দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সন্দেশ। নামটা শুনলেই বাঙালির জিভে জল চলে আসে। দেখলেই খেতে ইচ্ছে করে। আর খেলে মনে হয়, আবার খাবো। সেই সন্দেশ যদি এমন পুষ্টি জোগায় যাতে করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচার প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে শরীরে তবে এই কোভিড-কালে তো তা আরও জনপ্রিয় হবে। মুখের স্বাদ, শরীরের উপকার দুয়ের জন্যই চাহিদা হবে এমন সন্দেশের। বিভিন্ন রকম ওষধির নির্যাস আর সুন্দরবনের মধু মিশিয়ে ছানার সন্দেশ বানাচ্ছে রাজ্য সরকার। খুব তাড়াতাড়িই তা বাজারে আসার কথা।
কেন্দ্রীয় সরকার করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যে অ্যাপ তৈরি করেছে তার নাম দিয়েছে ‘আরোগ্য সেতু’। আর রাজ্য সরকার করোনা সংক্রমণ রুখে দিতে যে মিষ্টি বানাচ্ছে তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘আরোগ্য সন্দেশ’।
সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সুন্দরবনের মধু, তুলসি সহ বিভিন্ন ভেষজ উপাদান দিয়ে তৈরি হবে এই সন্দেশ। সরকারের লক্ষ্য, শুধু বাঙালির রসনাতৃপ্তি নয়, একই সঙ্গে পুষ্টিকর এই সন্দেশ শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কাজও করবে। সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, রাজ্য সরকারের উদ্যোগেই এই সন্দেশ তৈরি হবে। এই উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্যের প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন দফতর।
সংবাদসংস্থাকে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা জানিয়েছেন, ‘আরোগ্য সন্দেশ’ তৈরি করা হবে ঝড়খালি, পিরখালি অঞ্চলের মধু সংগ্রহ করে। এই সন্দেশ তৈরির জন্য বৈজ্ঞানিক উপায়ে মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করা হবে। তবে এখনই মিলবে না, পুজোর আগে আগে এই সন্দেশ বাজারে আনার ভাবনা বলে জানা গিয়েছে।
তবে রাজ্যে এমন উদ্যোগ নতুন নয়। এর আগেও করোনা প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বেসরকারি উদ্যোগে সন্দেশ বানানো হয়েছে। আসলে বাঙালি মানেই যেমন মিষ্টি প্রিয় তেমন এটাও ঠিক যে, নিত্য নতুন মিষ্টি তৈরি করাও বাংলার মিষ্টান্ন শিল্পের এক চিরন্তন ঐতিহ্য। খোঁজ নিলে জানা যাবে সব মিষ্টির পিছনেই আছে নানা ইতিহাস। কলকাতার রসগোল্লা থেকে চন্দননগরের জলভরা সন্দেশ কিংবা বর্ধমানের সীতাভোগ সবের পিছনেই আছে অনেক গল্প। তেমনই এক গল্প তৈরি হয় এই করোনা ভীতির শুরুর দিকেই।
তবে সেই ‘করোনা সন্দেশ’ কিন্তু ‘আরোগ্য সন্দেশ’-এর মতো প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ছিল না। দক্ষিণ কলকাতার জনপ্রিয় মিষ্টির দোকান হিন্দুস্থান সুইটস ওই সন্দেশ বানায় মানুষকে কোভিড-১৯ সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে। সেই সময়ে ওই দোকানের তরফে রবিন পাল সংবাদমাধ্যমকে জানান, “এটা আমাদের পক্ষ থেকে মিষ্টিরসিক বাঙালিদের জন্য মিষ্টি বার্তা– করোনাকে চিনুন, বুঝুন। সাবধানে থাকুন। আমাদের স্লোগানটাই হচ্ছে, আমরা করোনো ভাইরাসকে ভয় পাব না, হজম করব!”