দেশের সময়: — এনআরসি তাদের বেগ দেবে বুঝতে পেরেছিলেন রাজ্য বিজেপির নেতারা কিন্তু তা যে এতবড় বিপদ হয়ে দেখা দিতে পারে তা অনুমান করতে পারেন নি কেউই।তিন উপনার্বাচনে হারার পর এখন অনেকেই মনে করছেন এ রাজ্য জয় প্রায় হয়েই গেছে বলে যে ধারনা কিছুদিন আগেও তাদের ত এখন তা বিশ বাঁও জলে।
দিল্লির নেতারা না বুঝলে এ রাজ্যে আগামী ২০২১ যে বিজেপির পরাজয় প্রায় নিশ্চিত তা মানছেন বিজেপির াজ্য নেতাদের অনেকেই।মুখে সবাই বলছেন ধাক্কা সামলে নিতে পারবেন,কিন্তু কাজটা যে সহজ নয় তাও সবাই বুঝতে শুরু করেছেন।কদিন আগে যে বিজেপির নেতারা রাজ্য জয় করতে চলেছেন ভেবে কলার উঁচু করে ঘুরতেন তারাই এখন কেমন যেন মুষড়ে পড়া শারীরিক ভাষা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে শুরু করেছেন।
কেউ কেউ বলছেন অমিত শাহদের কিছুতেই বোঝানো যাচ্ছে না যে এ রাজ্যে এনআরসি ভীতিই তাদের সবচেয়ে ক্ষতি করে দিয়েছে।অমিত শাহরা মনে করছেন এ রাজ্যে বিজেপি নেতারা সেভাবে সংগঠন গড়ে তুলতে পারেন নি।এমনকী তৃণমূল থেকে যে যে নেতারা এসেছেন তাদের ব্যবহার করা হয় নি সেভাবে।
নানা দ্বন্দ্বে সমস্যা হয়েছে।এমনকী অমিত শাহরা চাইছেন এনআরসি নিয়ে ইতিবাচক প্রচারে ঝাঁপাক রাজ্য বিজেপি।কিন্তু তাতে যে হিতে বিপরীত হতে পারে সে কথাও ভেবে দেখতে চাইছেন না বিজেপির দিল্লীর নেতারা।তারা যেভাবে এনআরসি প্রচার চাইছেন তাতে এ রাজ্যে বিজেপির পায়ের তলার মাটি আর নড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।দিলীপ ঘোষ ও তাঁর অনুগামীরা যতোই বলুন যে তারা এনআরসি নিয়ে মানুষকে আশ্বস্ত করতে পারবেন,তা একেবারেই মনে করছেন না বিজেপির দিলীপ অনুগামীদের বাইরের কেউই।
বিজেপি যেভাবেই এনআরসি প্রচার করুক এতদিনে সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশের মধ্যে এই বিষয়টা ছড়িয়ে পড়েছে যে এনআরসি অনেক মানুষকে ঘর ছাড়া করবে।আর এর হ্যাপা সামলাতে হবে সবাই কে।সেটাই বিজেপির সবচেয়ে বড় আশঙ্কার জায়গা।তা ছাড়া এ রাজ্যে নাগরিক সংগঠনের একটা বড় অংশ যে ভাবে এন আর সির বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার করে একটা ধারনা মানুষের মধ্যে তৈরি করে দিয়েছে যে মানুষ এখন বিজেপির কথা বিশ্বাস করতে পারবে না।অসমের উদাহরণ তাদের আর আতঙ্কিত করে তুলেছে।
অন্যান্য গণসংগঠনগুলি যখন এনআরসি বিরোধী প্রচার একটা মাত্রায় নিয়ে যেতে পেরেছে বিজেপির রাজ্য নেতারা তখন কী বলবেন ভেবে পাচ্ছেন না।দিশাহীনতায় ভুগছেন তারা।এনআরসি মানুষের ভাল করবে,বিদেশী যারা তাদের এ দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবে এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে সবাই ভাবছেন তারা নিজেেদেরও যদি সব কাগজ না থাকে,যদি তারা বাদ বড়ে যান।ভয় ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র।
এই ভয়ের আবহ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে বিজেপি নেতারা য়খন বলছেন যে হিন্দু-খ্রিষ্টান-বৌদ্ধ-জৈনের কোন ভয় নেই তখনই প্রশ্ন উঠছে তবে অসমে কেন তাদেরও হল?এনআরসি বিরোধী প্রচারেও বার বার এই বিষয়টা সামনে আনা হচ্ছে।উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না বিজেপির রাজ্য নেতারা। কোন কৌশলে এনআরসির মোকাবিলা করা যাবে তা নিয়েই ব্যতিব্যস্ত বিজেপির রাজ্য নেতারা।
আর সেই আবেগটাকেই উসকে দিতে লাগাতার প্রচার করে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তিনি যে প্রথম পর্যায় সফল তার প্রমাণ তিনটি উপানির্বাচনের ফল।আর দিল্লির নেতারা গোঁ ধরে বসে আছেন এ রাজ্যেও এনআরসি হবে বলে লাগাতার প্রচার করতে হবে।সেই প্রচার তাদের বিপদ ডেকে ানবে বলেই মনে করছেন রাজ্যের অনেক বিেপি নেতাই।তবে কোন পায় নেই সর্বভারতীয় নীতি মেনেই একটা সর্বভারতীয় দলকে চলতে হয়।
রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায় দিল্লি চাইছে মাদের প্রচারে যেতেই হবে তবে এটাও জানি এই প্রচারটাই এ রাজ্যে মমতাকে এ্যডভান্টেজ দিয়ে দেবে।সবমিলিয়ে এ রাজ্য জয়ের যে স্বপ্নে বিভোর ছিলেন বিজেপির রাজ্য নেতারা এনআরসি সেই স্বপ্নকে অনেকটা ফিঁকে করে দিয়েছে তা বিজেপির রাজ্য দপ্তরে ঢু মারলেই চের পাওয়া যায়।