নিলাদ্রী ভৌমিক: বারাসত:বাংলার আলোর উৎসব দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে। তাই, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উত্তর ২৪ পরগণার সর্বত্র বারোয়ারি পুজো কর্তারা এক চুলও সময় নষ্ট করতে নারাজ। জেলার সেরা ও চমক দেওয়া পুজোর মধ্যে জেলা সদর বারাসত অন্যতম। এখানকার নজরকাড়া পুজো পুরসভার উপপুরপ্রধান অশনি মুখোপাধ্যায়ের ক্লাব কেএন সি রেজিমেন্ট। এবার এই কালী পুজো ৫৯ বছরে পদার্পণ করল। পুজোর বাজেট প্রায় ৫০লক্ষ টাকা। থিম হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে, হিমাচল প্রদেশের দেবভূমিকে। পুজো প্রাঙ্গণে পৌঁছে দেখা গেল, মানালির বশিষ্ট মুনির আশ্রমের অনুকরণে তৈরি হচ্ছে মায়ের মন্দির। সেইসঙ্গে দেখা যাবে কুলু-মানালির চারটি দেবালয়৷ চারপাশে শুভ্র পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য। মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মায়ের মৃর্তি এবং চন্দননগরের চোখ ধাঁধানো আলোর রোশনাই। নবপল্লী আমরা সবাই ক্লাব প্রথম বর্ষে পুজোর আয়োজন করে দর্শক টানতে অভিনব পরিকল্পনা করেছে৷ এই উদ্যোগের নেপথ্যে রয়েছন, পুরপারিষদ সদস্য অরুণ ভৌমিক। তিনিই সম্পাদক। মুখ্য উপদেষ্টা বারাসতের সাংসদ ডা.কাকলি ঘোষদ স্তিদার এবং সভাপতি বিধায়ক তথা অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। ফলে, ধারে ও ভারে প্রথম আবির্ভাবেই এই কালীপুজোয় থাকছে বড় চমক। সিকিমের চারধামের আদলে মণ্ডপ নির্মাণের কাজ শেষের পথে। প্রতিমা ঝিনুক ও ঝিনুকের গুঁড়ো দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানান, সম্পাদক অরুণ ভৌমিক। আলোতেও দৃষ্টিনন্দন নানা বাহারি কাজ,যা নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলছেন চন্দননগরের আলোক শিল্পীরা। বাজেট ৪০ লক্ষ টাকা। এই নবপল্লীর আরেক ঐতিহ্যবাহী পুজো, নবপল্লী সর্বজনীন। এই পুজোর সম্পাদক, আরেক পুরপারিষদ সদস্য চম্পক দাস। ৩৯ তম বর্ষে নজরকাড়া থিম- রাশিয়ার বিশ্বকাপ। মস্কোর সেন্ট বসিলস ক্যাথিডালের আদলে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে মন্দির নির্মাণের কাজ। উচ্চতা ৯০ফুট। মণ্ডপের ভিতরে গিয়ে দেখা গেল, শিল্পীরা রেশম সুতোর কারুকাজে ব্যস্ত। বাইরে ফুটবল মাঠের সবুজ ঘাসের সমারোহ। যেখানে বল হাতে লাইভ ফুটবলাররা পারফরমেন্স করবেন বলে জানান, সম্পাদক চম্পকবাবু৷ ৩২টি পরী স্বাগত জানাবে। এককথায়,বিশ্বকাপের থিমের মধ্য দিয়ে বিশ্ব শান্তির বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে দর্শনার্থীদের কাছে।
বনগাঁ হিন্দু মহাসভার দশ ফুট দৈর্ঘ্যের প্রতিমা সাবেকি পুজো বলে পরিচিত, এই পুজোকে ঘিরে বনগাঁর মানুষের ঐকান্তিক টান৷বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন,দূর্গা দেবীকে বিদায়ের পর বিষন্নতা তে মুছেদেন, এই শ্যামা মা,তাই ঐতিহ্য মেনে ১০৮ টি ঢাক বাজিয়ে বনগাঁর মানুষ মায়ের আরাধনা করেন৷হাজার হাজার মানুষ এই পুজোয় সামিল হন, তাই দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে,সমস্ত রকম ব্যাবস্থা৷ বনগাঁ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অনীল কুমার রায় জানান, বনগাঁ,বাগদা,গোপাল নগরও গাইঘাটা সর্বত্র এলাকায় পুলিশের কড়া নজরদারি বহাল থাকছে৷ বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ তথা জেলা পরিবহন দপ্তরের সদস্য বলেন,রাস্তায় যান বাহনের উপরে কড়া নজর রাখা হচ্ছে এবং আলোর উৎসবে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে,তার জন্য প্রতিটি পুজো মণ্ডপ গুলিতে পরিবহন দপ্তরের তরফ থেকে সচেতনতা শিবির খোলা হয়েছে৷ বনগাঁ উওরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন বনগাঁর মানুষ উৎসবমুখোর থাকতে ভালবাসেন,তাঁদের এই অানন্দের দিনগুলিতে আমরা মা মাটি মানুষের সরকার এর সৈনিক হয়ে পাশে থাকব।