দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আতঙ্কের কোনও কারণ নেই, সকলে মিলে একসঙ্গে লড়তে হবে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে। এমনই বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার দুপুরে এ বিষয়ে একের পর এক টুইট করেন তিনি। জানান, আত্মরক্ষার জন্য কয়েকটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মেনে চলতে হবে। তিনি আরও জানান, করোনাভাইরাস নিয়ে তিনি একাধিক মন্ত্রকের সঙ্গে ও রাজ্য সরকারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছেন। প্রস্তুতির প্রসঙ্গে নানারকম বিষয় নিয়ে ভাবনাচিন্তা করেছেন। এসবের মধ্যে রয়েছে বিদেশ থেকে দেশে ফেরা যাত্রীদের বিমানবন্দরে পরীক্ষা করার বিষয়টিও।
নানারকম আলোচনার পাশাপাশি একটি ছবিও টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই ছবিতে তিনি মৌলিক প্রতিরক্ষার জন্য কী কী করা যেতে পারে সেই দিকটি চিহ্নিত করেছেন। সেই পদ্ধতি ফলা করতে এই অসুখের সংক্রমণকে রোখা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। এই পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে ঘনঘন হাত ধোয়া, হাঁচি বা কাশির সময় মুখ-নাক ঢেকে রাখা– এই সব।
Had an extensive review regarding preparedness on the COVID-19 Novel Coronavirus. Different ministries & states are working together, from screening people arriving in India to providing prompt medical attention.
— Narendra Modi (@narendramodi) March 3, 2020
এর আগে উহান-ফেরত কেরলের তিন ছাত্রের শরীরে করোনার জীবাণু মিলেছিল। বিহার, রাজস্থানেও ভাইরাসের সংক্রমণ সন্দেহে কয়েকজনকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়। তবে সেই পরিস্থিতি অনেকটাই থিতিয়ে এসেছিল। নতুন করে দিল্লি ও তেলঙ্গানার দুই বাসিন্দার শরীরে সিওভিডি-১৯-এর সংক্রমণ পজিটিভ ধরা পড়ার পর থেকে আতঙ্ক কয়েকগুণ বেড়েছে। তার উপর স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, তেলঙ্গানা বাসিন্দা ওই যুবক হায়দরাবাদে পা রাখার আগে বেঙ্গালুরুতে কিছুদিন ছিলেন। কাজেই বেঙ্গালুরুতেও ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়েছে কিনা সেই সন্দেহও প্রবল হয়েছে।
রাজস্থানে ইতালির এক পর্যটকের শরীরেও করোনাভাইরাসের খোঁজ মিলেছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রঘু শর্মা জানিয়েছেন ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে ওই পর্যটককে। এদিকে দিল্লি, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ বিমানবন্দরে জোরদার থার্মাল স্ক্রিনিং চলছে। ইরান, ইতালি, সিঙ্গাপুর, চিন, তাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আসা যে কোনও ভারতীয় নাগরিক বা পর্যটকদের বিশেষ স্ক্রিনিং করার নির্দেশিকা জারি হয়েছে। বিমান ভারতে নামার আগেই এই পরীক্ষার কথা যাত্রীদের জানানো হবে। অন্যদিকে, ভারতীয়দের ইরান, ইতালি বা সিঙ্গাপুর সফর এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন।
মাস দুয়েক আগে চিন থেকে ছড়িয়েছে ঘাতক করোনাভাইরাস। সে দেশে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই পেরিয়েছে তিন হাজার। চিনের বাইরে ৭০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই অসুখ।
চিনের বাইরে ইরান, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমেই বাড়ছে বিপজ্জনক হারে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জনিয়েছে যে যাদের বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি এবং ইতিমধ্যেই অন্য রোগের শিকার এমন ব্যক্তিরাই বেশি মাত্রায় এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। হু জানিয়েছে, যাঁরা সিওভিআইডি-১৯-এ আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের বেশির ভাগই অল্পমাত্রায় অসুস্থ হচ্ছেন। ১৪ শতাংশ মতো মানুষ অসুস্থ হচ্ছেন নিউমোনিয়ার মতো মারাত্মক অসুস্থতায়, এর মধ্যে পাঁচ শতাংশ মারাত্মক ভাবে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যুর হার দুই থেকে পাঁচ শতাংশ।