দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন টিকা এসে পৌঁছল কলকাতায়। অপেক্ষা আর কিছুদিনের। ডিসেম্বর থেকেই টিকার তৃতীয় পর্বের ট্রায়াল শুরু হয়ে যাবে। স্বেচ্ছাসেবক বাছাইয়ের কাজ শুরু হতে চলেছে। বিদায়ী মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে প্রথম টিকার ডোজ দেওয়া হতে পারে। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নাম লিখিয়েছেন বিদায়ী ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষও।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ২৫টি ক্লিনিকে তৃতীয় পর্বের বৃহত্তর ট্রায়াল করছে ভারত বায়োটেক। তৃতীয় পর্বে ২৬ হাজার জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। দিল্লি, হায়দরাবাদে ট্রায়াল শুরু হয়ে গেছে। এবার পশ্চিমবঙ্গে টিকার ট্রায়াল শুরু হতে চলেছে। কলকাতার আইসিএমআর-নাইসেডে টিকার ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে স্বেচ্ছাসেবকদের। হায়দরাবাদ থেকে এক হাজার টিকার ডোজও চলে এসেছে কলকাতায়।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে করোনার টিকা কোভ্যাক্সিন বানিয়েছে ভারত বায়োটেক। কোভ্যাক্সিন হল ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন অর্থাৎ ভাইরাল স্ট্রেন নিষ্ক্রিয় করে বানানো হয়েছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) ও পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি) থেকে সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেন নিয়ে ল্যাবোরেটরিতে তার স্ক্রিনিং করে ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট বানিয়েছে ভারত বায়োটেক। বায়োসেফটি লেভেল-৩ ল্যাবোরেটরির সুবিধা থাকায় ভারত বায়োটেকের ভাইরোলজিস্টরা সংক্রামক ভাইরাল স্ট্রেনের বিশেষ অংশ চিহ্নিত করে তাকে আলাদা করে নিয়েছেন। অর্থাৎ ভাইরাল প্রোটিনের বিশেষ অংশ স্ক্রিনিং করে বার করে নিয়েছেন। এরপরে সেই সংক্রামক স্ট্রেনকে বিশেষ বিজ্ঞানসম্মত উপায় পিউরিফাই করে তাকে নিষ্ক্রিয় বা ইনঅ্যাকটিভ (Inactive)করেছেন ।
নাইসেড জানাচ্ছে, এই টিকা এমনভাবে তৈরি হয়েছে যাতে কোল্ড স্টোরেজের স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেই সংরক্ষণ করা যায়। মাইনাস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা হয়েছে কোভ্যাক্সিন টিকার ভায়াল। ২৮ দিনের ব্যবধানে দুটি ডোজ দেওয়া হবে স্বেচ্ছাসেবকদের।
কোভ্যাক্সিন টিকার ট্রায়ালের কর্মসূচী ঠিক করতে পুরসভার সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে নাইসেডের। জানা গিয়েছে, বিদায়ী মেয়র ফিরহাদ হাকিম প্রথম টিকার ডোজ নিতে পারেন। তবে এখনও এ ব্যাপারে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি।
নাইসেডের অধিকর্তারা জানিয়েছেন, স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নাম লেখানোর জন্য অনেক ফোন আসছে। তবে টিকার ট্রায়ালে অংশ নিতে হলে আগে শারীরিক পরীক্ষা করাতে হবে। কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলা হবে। যেমন, একটা নির্দিষ্ট বয়সসীমা থাকবে। করোনা সংক্রমণ যদি আগে হয়ে থাকে তাহলে ট্রায়ালে অংশ নেওয়া যাবে না। তাছাড়া ক্রনিক রোগ থাকলে যেমন ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, ক্রনিক কিডনি বা লিভারের রোগ থাকলে টিকার ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে না। গর্ভবতী মহিলারা টিকার ট্রায়ালে অংশ নিতে পারবেন না।