দেখা যায় ‘পদ্ম’ আঁকা মাস্ক পরে প্রায়ই সাংবাদিক বৈঠকে আসেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দলের অন্য অনেক নেতাকেই দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা মাস্ক পরতে দেখা যাচ্ছে। করোনাকে সামনে রেখে প্রচারের সুযোগ যে হাতছাড়া করা যাবে না, তা মাস্কে আঁকা বেশ বড় ‘পদ্ম’ স্পষ্ট করে দিচ্ছে।

তবে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীক ব্যবহার করা মাস্ক পরতে দেখা যায়নি তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের। কিন্তু সকলের নজর কেড়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ব্যবহার করা বাংলা মানচিত্রের ছবি-সমেত মাস্ক। প্রশাসনিক বৈঠক থেকে শুরু করে দলীয় আলোচনা- সর্বত্রই এই বাংলার মানচিত্রের মাস্ক পরতে দেখা গেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে । কখনও গাঢ় নীল, তো কখনও আকাশী নীল রঙের মাস্কের বর্ডার। মধ্যের অংশ বক সাদা। মাস্কেও পছন্দের নীল-সাদা রঙের ছোঁয়া রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গেই রয়েছে বাংলার মানচিত্র। কখনও শুধু মানচিত্র দেখা গেছে, কখনও বা তার উপর লেখা ‘মা’।

করোনাভাইরাস মহামারী ও আমপানে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর মাস্কেও ‘বাংলার প্রাধান্য’ নজর এড়ায়নি নেট দুনিয়ায়। কেউ যেমন মাস্কেও বাংলাকে প্রাধান্য দেওয়ার চিন্তাভাবনার প্রশংসা করেছেন, তেমনই দেখা গেছে শাড়ির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা মাস্কের রঙের প্রশংসাও।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ২০২১ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। মাস্ক ব্যবহারেও সেই রাজনৈতিক সচেতনতা চোখে পড়ছে।

বর্তমানে কোভিড ১৯-এর ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে বিশ্বজুড়ে। এই কাজে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগযোগ রেখে চলেছে হু। তবে এই কাজে অনেকটা সময় লাগতে পারে বলেই তাদের ধারণা। এই পরিস্থিতিতে মানুষের সচেতনতা কেবলমাত্র এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার হাতিয়ার হতে পারে বলে এর আগেও জানিয়েছে হু। 

তাই পছন্দ হোক বা না হোক, মাস্ক এড়ানোর কোনও উপায় এই মুহুর্তে নেই। বর্তমানে মাস্কই রক্ষা করবে করোনা ছাড়াও আরও অনেক এমন ভাইরাসের হাত থেকেই। এবং সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে, এই মাস্কই হয়ে উঠতে পারে নতুন ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। ঠিক যেমনটা প্রচারের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে বাংলার-রাজনীতিতেও৷

Previous articleEXIM business  to start at Petrapole after chief minister’s intervention
Next articleছাড়পত্র দিল নবান্ন,সোমবার থেকে চালু হতে চলেছে পেট্রাপোল সীমান্ত-বাণিজ্য

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here