দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ অকারণে শত্রুতা করাই দুষ্টের কাজ। কার্গিল দিবসে এই ভাষাতেই পাকিস্তানকে আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন ছিল প্রধানমন্ত্রীর ৬৭তম ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান। আবার এই দিনেই ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধে জয় পেয়েছিল ভারত। ২১তম কার্গিল দিবসে সেই যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনেই পাকিস্তানকে আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যে পরিস্থিতির মধ্যে কার্গিলে যুদ্ধ হয়েছিল সেটা ভারত কখনও ভুলতে পারবে না। নিজেদের দেশের অন্তর্কলহ ঢাকতেই ভারতের জমি দখল করতে চেয়েছিল পাকিস্তান। আর তার যোগ্য জবাব দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই সময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারত ভাল সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করছিল। কিন্তু যারা দুষ্ট তাদের স্বভাবই এমন হয়। সবার সঙ্গে কোনও কারণ ছাড়াই শত্রুতা করে।
এদিন ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রসঙ্গে মোদী বলেন, যারা দুষ্ট স্বভাবের হয় তারা উপকারিরও ক্ষতির কথা ভাবে, এই জন্য ভারতের পক্ষে বন্ধুত্বের জবাবে পিঠে ছোরা মেরেছিল পাকিস্তান। কিন্তু তার জবাবে ভারতীয় সেনা যে বীরত্ব দেখিয়েছিল তা মনে রাখবে দেশ। গোটা দুনিয়া দেখেছিল সেই জবাব। আজ থেকে একুশ বছর আগে ভারতীয় সেনা কার্গিলের উপরে ত্রিবর্ণ পতাকা উড়িয়েছিল। মোদীর কথায়, “ওই লড়াই উঁচু পাহাড়ের ছিল না, ভারতীয় জওয়ানদের উঁচু লক্ষ্য আর সাচ্চা বীরত্বের লড়াই ছিল।” মোদী বলেন, “আমার কার্গিল যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল, দেখেছি জওয়ানদের বীরত্ব। আমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনার মধ্যে ওই দিনটা অন্যতম।”
এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকেও স্মরণ করেন মোদী। তিনি বলেন, “সেই সময়ে লালকেল্লা থেকে যে বার্তা অটলজি দিয়েছিলেন তা আজও সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক। অটলজি সেই সময়ে দেশকে মহাত্মা গান্ধীর একটি মন্ত্র মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। গান্ধীজি বলেছেন, কেউ যদি কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়, তা নিয়ে ভাবেন তবে তাঁর সবচেয়ে গরিব ও অসহায় ব্যক্তির কথা ভাবা উচিত। ভাবা উচিত, তাতে তাঁর ভালো হবে কি হবে না।” মোদী বলেন, গান্ধীজির ওই ভাবনার সঙ্গে অটলবিহারী বাজপেয়ী একটি মন্ত্র দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভাবা উচিত, এই পদক্ষেপ কি ওই সৈনিকদের সম্মান জানাতে পারবে যাঁরা দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নিজেদের জীবন দিয়েছেলেন।
এদিন পাকিস্তানের নিন্দা করার পাশাপাশি, কার্গিলের বীর শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বীর যোদ্ধাদের গল্প পড়তে হবে। তাহলে এই কঠিন সময়ে মনে সাহস বাড়বে। সেইসঙ্গে দেশের জন্য যাঁরা প্রাণ বলিদান দেন, তাঁদের দিকে সব সময়ে সরকারের নজর থাকবে বলেও জানান তিনি।